‘দেশে প্রতিবছর ৭০ হাজার মানুষ যক্ষ্মায় মারা যায়’
৭ অক্টোবর ২০১৯ ০৯:৫৮
ঢাকা: বাংলাদেশে প্রতি বছর সাড়ে তিন লাখেরও বেশি মানুষ যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয় এবং ৭০ হাজার এই রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। আর এদের ২০ ভাগের মৃত্যুর কারণ তামাক ব্যবহার। এমন ভয়ঙ্কর তথ্য উঠে এসেছে বেসরকারি সংস্থা ‘আর্ক ফাউন্ডেশন’র গবেষণায়।
রোববার (৬ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে প্রতিষ্ঠানটি তাদের গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
গবেষণায় বলা হয়, বাংলাদেশে যক্ষ্মা আক্রান্ত রোগীদের ১৮ শতাংশই তামাক সেবনকারী। তিনজন পুরুষের মধ্যে একজন তামাক সেবন করে থাকে। তামাক সেবন করতে করতে একসময়ে ফুসফুস আক্রান্ত হয়, সেখান থেকে যক্ষ্মায় রূপ নেয়। প্রতিবেদনে তাই যক্ষ্মা প্রতিরোধে তামাক নিয়ন্ত্রণের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
আর্ক ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. রুমানা হক বলেন, যক্ষ্মা সেবাদানকারীদের মাধ্যমে এ বিষয়ে তথ্য গ্রহণ এবং সহজ কিছু কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে এ ধরনের মৃত্যু এড়ানো সম্ভব।
প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে জানানো হয়, আর্ক ফাউন্ডেশন এই গবেষণা প্রকল্পের আওতায় দেশের চারটি জেলার যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে কর্মরত সরকারি স্বাস্থ্য সেবাদানকারীদের তামাক বর্জনের কৌশল সম্পর্কিত প্রশিক্ষণ দেয়। পরবর্তী সময়ে তারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসা মোট যক্ষ্মা রোগীর মধ্যে শতকরা ২৩ ভাগ ধূমপায়ী হিসেবে শনাক্ত করে। পুরুষদের মধ্যে এই হার ৪০ ভাগ। এ সকল রোগীদের ধূমপান বর্জনে সহায়তা করতে স্বাস্থ্য সেবাদানকারীরা কাউন্সেলিংয়ে সক্ষম হয়েছেন। এ থেকে প্রমাণ হয় যে, রোগীদের তামাক বর্জন করাতে সংক্ষিপ্ত কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে সহায়তা দেওয়ার পদ্ধতিটি কার্যকর এবং বৃহৎ পরিসরে বাস্তবায়নযোগ্য।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য ও সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. সাইদুর রহমান বলেন, ‘যক্ষ্মা রোগের চিকিৎসা নিতে যারা ‘ডটস সেন্টার’-এ আসবে তাদের জন্য তামাক সেবন ত্যাগ করা বাধ্যতামূলক করতে হবে। ছয় মাসের চিকিৎসাকালীন সময়ে তাদের তামাক ছাড়ানো সম্ভব। যক্ষ্মা রোগীদের শতভাগ তামাক মুক্ত রাখতে হবে।’
যক্ষ্মা রোগের চিকিৎসায় বিশেষায়িত যেসব হাসপাতাল রয়েছে সেখানে এই সহায়তা কর্মসূচি থাকা বাধ্যতামূলক করার ওপর জোর দেন তিনি।
জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির লাইন ডিরেক্টর ডা. সামিউল ইসলাম বলেন, ‘সরকার ২০৩৫ সালের মধ্যে যক্ষ্মামুক্ত বাংলাদেশ এবং ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে তামাক নিয়ন্ত্রণ ও তামাক ব্যবহার সংশ্লিষ্ট তথ্য সংযোজন এবং তামাকবর্জনে রোগীদের সহায়তা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’