ঋণ পুনঃতফসিলিকরণে রূপালী ব্যাংকের প্রস্তাব ন্যক্কারজনক: টিআইবি
৬ অক্টোবর ২০১৯ ২১:৩১
ঢাকা: ব্যাংকিং খাতে ঋণ পুনঃতফসিলিকরণের বিদ্যমান নীতিমালা অগ্রাহ্য করে বস্ত্র খাতের একটি খেলাপি প্রতিষ্ঠানকে সুবিধা দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রস্তাব দিয়েছে রূপালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ। রূপালী ব্যাংকের এ প্রস্তাবকে ন্যক্কারজনক বলে অভিহিত করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
রোববার (৬ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে সংস্থাটি এই প্রস্তাব নাকচ করে দিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
এছাড়া রূপালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ বাংলাদেশ ব্যাংকে এই ধরনের প্রস্তাব দেওয়ার জন্য তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার নেওয়ার দাবি জানানো হয় ওই বিবৃতিতে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘মাদার টেক্সটাইল সাতবার ঋণ পুনঃতফসিলের সুবিধা পেলেও গত দুই যুগেও ঋণ পরিশোধের কোনো আগ্রহ দেখায়নি। তারপরও রূপালী ব্যাংক পর্ষদ প্রতিষ্ঠানটির ৪শ কোটি টাকা সুদ মওকুফ করে আসল আদায়ে দীর্ঘমেয়াদি (২০৪০ সাল পর্যন্ত) সুযোগ দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে সুপারিশ পাঠিয়েছে।’
‘ঋণ পুনঃতফসিলের জন্য ন্যূনতম অর্থ (মোট ঋণের ৫ ভাগ) এককালীন পরিশোধের যে ব্যাংকিং নিয়ম রয়েছে প্রস্তাবে তাও অগ্রাহ্য করা হয়েছে। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ, বিদ্যমান সব নীতিমালা অগ্রাহ্য করে, এই ধরনের প্রস্তাব দিয়ে কার্যত কায়েমি স্বার্থের কাছে জিম্মি হয়ে গেছে। এই ধরনের প্রস্তাব দেওয়ার আগে তারা ন্যূনতম পেশাদারিত্ব দেখানোর সক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে।’
ড. জামান বলেন, ‘প্রস্তাব নাকচ করে দেওয়ার মধ্যেই বিষয়টি সীমাবদ্ধ রাখা সমীচীন হবে না। বরং এমন বিধিবহির্ভূত প্রস্তাব আসার পেছনের কারণ খতিয়ে দেখতে হবে এবং পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। কোনো যোগসাজশের ঘটনা ঘটে থাকলে বা পরিচালনা পরিষদের উক্ত সুপারিশের পেছনে স্বার্থের দ্বন্দ্ব থাকলে তা চিহ্নিত করে কঠোর প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।’
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, ‘ব্যাংকিং খাত সংস্কারে একটি স্বাধীন কমিশন গঠনের আর কোনো বিকল্প নেই। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতে চাই যে, সরকার পরিস্থিতির গুরুত্ব অনুধাবন করে ব্যাংকিং খাত সংস্কারের জন্য নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে অতি দ্রুত একটি ব্যাংকিং কমিশন গঠন করবেন। যারা বাস্তবতার নিরিখে স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা পেশ করবেন, যা কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও সরকার কায়েমি স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে তা বাস্তবায়ন করবেন।’