Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চিকিৎসকদের সতর্ক করলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী


৩ অক্টোবর ২০১৯ ০৩:১৯

ঢাকা: সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে চলমান দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে চিকিৎসকদের সতর্কতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহবান জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

বুধবার (২ অক্টোবর) ‘নিরন্তর গবেষণা : উন্নততর চিকিৎসা ও শিক্ষার সোপান’ শীর্ষক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) গবেষণা দিবস-২০১৯ উদযাপন অনুষ্ঠান উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

দিবসটি উদযাপিত হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বি ব্লকের শহীদ ডা. মিলন হলে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, রোগীদের সঠিকভাবে সেবা না দেয়াটাও একধরনের দুর্নীতি। একটি হাসপাতালে যদি গিয়ে দেখি ডাক্তার নাই, পরিছন্নতা নাই, ঔষুধ নাই, মেশিনটা নষ্ট হয়ে রয়েছে তাহলে কিন্তু আমরা সেবা দিতে পারলাম না। এখানে কিন্তু এথিকসের বিষয় চলে আসে। এটা কে আমরা বলব পার্ট অব করাপশন। অর্থাৎ আমরা যেন সঠিক সেবাটা দেই, সঠিক আচরণটা করি। যে যতটুকু সেবা পাওয়ার দাবিদার তাকে যেন ততটুকু সেবা দেই।

নৈতিকতার কথা উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, খালি টাকা-পয়সা হলেই একটা দেশ এগিয়ে যেতে পারবে না। মানসিকভাবে যদি আমরা ভালো না হই, আমাদের যদি নৈতিকতা না থাকে তাহলে পরে দেশ এগিয়ে যেতে পারবে না।

এ সময় চলমান দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কঠোর অবস্থান নিয়েছেন, যেমন ক্যাসিনো বিষয়টি দেখছেন। উনি চাচ্ছেন ডেভেলপমেন্টের সাথে সাথে মানসিক ডেভেলপমেন্টটাও হোক।

বিএসএমএমইউতে গবেষণা বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের দেশের আর্থিক দুর্বলতার কারণে গবেষণার জন্য যতটুকু সাপোর্ট দিতে হয় তার সম্পূর্ণটা দিতে পারি না‌। দেশ আগাচ্ছে, অর্থনৈতিক উন্নয়ন হচ্ছে, তাই ধীরে ধীরে গবেষণার ব্যয় বাড়াতে পারব। আগামীতে গবেষণার জন্য বিশেষ বরাদ্দ রাখা হবে।

তিনি আরও বলেন, দেশে অনেক ভালো কাজ হয়েছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়েও কিছুদিন আগে লিভার ট্রান্সফার হয়েছে। পৃথিবীতে মাত্র ছয়টা এ ধরনের লিভার ট্রান্সফার হয়েছে। দেশের দুজনই এখন ভালো আছে। আমাদের ডাক্তাররও বিশ্বে নাম করছেন।

শিক্ষার্থীদের গবেষণা সুযোগ বৃদ্ধির চেষ্টা করে যাওয়ার কথা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমরা কথা বলেছি ব্রাসেলসে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে, ১০ জন শিক্ষার্থীকে ফুল স্কলারশিপে গবেষণা ও শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ দিয়েছে তারা। মেধা তালিকায় থাকা শিক্ষার্থীদের মধ্যে থেকে এই সুযোগ দেওয়া হবে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএমআরসি ও কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়ক ট্রাস্ট-এর চেয়ারম্যান এবং প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্য ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী বলেন, আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে যুগের চাহিদা মেটাতে চিকিৎসা ব্যবস্থায় সময়োপযোগী নতুন নতুন গবেষণা একান্ত অপরিহার্য হয়ে উঠেছে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব জনাব শেখ ইউসুফ হারুন বলেন, নতুন রোগ, রোগের জীবাণু, রোগ আক্রান্তের প্রক্রিয়া, রোগের চিকিৎসা, কার্যকরী ঔষধ, ঔষধের ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া ইত্যাদি আবিষ্কার ও তা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে উন্নত দেশগুলো সব সময় কয়েকধাপ এগিয়ে। যার মূলে রয়েছে তাদের গবেষণাক্ষেত্রে অগ্রাধিকারমূলক মনোভাব। গবেষণার মাধ্যমে নতুন রোগ বা রোগের চিকিৎসা ও প্রতিকার আবিষ্কার করা সম্ভব।

সভাপতির বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, স্বাস্থ্যসেবার সামগ্রিক উন্নয়নে গবেষণার কোনো বিকল্প নাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সব সময়ই গবেষণাকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়ে আসছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়কে চিকিৎসাসেবা, শিক্ষা, ও গবেষণায় সামনে দিকে এগিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে সকল শিক্ষক চিকিৎসক ও ছাত্রছাত্রীদের গবেষণা কর্মে আরো মনোনিবেশ করতে হবে।

অনুষ্ঠানের সম্মানিত অতিথি কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, বাংলাদেশেই সকল রোগের চিকিৎসা সম্ভব। আমি নিজেও দেশেই চিকিৎসাসেবা নিয়ে থাকি। এমন কোনো চিকিৎসাসেবা নাই যে চিকিৎসাসেবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে নাই।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএমআরসি ও কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়ক ট্রাস্ট-এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব জনাব শেখ ইউসুফ হারুন।

সারাবাংলা/এসবি/টিএস

কনক কান্তি বড়ুয়া ডাক্তার স্বাস্থমন্ত্রী


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর