প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে নতুন নিদান: ধীর গতির ইন্টারনেট
১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৮:৩৮
সারাবাংলা ডেস্ক
মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষার দিনগুলোতে প্রশ্নপত্র ফাঁস প্রতিরোধ করতে আড়াই ঘণ্টা সব ধরনের ইন্টারনেট সেবা ধীরগতি রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সেই সিদ্ধান্ত কার্যকরে সোমবার সকাল ৮ টা থেকে সারাদেশে ইন্টারনেটে ধীর গতি রাখা হয়।
প্রশ্নপত্র ফাঁস ঠেকাতে সব রকমের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পরে, টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি পরীক্ষার দিন সকালে আড়াই ঘণ্টা ইন্টারনেটের গতি কমিয়ে রাখতে সব আইএসপি ও মোবাইল অপারেটরদের নির্দেশনা দিয়েছে ।
পরীক্ষামূলকভাবে গতকাল (রোববার) রাত ১০টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত আধা ঘণ্টা দেশের সব ইন্টারনেট প্রোভাইডারের ব্যান্ডউইথ প্রতি সেকেন্ড ২৫ কিলোবিটে বেঁধে দেওয়া হয়।
এর আগে রোববার সকালে আইসিটি বিষয়ের পরীক্ষা শুরুর সময় আধা ঘণ্টার বেশি সময় মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়েছিল নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
এরপর আর কবে কখন ইন্টারনেট সেবা বন্ধ থাকবে তার একটি সময়সূচি প্রকাশ করে বিটিআরসি। সে সময়সূচি অনুযায়ী-
১২ ফেব্রুয়ারি সকাল ৮টা থেকে সাড়ে ১০টা (ক্যারিয়ার শিক্ষা)
১৩ ফেব্রুয়ারি সকাল ৮টা থেকে সাড়ে ১০টা (পদার্থবিদ্যা, বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা এবং ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং)
১৫ ফেব্রুয়ারি সকাল ৮টা থেকে সাড়ে ১০টা (রসায়ন, পৌরনীতি ও নাগরিকতা এবং ব্যবসায় উদ্যোগ)
১৭ ফেব্রুয়ারি সকাল ৮টা থেকে সাড়ে ১০টা (বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়)
১৮ ফেব্রুয়ারি সকাল ৮টা থেকে সাড়ে ১০টা (বাংলা ভাষা ও সাহিত্য, ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য, গার্হস্থ্য বিজ্ঞান তত্ত্বীয়, কৃষি শিক্ষা তত্ত্বীয় ও সংগীত) এবং বেলা ১২টা থেকে আড়াইটা (আরবি, সংস্কৃত, পালি, কর্মমুখী শিক্ষা, কম্পিউটার শিক্ষা, শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া, বেসিক ট্রেড, চারু ও কারুকলা)
১৯ ফেব্রুয়ারি সকাল ৮টা থেকে সাড়ে ১০টা (জীব বিজ্ঞান, অর্থনীতি)
২০ ফেব্রুয়ারি সকাল ৮টা থেকে সাড়ে ১০টা (হিসাব বিজ্ঞান)
২২ ফেব্রুয়ারি সকাল ৮টা থেকে সাড়ে ১০টা (বিজ্ঞান ও উচ্চতর গণিত)
প্রশ্নপত্রের ফাঁস ঠেকাত সরকারের এ উদ্যোগকে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা তুলনা করছেন, মাথা ব্যথায় মাথা কেটে ফেলার সঙ্গে। তথ্য প্রযুক্তি পরামর্শদাতা এবং ওপেন সোর্স সফটওয়্যার অ্যাক্টিভিস্ট মুনির হাসান সারাবাংলাকে জানান, ইন্টারনেট তথ্য বিনিময়ের একটি মধ্যম, এটা দিয়ে মানুষের একমাত্র কাজ প্রশ্নপত্র ফাঁস নয়। দাপ্তরিক কাজকর্ম এবং প্রয়োজনীয় যোগাযোগের জন্য ইন্টারনেট লাগে। অনেকের পেশাই হচ্ছে ইন্টারনেটের মাধ্যমে মানসিক শ্রম বিক্রি করা। ইন্টারনেট বন্ধের নেতিবাচক প্রভাব তাদের কাজে পড়ছে।
তিনি আরও বলেন, ইন্টারনেট বন্ধ করে হয়তো সাময়িকভাবে প্রশ্নপত্র ফাঁস বাধা দেওয়া যাবে, কিন্তু একবারে বন্ধ এটা ভাবা বোকামি।
যদিও সকাল ৮টা থেকে ইন্টারনেট বন্ধের কথা ছিল, তবু ৯টা নাগাত দেশের প্রায় সব প্রান্ত থেকে ইন্টারনেট পাওয়া যাচ্ছে। এমন অবস্থায় প্রশ্নপত্র ফাঁসই বা কীভাবে বন্ধ থাকবে, প্রশ্ন রাখেন অনেকে।
সারাবাংলা/এমএ