চেয়ার-টেবিল না পেয়ে মেঝেতে বসে ছাত্রদলের প্রতিবাদ
৩ অক্টোবর ২০১৯ ১৩:৪৭
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মধুর ক্যান্টিনে বসার জন্য কোনো চেয়ার-টেবিল না পেয়ে ক্যান্টিনের মেঝেতে বসেই প্রতিবাদ জানালেন বিএনপির সহযোগী ছাত্র সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। তাদের অভিযোগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ফাঁকা চেয়ার-টেবিল থাকা সত্ত্বেও বসতে দেয়নি তাদের।
বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) সরেজমিনে মধুর ক্যান্টিনে গিয়ে দেখা যায়, বিগত কয়েকদিনের মতো আজও সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে মধুর ক্যান্টিনে আসেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এসে তাদের বসার জায়গায় কোনো চেয়ার-টেবিল না পেয়ে মেঝেতেই বসে পড়েন তারা।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০ টা থেকে সাড়ে ১১ টা পর্যন্ত ছাত্রদলের নতুন সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল এবং বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমানসহ শতাধিক নেতাকর্মী মধুর ক্যান্টিনের মেঝেতে বসে তাদের প্রতীকী অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
মধুর ক্যান্টিনের মেঝেতে ঘন্টা খানেক অবস্থানের পর ক্যান্টিনের বাইরে অবস্থান নেন ছাত্রদল নেতারা। পরে সেখান থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদল নেতাকর্মীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে একটি বিক্ষোভ মিছিল করেন তারা। মিছিলটি কলাভবনের পিছন দিয়ে ভিসি চত্বর হয়ে শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়।
ইকবাল হোসেন শ্যামল বলেন, ‘আমরা গতকালও (২ অক্টোবর) মধুর ক্যান্টিনে এসে বসার কোনো জায়গা পাইনি। বহুকষ্টে একটি পুরনো টেবিল ও তিনটি চেয়ারের ব্যবস্থা করেছিলাম। আজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আমাদের বসার জায়গা থেকে চেয়ার টেবিল সড়িয়ে নিয়েছে। ফাঁকা চেয়ার-টেবিল রেখেও আমাদের বসতে দেয়নি। আমরা তাই ক্যান্টিরের মেঝেতে বসে প্রতীকী অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি।’
ছাত্রলীগের প্রতি ক্ষোভ জানিয়ে শ্যামল বলেন, ‘আমরা আগেই বলেছি ক্যাম্পাসে কার্যকর কোনো সহাবস্থান নেই। এর আগেও ছাত্রলীগ আমাদের ওপর হামলা করে। তার কোনো বিচার হয়নি।’
এ বিষয়ে জানতে ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে এ ধরণের অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি। ছাত্রদল নেতাকর্মীদের বসার ক্ষেত্রে ছাত্রলীগ কোনো ধরনের বাধা দেয়নি বলে দাবি করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘তাদের জন্য কোনো চেয়ার আছে নাকি? তাদের লেখা কোনো চেয়ার আছে? তাদের কাছ থেকে কি আমরা কোনো চেয়ার কেড়ে নিয়েছি? আমরা আমাদের নিয়মিত কর্মসূচির মতো প্রতিদিন যেভাবে মধুর ক্যান্টিনে আসি, আজকেও আসছি।’
প্রসঙ্গত, গত ১৯ সেপ্টেম্বর ভোটের মাধ্যমে ছাত্রদলের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে বিগত কয়েকদিন ধরে মধুর ক্যান্টিনসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রদল নেতাকর্মীরা নিয়মিত আসছেন। গত ২৩ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাসের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রদল নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করে ছাত্রলীগ। এ ঘটনায় ছাত্রদলের ৩০ জন নেতা-কর্মী আহত হন বলে অভিযোগ করেছিল সংগঠনটি।
এছাড়া, বুধবার (২ অক্টোবর) ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা মধুর ক্যান্টিনে বসার জন্য একটি টেবিল ও তিনটি চেয়ার পেয়েছিলেন। এছাড়া তাদের বসার জায়গার সিলিং ফ্যানের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এসব কাজ করে কৌশলে তাদের হেনস্তা করেছিল বলে গতকাল অভিযোগ করেছিলেন ছাত্রদল নেতারা।