ভারত সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী
৩ অক্টোবর ২০১৯ ০২:৪৮
ঢাকা: নয়া দিল্লির আগ্রহে চার দিনের দ্বিপাক্ষিক সফরে বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) সকালে ভারত যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সফরে দুই দেশের সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিতে কমবেশি এক ডজন চুক্তি বা সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন কূটনৈতিক সূত্রগুলো।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইট (বিজি-২০৩০) প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে দিল্লির উদ্দেশে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করবে। স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় ফ্লাইটটির নয়া দিল্লি পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
ঢাকা-নয়া দিল্লি কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানাচ্ছে, অক্টোবরে প্রধানমন্ত্রী যে ভারত যাবেন, তা অনেক আগে থেকেই ঠিক করা ছিল। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই সফর উপলক্ষে ঢাকাও সফর করে গেছেন। প্রথমে কথা ছিল, ৩ ও ৪ অক্টোবর নয়া দিল্লিতে অনুষ্ঠেয় ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডাব্লিউইএফ) ইন্ডিয়া ইকোনমিক সামিটে অংশ নেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে এই সফরটিকে নয়া দিল্লি একটি দ্বিপাক্ষিক সফরে পরিণত করার আগ্রহ দেখালে ঢাকা তাতে সাড়া দেয়।
সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে আগামী শনিবার (৫ অক্টোবর) সকালে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে যুব উন্নয়ন, বন্দর ব্যবহার, যোগাযোগ, উন্নয়ন সহযোগিতা, প্রতিরক্ষা, পানি, সমুদ্র অর্থনীতি, নিরাপত্তা ও জ্বালানি গুরুত্ব পাবে বলে জানা যাচ্ছে।
সর্বশেষ গত ২৭ সেপ্টেম্বর রাতে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ অধিবেশনের সাইড লাইনে দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে সন্ত্রাস ও চরমপন্থা ইস্যুতে জিরো টলারেন্সের বার্তা পুনর্ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দুই দেশের সম্পর্কে স্থল, নদী ও আকাশ যোগাযোগে উন্নতি, জ্বালানি খাতে দৃষ্টান্তস্বরূপ অগ্রগতি এবং বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক খাতের উন্নয়ন এই অঞ্চলের শান্তি ও সমৃদ্ধির পথে অবদান রাখছে বলে দুই প্রধানমন্ত্রী গত একমত পোষণ করেন।
- প্রধানমন্ত্রীর সফরসূচি:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় দিল্লি পৌঁছাবেন। এদিন তিনি হোটেল তাজ প্যালেসের দরবার হলে অনুষ্ঠেয় ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ইন্ডিয়া ইকোনমিক সামিটে বাংলাদেশের ওপর কান্ট্রি স্ট্র্যাটেজি ডায়ালগে যোগ দেবেন।
প্রধানমন্ত্রী একইদিন বাংলাদেশ হাইকমিশনের মৈত্রী হলে এক সংবর্ধনা এবং বাংলাদেশ হাউজে তার সম্মানে আয়োজিত নৈশভোজে অংশ নেবেন। বাংলাদেশের হাইকমিশনার এই নৈশভোজের আয়োজন করবেন।
প্রধানমন্ত্রী ৪ অক্টোবর ভারতের তিনটি চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড এক্সচেঞ্জের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক ও মতবিনিময় করবেন। ভারত সফররত সিঙ্গপুরের উপপ্রধানমন্ত্রী হেং সোয়ে কিট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
৫ অক্টোবর শনিবার ঐতিহাসিক হায়দারাবাদ হাউজে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দ্বিপাক্ষিক আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। একইদিন কয়েকটি বিনিময় চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হবে। দুই প্রধানমন্ত্রী হায়দারাবাদ হাউজ থেকে যৌথভাবে কয়েকটি প্রকল্প উদ্বোধন করবেন।
এর আগে, একইদিন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শংকর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। শেখ হাসিনা হায়দারাবাদ হাউজে আনুষ্ঠানিক ভোজসভায় যোগ দেবেন এবং পরিদর্শক বইতে সই করবেন।
সফরে ভারতের বিশিষ্ট চলচ্চিত্র পরিচালক শ্যাম বেনেগাল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। শ্যাম বেনেগাল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও কর্মের ওপর চলচ্চিত্র নির্মাণের দায়িত্ব পেয়েছেন। বাংলাদেশ-ভারত যৌথ প্রযোজিত বঙ্গবন্ধুর ওপর নির্মিত চলচ্চিত্রটি মুজিববর্ষ ২০২০-২১ শেষ হওয়ার আগেই মুক্তি পাবে।
সফর শেষে শেখ হাসিনা ৬ অক্টোবর বিকেলে দেশের উদ্দেশ্যে নয়া দিল্লি ত্যাগ করবেন। বাসস।
সারাবাংলা/জেআইএল/টিআর/টিএস
ইন্ডিয়া ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম দিল্লি নরেন্দ্র মোদি ভারত শেখ হাসিনা