Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মিডিয়াকে যা বললেন সম্রাটের দ্বিতীয় স্ত্রী শারমিন


৬ অক্টোবর ২০১৯ ১৭:১৬

ঢাকা: যুবলীগ নেতা ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট ক্যাসিনো কেলেঙ্কারিতে কুমিল্লা থেকে গ্রেফতার হওয়ার পর র‌্যাব এখন অভিযান চালাচ্ছে ক্যাসিনো সম্রাটের সঙ্গে সম্পর্কিত নানা স্থানে। তারই অংশ হিসেবে রোববার (৬ অক্টোবর) দুপুরে যায় রাজধানীর মহাখালি ডিওএইচএস-এর একটি বাসায়। সেখানে থাকেন সম্রাটের দ্বিতীয় স্ত্রী শারমিন চৌধুরী। অভিযানের সময় গণমাধ্যমের কর্মীরা বিভিন্ন প্রশ্নে তার কাছে জানতে চান সম্রাটের ক্যাসিনো বাণিজ্যের বিভিন্ন দিক নিয়ে। সেসব প্রশ্নের উত্তরে যা কিছু বললেন এই নারী তা এখানে তুলে ধরা হলো।

বিজ্ঞাপন

জামায়াত নেতার বাসা থেকে আটক হন সম্রাট

সাংবাদিকদের সম্রাটের স্ত্রী বলেন, আমি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের মিসেস শারমিন চৌধুরী। আমাদের বিয়ে হয়েছে ১৯ বছর। আমাদের একটা ছেলে আছে, দেশের বাইরে থাকে। আমার স্বামী অ্যারেস্টেড হয়েছে তা আমি জানি। তবে দুই বছর আগে থেকে আমরা আলাদা থাকি। সে যে ক্যাসিনোর মালিক ছিল তা আমি জানি না। আমি শুধু জানি সে যুবলীগের ভালো একজন নেতা। আমাদের মধ্যে দুই বছরের দূরত্ব। সে কারণে জানি না, সে ক্যাসিনো চালাতো কি না। ওর সম্পদ বলতে কিছুই নেই। যা ইনকাম করে ক্যাসিনো চালিয়ে, তা দলের জন্য খরচ করে, দল পালে। আর যা নিজে রাখে তা দিয়ে সিঙ্গাপুর কিংবা এখানে জুয়া খেলে। ওর নিজের সম্পদ বলতে কিছুই নেই। ওর জনপ্রিয়তা দেখেই বুঝতে পারি ও ক্যাসিনো চালিয়ে সেই টাকা দিয়ে দল পালে।

তার মতো জনপ্রিয়তা আর কোনো নেতার আছে? সাংবাদিকদের উদ্দেশে এই প্রশ্ন করে তিনি বলেন, আর কোনো নেতার এত জনপ্রিয়তা নেই। একমাত্র ইসমাইল হক চৌধুরী সম্রাটের আছে। উত্তরায় তো একজন আছে নিখিল নামে, তার তো এত জনপ্রিয়তা নেই। আমার সঙ্গে ওর একটু মিলতো কম। ও ছেলে পেলে নিয়ে বেশি থাকতে পছন্দ করতো।

এছাড়া তারা দুজন আলাদা থাকতেন উল্লেখ করে বলেন, ওর নাম যেমন, তেমনি শুরু থেকেই ও সম্রাট। ও কিন্তু অন্য সহসভাপতি বা অন্য নেতাদের মতো না। ওর চলাফেরা খুব ভালো। ক্যাসিনোতে কিভাবে আসছে আমি জানি না। কিন্তু ওর জুয়া খেলার নেশা আছে। ব্যক্তিগতভাবে আমি দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে এই অভিযানের জন্য ধন্যবাদ জানাবো। তবে এই উদ্যোগ আরও আগে নিলে আরও ভালো হতো। সম্রাট সিঙ্গাপুর যেত জুয়া খেলতে। জুয়া খেলা ছিল তার নেশা, কিন্তু সম্পত্তি করা তার নেশা ছিলো না। দোকান, গাড়ি এগুলোর প্রতি আগ্রহ নেই। যা জমাতো তা সিঙ্গাপুরে জুয়া খেলেই শেষ করতো। সিঙ্গাপুরে অনেক নারীর সঙ্গে দেখা যায়, তা নয়- দুই বছর ধরে ও আমাকে সিঙ্গাপুর নেয় না। ওখানে বোধহয় মালয়েশিয়ায় বড় হওয়া চীনা মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক হয়েছে, সেখানে ওর সঙ্গেই সময় কাটায় আরকি। সিঙ্গাপুরে মেয়েটার নাম সি লিং। ও আমারও ফ্রেন্ড। পরে ওর সঙ্গেই বেশি জড়িয়ে যায়।

বিজ্ঞাপন

তিন-চার বছর ধরে সম্রাট ক্যাসিনোর সঙ্গে জড়িত উল্লেখ করে বলেন, এর আগে ছিল না। আগে ঠিকাদারি করে আয় করতো। তবে দলের বড় নেতাদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক ছিল। খালেদকে দেখছি, জি কে শামীম, সেলিম এদের আমি চিনি না। খালেক (খালেদ) কে আমি মাঝে মধ্যে অফিসে গেলে দেখতাম। এতটুকুই।

আমি কখনো সামনে আসি সেটা ও পছন্দ করতো না। কিংবা কখনো ক্যামেরার সামনে কথা বলি। কোনো রাজনীতি করি এটা পছন্দ করতো না। আমি শুরু থেকেই নামাজ পড়া পছন্দ করি, ঘরে থাকা পছন্দ করি ও আমাকে এভাবেই রাখছে। যখন আমার বিয়ে হয়, তখন জানতামও না। এমন জুয়া খেলারও ব্যবস্থা ছিল না।

নিজেকে সম্রাটের দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করে শারমিন চৌধুরী বলেন,  প্রথম যাকে বিয়ে করেছিল সেটা ডিভোর্সড হয়ে গেছে। এই বাসাটায়, আমি থাকি এটা সম্রাটের না, আবার সম্রাটেরও। ঢাকা শহরে আমার জানামতে তার বাসা শান্তিনগরে আর এটি। কাকরাইলের ভবনের যে ফ্লোরে তার অফিস সেটি তার নিজস্ব। পুরো ভবনটি তার দখল করা না, আসলে ওর ভবনে ঢুকতে সবাইকে যখন চেক করা শুরু হয়, তখন অনেকেই আর সেখানে ঢুকতে চায়নি। সে কারণে ধীরে ধীরে অফিসটা খালি হয়ে গেছে। আমাদের সম্পর্ক আছে, সেপারেশনও না, মাসে মাসে কথা হয়, আমি মাসে দুই-তিনবার যাই। এখানে আসে না। ও ওপেন হার্ট সার্জারির রোগী তো। সিড়ি বেয়ে ওঠা নিষেধ। আমি মাঝে মধ্যে কাকরাইলে যাই।

ক্যাসিনোর অভিযান শুরু হওয়ার পর আমার সঙ্গে আর কথা বলেনি। ও ভাবতো আমি বোকা, আমি কাউকে বলে দেবো।

আমার মনে হয়েছে ও অন্য লাইনে চলে গেছে। ওর মাথায় একটা বিষয় ছিলো, অবৈধ টাকা সংসারে খরচ করতো না। সংসারের লোক অবৈধ টাকা থেকে খাক সেটা সে চাইতো না। আর দল পালতে, আগের সময় নেই ঘরের ভাত খেয়ে, গরুর দুধ খেয়ে দলের ডাকে আসবে। এখন সময় চেঞ্জ হয়েছে, ছেলেদের টাকা না দিলে মিছিল মিটিংয়ে আসতো না। সে জন্য বিশাল অংকের টাকা লাগতো। খালি মুখে কেউ আসতো না। আমার মনে হয় সে কারণেই ও ক্যাসিনোতে জড়িয়ে পড়ে।

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর