ডিসির উদ্যোগে পথশিশুদের আশ্রয়কেন্দ্র, থেমে গেল মামলায়
৫ অক্টোবর ২০১৯ ০৭:৫১
কক্সবাজার: জেলা শহরের পথশিশুদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র করতে জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে মামলা। সরকারি ওই জায়গাকে নিজের বলে দাবি করে মামলা করেছেন বশির আহমদ নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি। সম্প্রতি আদালত পরবর্তী নিদেশ না দেওয়া পর্যন্ত ওই জায়গায় সব রকমের কাজ স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
জানা যায়, ছিন্নমূল শিশুদের নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন শহরের মোটেল রোড এলাকার আনন্দ মাল্টিমিডিয়া স্কুলসংলগ্ন সরকারি জায়গায় পথশিশুদের জন্য একটি সেল্টার নির্মাণের কাজ শুরু করেছিলেন। কিন্তু বশির আহমদের পক্ষে মোবারক আলী নামে এক ব্যক্তি এই জায়গাকে নিজের বলে দাবি করে মামলা করেছেন।
সরেজমিনে পথশিশুদের জন্য সেল্টার নির্মাণের জায়গায় দেখা যায়, আশ্রয় কেন্দ্রের অবকাঠামোর কাজ প্রায় শেষের পথে। কিন্ত আগের দিন রাতে আদালত কাজ স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছে বলে একটি ব্যানার টাঙানো হয়েছে। ওই ব্যানারে লেখা আছে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ স্থগিত করা হয়েছে। বশির আহমদের পক্ষে মোবারক আলী নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে এই রিট করেন।
মোবারক আলীর পক্ষে রিটকারী আইনজীবী এস এম জুলফিকার আলী জুনু বলেন, ‘জেলা প্রশাসকের কাছে দাখিল করা আবেদনগুলি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সরাসরি স্থিতিবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। সুতরাং আইনানুগ প্রক্রিয়ায় যেভাবে যাওয়া যায় আমরা সেভাবেই কাজ করছি।’
পথশিশুদের কল্যাণমূলক সংগঠন ‘নতুন জীবন’ এর সভাপতি ওমর ফারুক হিরু বলেন, ‘শহরে থাকা দুই শতাধিক পথশিশুদের মাঝে প্রায় অর্ধেকের নিরাপদ রাত কাটানোর জায়গা নেই। ফলে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকা শিশুদের জন্য আশ্রয় কেন্দ্র করে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছিলেন জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন। এখন এই সেল্টার যদি না হয় তাহলে শত শত পথশিশুর ভবিষ্যৎ অন্ধকারেই থেকে যাবে।’
জেলা প্রশাসক বলেন, ‘ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকা পথশিশুদের সেল্টারের জন্য নির্ধারিত জায়গাটি সরকারি জায়গা। সেখানে পথশিশুদের আশ্রয়কেন্দ্র তৈরির কাজ চলছে। হঠাৎ দেখলাম একটি পক্ষ রিট করেছে, তাই আপাতত মহামান্য আদালতের নির্দেশনা মান্য করা হচ্ছে। তবে আমরা আদালতে প্রতিকার চেয়ে দ্রুত আইনি পদক্ষেপ নেব। সরকারি জায়গা কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি হতে পারে না। আইনি প্রক্রিয়া শেষে সরকারি জায়গায় ওপরই পথশিশুদের নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্র নির্মিত হবে।’
আমরা এখনো বিশ্বাস করি এইটা আমাদের জায়গা এবং ওখানে পথশিশুদের জন্য সেল্টার হবে উল্লেখ করে জেলা প্রশাসক আরও জানান, যদি প্রমাণিত হয় অন্যায়ভাবে মামলা করে আমাদের হয়রানি করা হচ্ছে তাহলে তাদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।