মিয়ানমার পরিস্থিতি নিয়ে ভীত নই: বিজিবি মহাপরিচালক
১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ২১:৫৯
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
মিয়ানমারের সৈন্যরা ১৮ বার আমাদের সীমান্ত অতিক্রম করেছে। আমরা সেই পরিস্থিতি শান্তভাবে মোকাবেলা করেছি, তবে আমরা ভীত বা দুর্বল নই। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবুল হোসেন এই কথা বলেছেন। রবিবার দুপুরে রাজধানীর পিলখানায় বিজিবি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই কথা বলেন।
এসময় তিনি বলেন, ‘ওই সময়ে আমরা যদি উত্তেজিত হতাম তাহলে বাংলাদেশ আজকে যুদ্ধে থাকতো। মিয়ানমারের উদ্দেশ্য ছিল যুদ্ধ বাধিয়ে অশান্ত পরিবেশ তৈরি করা। কিন্তু আমরা তা কৌশলে এড়িয়ে গিয়েছি।’
আবুল হোসেন বলেন, ‘সরকার নারী-শিশু পাচার, চোরাচালানা বন্ধে আমাদের দায়িত্ব দিয়েছে। মিয়ানমার সীমান্তে আমাদের কোন রিজিয়ন ছিল না। সেখানে প্রধানমন্ত্রী আমাদের একটি রিজিয়ন দিয়েছেন। আমরা ১০ লাখ রোহিঙ্গার সুন্দরভাবেই ব্যবস্থা করেছি। সে জন্য আমাদের ফোর্সের মধ্যে কুইক রিয়েকশন ফোর্স চালু করতে চাচ্ছি। আমরা রংপুর ও যশোর রিজিয়নকে ক্রাইম ফ্রি জোন করতে কাজ করে যাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, গত এক বছরে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তায় ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় তিন হাজার ৪১৬ বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। একটি অ্যাডহক রিজিয়ন, চারটি নতুন সেক্টর, ১৫টি নতুন ব্যাটালিয়ন ও ১৩৬টি বিওপি নির্মাণ করা হয়েছে। ৫৩৯ কিলোমিটার অরক্ষিত সীমান্তে ৬২টি বিওপি নির্মাণের ফলে ৪০২ কিলোমিটার সুরক্ষিত হয়েছে। আরও ২০টি বিওপির নির্মাণ করে অবশিষ্ট ১৩৭ কিলোমিটার সুরক্ষিত হবে। মিয়ানমার সীমান্তে ২৭১ কিলোমিটার সীমান্ত সড়ক ও রাস্তা তৈরি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বাহিনীতে কেউ মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়। বাহিনীতে কোন অপরাধের প্রশ্রয় দেওয়া হয় না। আমরা সীমান্তেও ক্যামেরা বসাচ্ছি। যাতে করে নজরদারি বৃদ্ধি করা যায়। আমাদের আইন খুব শক্ত। মাদকের ব্যাপারে কেউ জড়িত থাকলে তাদের এই বাহিনীতে স্থান নেই।
ভারতে থেকে গরু পাচারের বিষয়ে তিনি বলেন, ভারত থেকে গরু আনার দরকার নেই ওরাই গরু দিয়ে যাবে। বাংলাদেশের রাখালদের অনুরোধ করেছি ভারতের ভিতরে না যেতে, বরং ওরাই গরু দিয়ে যাবে।
বিজিবি প্রধান বলেন, আমি যেদিন বিজিবিতে যোগদান করেছি তারপর থেকেই রোহিঙ্গাদের প্রবেশ শুরু হয়েছে। আমরা দুই আড়াইদিন তাদের বর্ডারে আটকে রেখে ছিলাম। তাদের দেখে মানবিক হয়েছি। তাদের খাদ্য ছিল না, চিকিৎসা ছিল না, আমরা সেই কাজটিও করেছি। পৃথিবীতে আমাদের নিয়ে এখন গর্ব করে।
তিনি আরও বলেন, ইয়াবা নিয়ন্ত্রণ করা একটি বাহিনীর পক্ষে সম্ভভ নয়। এর জন্য সমাজের সকল স্তরের মানুষের এগিয়ে আসতে হবে। মাদক চোরাচালান বন্ধে আমরা এমপিদের ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেছি।
এসময় জানানো হয়, বিজিবি ২২২ বছরের ইতিহাস নিয়ে এগিয়ে চলেছে। ২০০৯ সালের পর পুনর্গঠন করা হয়েছে বিজিবি। ২০১০ সালের আইন পূর্নগঠন করা হয়।
সারাবাংলা/এসআর/এনএস