Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বেশি দামে কেনা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে বেশি দামেই


৬ অক্টোবর ২০১৯ ১৭:১৩

ঢাকা: রাজধানীর খুচরা দোকানগুলোতে নতুন করে দেখা দিয়েছে পেঁয়াজ সংকট। আবার কোনো দোকানে বিক্রি হচ্ছে আগের দামেই। অর্থাৎ দেশি বা ভারতীয় দুই ধরণের পেঁয়াজই গড়ে ১শ টাকার কাছাকাছি বিক্রি হচ্ছে। কারণ হিসেবে খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, আগের পেঁয়াজ বেশি দামে কিনতে হয়েছে বলেই তারা আর পড়ে যাওয়া দামে বিক্রি করতে পারছেন না।

রোববার (৬ অক্টোবর) রাজধানীর বসুন্ধরা, নতুনবাজার ও বাড্ডা বাজার ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে।

বিজ্ঞাপন

বাজার ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ দোকানে পেঁয়াজ নেই। আবার যেসব দোকানে পেঁয়াজ রয়েছে তারা কম দামে বিক্রি করতে চান না। কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, বেশি দামে পেঁয়াজ কেনায় তারা আর কম দামে বিক্রি করতে পারবেন না। দাম বেড়ে যাওয়ার সময় দেশি এবং ভারতীয় পেঁয়াজ কেজি প্রতি ৯৫-১০০ টাকা দরে কিনেছেন। সেই হিসেবে এখন পেঁয়াজের দাম কমলেও তারা সেই আগের দামেই পেঁয়াজ বিক্রি করছেন।

বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বাসিন্দা জান্নাতুল ইসলাম সকালে বসুন্ধরা কাঁচা বাজারে বাজার করতে আসেন। পেঁয়াজের দাম কেমন জানতে চাইলে তিনি বলেন, দেশি ১০০ টাকা এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ৯৫ টাকা দরে কিনেছেন। দাম কমার পরও বেশি দামে কেনো কিনলেন জানতে চাইলে বলেন, পেঁয়াজ না থাকলে বেশি দামেই তো কিনতে হবে। আমরা তো জিম্মি ব্যবসায়ীদের কাছে।

বেশি দাম কেন জানতে চাইলে বসুন্ধরা কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ী সাইদুল আলম সারাবাংলাকে বলেন, বেশি দাম দিয়েই আগের পেঁয়াজ কিনতে হয়েছে। অর্থাৎ লোকসান করে তো আর ব্যবসা করতে পারব না। তাই বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে।

এদিকে নতুনবাজার এলাকার কাঁচাবাজারে গিয়ে দেখা যায়, অধিকাংশ দোকানে পেঁয়াজ নেই। আর যেসব দোকানে পেঁয়াজ আছে সেসব দোকানে দেশি এবং ভারতীয় উভয়ই পেঁয়াজ ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

আলী আকবর এন্টারপ্রাইজের মালিক ইউসুফ আহমেদ এ বিষয়ে বলেন, আমার দেশি এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ৯৫ টাকা কেজিতে কেনা। আমি এখন কিভাবে কম দামে বিক্রি করব। আর নতুন পেঁয়াজ এখনো আনা হয়নি। তাই আগের দামে কেনা পেঁয়াজ আগের দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে।

বাড্ডা কাঁচাবাজারে গিয়ে দেখা যায় সেখানেও পেঁয়াজ সংকট। কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা বলেন, আমাদের বেশি দাম দিয়েই পেঁয়াজ কেনা হয়েছে। এখন কিভাবে কম দামে বিক্রি করব। দেশি পেঁয়াজ ৯৫ টাকা আর ভারতীয় পেঁয়াজ ৯০ টাকা দরে কেনা। সুতরাং বেশি দামে পেঁয়াজ বিক্রি করা ছাড়া কোনো উপায় নেই।

সেখানে কথা হয় বাজার করতে আসা সাকিব হোসেনের সঙ্গে। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, সরকার থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে পেঁয়াজের দাম কমানোর জন্য কিন্তু ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজের দাম কমাচ্ছেন না। আমাদেরকে বেশি দাম দিয়েই কিনতে হচ্ছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, বছরে দেশে পেঁয়াজের চাহিদা গড়ে প্রায় ২৪ লাখ মেট্রিক টন। গত ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে দেশে পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে ২৩ দশমিক ৩০ লাখ মেট্রিক টন। পচনশীল ও সঠিক মজুত পদ্ধতির অভাবে এর ৩০ শতাংশ নষ্ট হয়ে যায়। ফলে বছরে ঘাটতি থাকে ৮ থেকে ৯ লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজের। এর সিংহভাগ আসে ভারত থেকে।

এবার বেশ কয়েকটি রাজ্যে উৎপাদন কম হওয়ার অজুহাত দেখিয়ে গত ২৯ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেয় ভারত। এতেই ব্যবসায়ীরা সুযোগ বুঝে মজুত করে ও দাম বাড়িয়ে দেয়। তবে সরকারের নানা পদক্ষেপ চললেও এখনো দামের অজুহাতে পেঁয়াজ সংকট দেখাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

বেশি দামের পেঁয়াজ বেশি দামেই বিক্রি হচ্ছে

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর