Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন রূপ নিল সমাবেশে


১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ১১:০৫

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: খালেদা জিয়ার কারাদণ্ডের প্রতিবাদে ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে বিএনপির পূর্বঘোষিত ‘শান্তিপূর্ণ’ মানববন্ধ শেষ পর্যন্ত রূপ নেয় ‘বিশাল’ সমাবেশে। সোমবার সকাল ১০ টা থেকে বেলা ১২ টা পর্যন্ত জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ কর্মসূচি পালন করে বিএনপি।

টানা দুই ঘণ্টার এ ‘শান্তিপূর্ণ’ কর্মসূচি শেষ হয় দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও নজরুল ইসলাম খানের সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে। তাদের সঙ্গে ছিলে স্থায়ী কমিটির আরো দুই সদস্য মির্জা আব্বাস ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি অব্যহত থাকবে। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমেই খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে আনব। খালেদা জিয়া ছাড়া কোনো নির্বাচন এ দেশে হতে দেওয়া হবে না।’

 

কারাবন্দি খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে পূর্ব ঘোষিত মানববন্ধন কর্মসূচি শুরু হওয়ার কথা ছিল সকাল ১১ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে। কিন্তু সকাল ১০টার পর থেকেই ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে বিএনপির নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা প্রেস ক্লাবের সামনে এসে জড়ো হতে থাকেন।

সকাল সাড়ে ১০ টার মধ্যে সচিবালয়ের পশ্চিম কোণের সড়ক মোড় থেকে হাইকোর্টের সামনের কদম ফোয়ারা পর্যন্ত নেতা-কর্মীতে সয়লাব হয়ে যায়। এ সময় বিঘ্নিত হয় যান চলাচল। দুর্ভোগে পড়েন হাজার হাজার সাধারণ যাত্রী।

সকাল পৌনে ১১ টায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রেস ক্লাবের সামনে এসে রাস্তা বন্ধ করে দাঁড়িয়ে থাকা নেতা-কর্মী, সমর্থকদের সরিয়ে দেন। ব্যানার নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা কর্মীদের দুই হাতে ঠেলে ফুটপথের দিকে নিয়ে যান তিনি। তাকে সহযোগিতা করেন ঢাকা মহানগর বিএনপির বিভিন্ন ইউনিটের শীর্ষ নেতারা। পুলিশ কর্মকর্তারাও এ কাজে সহযোগিতা করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে।

বিজ্ঞাপন

সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানববন্ধনে বিএনপির নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের জমায়েত বাড়তে থাকে। এক সময় তা রূপ নেয় ‘বিশাল’ সমাবেশে। হাজার হাজার নেতা-কর্মীর স্লোগানে স্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে প্রেস ক্লাবের সামনের সড়ক। খালেদা জিয়ার ছবি সম্বলিত ব্যানার, পোস্টার ও ফেস্টুন নিয়ে ‘আমার নেত্রী আমার মা’ জেলে থাকতে দেব না’, ‘জেলের তালা ভাঙ্গব, খালেদা জিয়াকে আনব’ বলে স্লোগান দেন বিএনপির কর্মীরা।

বিএনপি ঘোষিত এ কর্মসূচিতে ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারাও অংশ নেন। তারাও বিএনপি নেতাদের সঙ্গে অবস্থান করেন রাজপথে। খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে স্লোগান দেন।

প্রেস ক্লাবের সামনের পুরো রাস্তা জুড়ে অবস্থান নেন নেতা-কর্মীরা। আর প্রধান ফটকের পশ্চিম পাশের ফুটপাতে অবস্থান নেন বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা।

এ সময় ফখরুলসহ শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে ছবি ও সেলফি তোলার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়েন বিএনপির নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা। প্রচণ্ড চাপে ও গরমে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। পেছনে গিয়ে কিছু সময় চেয়ারে বসে বিশ্রাম নিয়ে আবার কর্মসূচিতে যোগ দেন বিএনপির মহাসচিব।

তার সঙ্গে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, মো. শাহজাহান, বরকত উল্লাহ বুলু, শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, মিজানুর রহমান মিনু, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন প্রমুখ।

বিজ্ঞাপন

জোট নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর ) মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার, প্রেসিডিয়াম সদস্য আহসান হাবীব লিংকন, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) মহাসচিব ডা. রেদোয়ান আহমেদ, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহিম, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এনডিপি) চেয়ারম্যান খন্দকার গোলাম মোর্ত্তজা, এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ন্যাপের মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, ডেমোক্রেটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাঈফুদ্দিন আহমেদ মণি, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক সাঈদ আহমেদ, ইসলামী ঐক্য জোটের আব্দুল করিম প্রমুখ।

বিএনপির কর্মসূচি ঘিরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে প্রেস ক্লাব এলাকায় এপিসি কার, রায়ট কার, জলকামান রাখা হয়। বাড়ানো হয় পুলিশের সদস্য সংখ্যা।

রমনা জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার মারুফ হোসেন সরদার সারাবাংলাকে বলেন, ‘বিএনপি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করবে— এটিই আমাদের প্রত্যাশা। তারা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি শেষে চলে যাবে। যদি এর ব্যতিক্রম হয়, তাহলে পরিস্থিতি বুঝে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশেষ জজ আদালত-৫’র বিচারক ড. আখতারুজ্জামান জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছর এবং সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) কাজী সলিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমানকে ১০ বছর করে কারাদণ্ডাদেশ এবং দুই কোটি ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

রায়ের পর বিএনপি দুইদিনের কর্মসূচি দেয়।  শুক্র ও শনিবার প্রতিবাদ মিছিল করে দলটি। দুইদিনের কর্মসূচি শেষে আবারও তিন দিনের কর্মসূচি দেয়। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে মানববন্ধন, অবস্থান ও অনশন।

দ্বিতীয় দফায় ঘোষিত তিন দিনের নতুন কর্মসূচির অংশ হিসেবে সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে বিএনপি। বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মীর উপস্থিতিতে সেটি সমাবেশে রূপ নেয়।

সারাবাংলা/এজেড/ইউজে/একে

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

উর্মিলার সংসার ভেঙে যাওয়ার কারণ
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:০২

নতুন পরিচয়ে কুসুম সিকদার
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২০:৫৭

সম্পর্কিত খবর