Thursday 16 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘প্রশ্নফাঁসকারীদের চ্যালেঞ্জের জবাব দিয়েছে পুলিশ’


১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ২০:৪৫ | আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ২০:৪৮

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ফেসবুকে প্রশ্নফাঁসকারীরা চ্যালেঞ্জ করেছিল পুলিশ তাদেরকে ধরতে পারবে না। সেই চ্যালেঞ্জের পর তারা এসএসসি পরীক্ষার বেশ কয়েকটি বিষয়ের প্রশ্নফাঁস করে। ওই চক্রকে ধরতে গোয়েন্দা পুলিশ ক্রেতা সেজে প্রশ্ন কেনেন। পরে এক অপারেশনের মাধ্যমে রাজধানীর চারটি এলাকা থেকে মোট ১৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়। রোববার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার আবদুল বাতেন এই তথ্য জানান।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, প্রশ্নফাঁসকারীদের চ্যালেঞ্জের জবাব দিয়েছে পুলিশ। এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। তবে তা পরীক্ষার ৪০ মিনিট অথবা এক ঘণ্টা আগে ফাঁস হয়। যা শিক্ষার্থীদের কোনো কাজে লাগে না।

তিনি বলেন, গতকাল দুপুরে ও রাতে যাত্রাবাড়ী ও শেরেবাংলা এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রশ্নফাঁসে জড়িত তিন ভাই বরকত উল্লাহ, আহসান উল্লাহ ও আমান উল্লাহকে আটক করা হয়।

এছাড়া হাজারীবাগ ও নিউ মার্কেট থানা এলাকা থেকে ১১ জনকে আটক করা হয়। এরা হলেন, রাহাত ইসলাম, সালাউদ্দিন, মো. সুজন, জাহিদ হোসেন, সুফল রায় ওরফে শাওন, আল আমিন, সাইদুল ইসলাম, আবির ইসলাম নোমান, শাহদাত হোসেন স্বপন, ফাহিম ইসলাম ও তাহসিব রহমান।

এদের মধ্যে আহসান উল্লাহ সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী। আমান উল্লাহ আইটি ইঞ্জিনিয়ার এবং বরকত উল্লাহ কম্পিউটারে পারদর্শী। এরা তিন ভাই মিলে এই ব্যবসায় করত। আহসান উল্লাহ ফেসবুকে ৫টি অ্যাকাউন্ট খুলে ফলোয়ার তৈরি করতেন। এতে কয়েক লাখ ফলো তৈরি হয়। অন্যদিকে বেশ কয়েকটি আইডির ফলোয়ার তিনি। ওইসব আইডি থেকে প্রশ্ন সংগ্রহ করে নিজের আইডিতে দিতেন। এরকম তিনটি আইডির সন্ধান পেয়েছে গোয়েন্দারা।

বিজ্ঞাপন

এদিকে ঢাকা শিক্ষাবোর্ড নিউ মার্কেট ও হাজারীবাগ থানায় দুটি মামলা করেন। সেই মামলায় গতকাল শনিবার শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় গভমেন্ট ল্যাবটেরি স্কুল কেন্দ্র থেকে বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ স্কুলের পরীক্ষার্থী তাহসিবকে গ্রেফতার করা হয়। হাজারীবাগ থেকে আরেক পরীক্ষার্থী আবিরকেও গ্রেফতার করা হয়। এই দুই পরীক্ষার্থীর সহযোগী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ফাহিমকে গ্রেফতার করা হয়।

গোয়েন্দা পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, প্রশ্নপত্র সকালের দিকে যেমন ফাঁস হয় আবার রাতের বেলাতেও অনেক ফাঁস হয়েছে। প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে বোর্ডের কর্মকর্তাদের হাত রয়েছে। গোয়েন্দারা ওইসব মূল অপরাধীদের ধরতে অভিযান চালাচ্ছে।

প্রশ্নপত্র ফাঁসকারীদের মধ্যে আহসান উল্লাহ ২১টি সিমের মাধ্যমে বিকাশে দুই দিনে দুই লাখেরও বেশি টাকা হাতিয়ে নেন। তারা অনলাইনে বিজনেস করেন এই বলে বিকাশ অ্যাজেন্টদের বোকা বানিয়ে টাকা তুলে নেন। ব্যক্তিগত বিকাশ অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে দিনে ১০ বারের বেশি ট্রানজেকশন করা যায় না। তাই তারা অ্যাজেন্টদের বেছে নেন। তারা প্রত্যেক প্রশ্ন ক্রেতার কাছ থেকে প্রশ্নপত্র অনুযায়ী ৫০০ থেকে ২০০০ টাকা নিতেন।

এক প্রশ্নের জবাবে আবদুল বাতেন বলেন, লাখ লাখ শিক্ষক পরীক্ষা প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত। এর সঙ্গে পিয়নসহ অন্যান্যরাও জড়িত আছেন। আসলে কার মাধ্যমে প্রশ্নফাঁস হচ্ছে তা বের করা কঠিন। এরপরেও যদি প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের পরীক্ষার হলে মোবাইল নিষিদ্ধ করা যায় তাহলেও অনেকটা রোধ করা সম্ভব।

এদিকে রোববার র‌্যাব-২ এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) ফিরোজ কাউসার জানায়, তারা আনিসুর রহমান নামে এক প্রশ্নফাঁসকারীকে আটক করেছে।

সারাবাংলা/ইউজে/একে/এনএস

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর