Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ই-সিগারেট নিষিদ্ধের বিষয়ে চিন্তা ভাবনা করছে সরকার


৪ অক্টোবর ২০১৯ ০৬:০১

ঢাকা: স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব শেখ ইউসুফ হারুন জানিয়েছেন, সরকার দেশে ইলেক্ট্রনিক সিগারেট (ই-সিগারেট) নিষিদ্ধের বিষয়ে চিন্তা ভাবনা করছে। এছাড়াও সরকার সব ধরনের ধূম্র উদগিরক তামাক পণ্যের উৎপাদন, আমদানি ও বিক্রি বন্ধ নিষিদ্ধ করার কথা ভাবছে বলেও জানান তিনি।

বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) ইমার্জিং টোব্যাকো প্রোডাক্ট (ই-সিগারেট, এইচটিপি): বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক পরিপ্রেক্ষিত ও আমাদের করণীয়’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। মত বিনিময় সভাটি স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উদ্যোগে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।

বিজ্ঞাপন

মত বিনিময় সভায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেকের পক্ষে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন শেখ ইউসুফ হারুন। এছাড়াও তিনি বৈশ্বিক তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে স্বাস্থ্যে ক্ষতিকর প্রভাবগুলো তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, তরুণ ও যুব সমাজকে রক্ষা করতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ই-সিগারেটসহ নতুন ধরনের সব তামাক পণ্যের উৎপাদন, আমদানি ও বিক্রি নিষিদ্ধ করাই হবে বাংলাদেশের জন্য সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত।

তিনি আরও বলেন, ঢাকাসহ বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে গড়ে উঠেছে ইমার্জিং টোব্যাকো প্রোডাক্ট এর অসংখ্য বিক্রয় কেন্দ্র। অনলাইন এবং ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ই-সিগারেট সামগ্রী বিক্রয় হচ্ছে। ইতোমধ্যে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত ই-সিগারেট নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। এছাড়া শ্রীলংকা, নেপাল, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুরসহ ৩০টির অধিক দেশ এসব পণ্য নিষিদ্ধ করেছে। সুতরাং এই বৈশ্বিক অভিজ্ঞতা বাংলাদেশে কাজে লাগাতে হবে।’

বিজ্ঞাপন

এ সময় তিনি এই বিষয়ে শীর্ষ পর্যায়ের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলেও জানান।

মত বিনিময় সভায় অংশ নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ইমার্জিং টোব্যাকো প্রোডাক্ট এর বিষয়টি আমাদের জন্য নতুন। এক সময় ই-সিগারেট জাতীয় পণ্যকে সিগারেটের নিরাপদ বিকল্প হিসেবে উপস্থাপন করা হলেও এখন বিভিন্ন গবেষণায় এর ক্ষতির বিষয়গুলো সামনে আসছে। সুতরাং আমরা এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার চিন্তা করছি।

মত বিনিময় সভায় সাউথ এশিয়া প্রোগ্রামস, ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস্, ইউএসএ-এর পরিচালক বন্দনা শাহ বলেন, অতি সম্প্রতি ভারতে ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ইউরোপ, আমেরিকাসহ বিশ্বের বেশ কিছু দেশে এসব পণ্য ব্যবহার ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। তরুণ এবং শিশুদের টার্গেট করে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ই-সিগারেট জাতীয় পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাত করছে বহুজাতিক তামাক কোম্পানিগুলো। বাংলাদেশেও এসব পণ্যের ব্যবহার ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ছে। পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করার পূর্বেই বাংলাদেশও এসব পণ্যের উৎপাদন, আমদানি, বিক্রয় ও বিপণন নিষিদ্ধ করতে পারে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তামাক নিয়ে তাদের সর্বশেষ প্রতিবেদন ই-সিগারেটকে সুনিশ্চিতভাবে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর পণ্য হিসেবে চিহ্নিত করেছে। বর্তমানে দেশের মোট জনসংখ্যার ৪৯ শতাংশই তরুণ, যাদের বয়স ২৪ বছর বা এর নিচে। ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ট হিসেবে বিবেচিত এই তরুণ জনগোষ্ঠীকে সঠিক পথে পরিচালনার ওপরই বাংলাদেশের কাঙ্ক্ষিত সমৃদ্ধি ও উন্নতি নির্ভর করছে। তামাকাসক্ত অসুস্থ তরুণ প্রজন্ম এসব লক্ষ্য পূরণে সাহায্য করবেনা, বরং সমাজ ও অর্থনীতির জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়াবে এবং ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য অর্জন করা কঠিন হয়ে পড়বে।

অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিবের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন অনুবিভাগ) মো. হাবিবুর রহমান খান।

ই-সিগারেট স্বাস্থ্য অধিদফতর স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর