প্যাটেন্টে পিছিয়ে কেন নারীরা?
৩ অক্টোবর ২০১৯ ০৯:০৫
দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহার্য অনেক আবিষ্কারে রয়েছে নারীর অবদান। তবে হতাশাজনক ব্যাপার হচ্ছে, মেধাস্বত্ব নিবন্ধন বা প্যাটেন্টের ক্ষেত্রে অনেকটা পিছিয়ে তারা। শতকরা মাত্র ১৩ ভাগ প্যাটেন্টের আবেদনে রয়েছে নারীর নাম।
আগের তুলনায় এই পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে এ কথা সত্য। তবে নারী-পুরুষের প্যাটেন্ট সমতার জন্য অপেক্ষা করতে হতে পারে ২০৭০ সাল পর্যন্ত।
উদ্ভাবনে নারীদের কাছ থেকে আরও প্যাটেন্ট আশা করতে চাইলে গবেষকদের দাবি, বিজ্ঞানের মৌলিক বিষয়গুলোতে তাদের প্রয়োজন আরও বেশি অংশগ্রহণ।
যুক্তরাজ্যের ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি অফিস (আইপিও) এসব তথ্য জানিয়েছে। খবর বিবিসির।
আবিষ্কারের জগতে পিছিয়ে নারীরা
ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি বিষয়ক প্রতিষ্ঠান পাওয়েল অ্যান্ড গিলবার্টের কর্মকর্তা পেনি গিলবার্ট এ বিষয়ে জানান, সমস্যাটা আসলে ‘পাইপ লাইনে’। বিজ্ঞান-প্রযুক্তি, ইঞ্জিনিয়ারিং, ম্যাথের মতো মৌলিক বিষয়ে নারীদের অধ্যয়নে ঘাটতি রয়েছে।
পেনি বলেন, আমরা যদি নারীদের প্যাটেন্ট সংখ্যা বাড়াতে চাই তাহলে এসব বিষয়ে নারীদের আরও বেশি অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। যুক্তরাজ্যে বর্তমানে মাত্র চারভাগের একভাগ নারী শিক্ষার্থী এসব বিষয়ে পড়াশোনা করে।
গ্রুপভিত্তিক গবেষণায় নারীর অংশগ্রহণ সীমিত
মৌলিক কাজ, আবিষ্কার বা মৌলিক ধারণার জন্য প্যাটেন্ট আবেদন গ্রহণযোগ্য। প্যাটেন্টের জন্য একক ব্যক্তি বা গ্রুপভিত্তিক আবেদন করা যায়। এখানেও রয়েছে অসমতা। প্যাটেন্ট আবেদনের তিন ভাগের দুই ভাগ গবেষণা গ্রুপে থাকে পুরুষের আধিপত্য, বাকি অংশ ব্যক্তিগত পুরুষ বা নারীর। অপরদিকে নারীদের সংখ্যাগরিষ্ঠ গবেষণা গ্রুপের প্যাটেন্ট রয়েছে মাত্র শতকরা ০.৩ ভাগ।
এছাড়া, আবিষ্কারের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও অনেকক্ষেত্রে নারীর নাম থাকে না বলে অভিযোগ রয়েছে। অনেক নারীও আবার নিজের আবিষ্কারের প্যাটেন্ট বিষয়ে আগ্রহী নন।
বায়োটেকনোলজি-ফার্মাসিউটিক্যাল প্যাটেন্টে নারীর অসমান্য অগ্রগতি
বিজ্ঞানের অনেক শাখায় পিছিয়ে থাকলেও বায়োটেকনোলজি ও ফারমাসিউটিক্যাল বিষয়ে নারীরা অনেক এগিয়ে গেছেন। বায়োটেকনোলজির ক্ষেত্রে অন্তত শতকরা ৫৩ ভাগ উদ্ভাবনে জড়িয়ে আছে নারীর নাম। ফার্মাসিউটিক্যাল ক্ষেত্রে এই হার শতকরা ৫২ ভাগ।
অপরদিকে, ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর ক্ষেত্রে নারীরা সবচেয়ে পিছিয়ে আছে। প্রতি ১০টি প্যাটেন্টে নারী প্যাটেন্টকারীর সংখ্যা একজনেরও কম।
সমতা আসতে পারে ২০৭০ সালের দিকে
গত ২০ বছরে নারী আবিষ্কারকদের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। আইপিও জানায় ১৯৯৮ সালে যেখানে নারীদের প্যাটেন্টের হার ছিল মাত্র ৬.৮ শতাংশ। ২০১৭ সালে তা দাঁড়িয়েছে ১২.৭ শতাংশতে। এভাবে নারীদের অগ্রগতি হলে প্যাটেন্টের ক্ষেত্রে নারী পুরুষের সমতা আসবে ২০৭০ সালের দিকে।
২০১৭ সালের হিসেবে যুক্তরাজ্যের মোট প্যাটেন্টের ১১% নারী। ১৭% নিয়ে সবচেয়ে এগিয়ে রাশিয়া। এরপরেই রয়েছে ফ্রান্স। অপরদিকে জাপান কিংবা দক্ষিণ কোরিয়ায় এই হার ৫% এর কাছাকাছি।