পানি-প্রতিরক্ষায় ঢাকার অবস্থান কী, জানাতে পারল না মন্ত্রণালয়
২ অক্টোবর ২০১৯ ২১:১০
ঢাকা: প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন এবং সমাঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত প্রতিরক্ষা সহযোগিতার রূপরেখা বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান কী তা জানাতে পারেনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয় বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফর শেষে দেশে ফিরলেই এ বিষয়গুলোর পরিষ্কার তথ্য দেওয়া যাবে।
দ্বিপক্ষীয় সফরে প্রধানমন্ত্রী বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) ভারতে যাবেন। ভারত সফর শেষে রোববার (৬ অক্টোবর) তিনি দেশে ফিরবেন।
প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর উপলক্ষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন বুধবার (২ অক্টোবর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রেস ব্রিফিং করেন। ওই ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হকসহ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রেস ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে একজন সাংবাদিক জানতে চান— ২০১১ সালে দুই দেশের মধ্যে তিস্তা চুক্তি নিয়ে সমাঝোতা হলেও এখন পর্যন্ত তার বাস্তবায়ন নেই। প্রতিটি সফরের আগে-পরেই দেখা যায় যে, বাংলাদেশের দূতাবাস বা মন্ত্রণালয়ের প্রেস রিলিজে তিস্তা বিষয়ে আশা প্রকাশ করা হয়। অন্যদিকে, ভারতীয় পক্ষে এ বিষয়ে কোনো শব্দও উচ্চারণ করতে দেখা যায় না। যেমন গত জাতিসংঘ সম্মেলনের সাইড লাইনে ঢাকা-নয়াদিল্লি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শেষে ভারতীয় প্রেস রিলিজে তিস্তা নিয়ে কোনো কথা উল্লেখ ছিল না। আবার গত মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) প্রধানমন্ত্রীর সফর উপলক্ষে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রেস রিলিজেও তিস্তা বিষয়ে কিছু উল্লেখ নেই।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন জবাবে বলেন, ‘এটা ঠিক যে গত ২০১১ সালে তিস্তা বিষয়ে সিদ্ধান্ত হলেও তা কার্যকর হয়নি। আমরা বিষয়টি আবার উঠাব (রেইজ করব)।’
তিনি আরও বলেন, ‘কিছুদিন আগে দুইদেশের পানি সচিব পর্যায়ের সচিবরা ঢাকায় আলাপ করেছেন। দুই দেশের মধ্যে থাকা সবগুলো অভিন্ন নদীর রূপরেখা তারা তৈরি করেছেন। প্রধানমন্ত্রী নিশ্চয়ই তার সফরে এ বিষয়ে আলাপ করার সম্ভাবনা রয়েছে ইনক্লুডিং তিস্তা।’
অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন নিয়ে বাংলাদেশের পরিকল্পনা কী বা ভারতের সঙ্গে আলোচনায় বাংলাদেশ কী চাইবে, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে এই বিষয়ে জানতে চাইলে ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন জবাবে বলেন, ‘আমি এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞ না, এখানে পানি বিশেষজ্ঞও নেই।’
এমন সময়ে পররাষ্ট্র সচিব মো. শহিদুল হক বলেন, ‘আসলে এটার আলোচনা শুরু হয়েছে। এটা এখনো ওভাবে শেইপ নেয়নি। সুতরাং এত আর্লি কিছু বলা যাবে না। আমার মনে হয় প্রধানমন্ত্রী ফিরে (প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন ভারত সফর শেষে) এলে হয়ত কিছু বলা যাবে।’
‘বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা রূপরেখা’ শীর্ষক একটি সমাঝোতা স্মারক গত ২০১৭ সালে দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষর করা হয়। যার ধারাবাহিকতায় ভারত প্রতিরক্ষা খাতে বাংলাদেশকে ৫০ কোটি ডলারের ঋণ দিয়েছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশের পরিকল্পনা কী, আসন্ন বৈঠকে এই বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান বা পরিকল্পনা কী থাকবে, জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই।’
এমন সময়ে পররাষ্ট্র সচিব মো. শহিদুল হক বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে আমাদের কোনো ডিফেন্স চুক্তি নেই। তবে দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে সহযোগিতা নিয়ে একটি সমাঝোতা স্মারক স্বাক্ষর আছে। প্রধানমন্ত্রী ভারত সফর শেষে ফিরে এলে এ বিষয়ে আরও পরিষ্কার করে বলতে পারব।’
গঙ্গাচুক্তি তিস্তাচুক্তি পানিচুক্তি প্রধানমন্ত্রী ভারত-বাংলাদেশ শেখ হাসিনা