নবমীর যজ্ঞে বিনাশ হোক যত অশুভ
৭ অক্টোবর ২০১৯ ১৫:২১
‘যেও না নবমী-নিশি, না হইও রে অবসান’ নবমীর দিন এলেই মনে হয়, পূজা তো শেষ। একদিন পরই বিজয়া দশমী! মাকে বিদায় দেবার পালা। ‘বিদায়’ কথাটি মন খারাপ করে দেয়ার মতোই।
নবমী পূজার বিশেষ মাহাত্ম্য আছে। নবমীর পূণ্য তিথিতে অশুভ শক্তির বিনাশ ঘটিয়ে পৃথিবীতে শুভ শক্তির প্রকাশ ঘটান দেবী দুর্গা। নবমী তিথি শুরু হয় সন্ধিপূজা দিয়ে। অষ্টমীর শেষ ২৪ মিনিট আর নবমীর প্রথম ২৪ মিনিট মোট ৪৮ মিনিটে সন্ধিপূজা হয়। মূলত দেবী চামুন্ডার পূজা করা হয় এসময়। এই ৪৮ মিনিটেই দেবী দুর্গা মহিষাসুরকে বধ করেছিলেন। আর রাবণকে বধ করেছিলেন রামচন্দ্র।
রবিবার (৬ অক্টোবর) দুপুর ২ টা ২৬ মিনিট থেকে ৩ টা ১৪ মিনিট পর্যন্ত সন্ধিপূজা অনুষ্ঠিত হয়। অষ্টমীর আনুষ্ঠিকতা শেষে আজ সকাল থেকে নবমীর আমেজ শুরু হয়েছে। ভিড় দেখা গেছে মন্ডপগুলোতে।
নবমীর সূচনাপর্বে সন্ধিপূজা বিশেষভাবে পালিত হয়। একশো আটটি মাটির প্রদীপ জ্বালিয়ে ও একশো আটটি পদ্মফুল দেবীর চরণে নিবেদন করা হয়। পূজা শেষে অঞ্জলি দেওয়া হয়। নবমীর বিশেষত্ব হলো হোমযজ্ঞ অনুষ্ঠান। আঠাশ বা একশো আটটি নিখুঁত বেলপাতা লাগে যজ্ঞের জন্য। বালু দিয়ে যজ্ঞস্থান তৈরি করে তাতে বেলকাঠ সাজিয়ে আগুন জ্বালাতে হয়। বেলপাতাগুলো ঘি এর মধ্যে চুবিয়ে যজ্ঞে দিতে হয়। হোমযজ্ঞের মাধ্যমে অশুভ শক্তির বিনাশ হয়।
আশ্বিনের শারদপ্রাতে শুরু হয়েছিল দেবী পক্ষ। মহালয়া থেকে দেবীপক্ষের সূচনা। দুর্গাপূজার আনন্দ মূলত তখন থেকেই শুরু হয়। শাস্ত্র অনুযায়ী, মহানবমী তিথি অন্যান্য তিথির তুলনায় ‘শুভ’। তাই এই তিথিতে দেবীর আরাধনা করলে পূণ্য লাভ হয়।
পূজা মন্ডপ ঘুরে দেখা গেল, সকাল ১০ টার মধ্যেই নবমী পূজা শেষ হয়েছে। পূজা শেষে অঞ্জলি দিয়েছেন ভক্তরা। গুলশান বনানী সার্বজনীন পূজা ফাউন্ডেশনের সভাপতি শ্রী সুবল চন্দ্র সাহা বলেন, নবমী পূজার অঞ্জলী হয়েছে সকাল সাড়ে ১১ টায়। পূজা শেষে প্রসাদ বিতরণ করা হয়েছে। গুলশান বনানী সার্বজনীন পূজা ফাউন্ডেশনের ১২ বছরে পদার্পন উপলক্ষ্যে এবারের আয়োজনে একটু ভিন্নতা আছে। নিরাপত্তাসহ পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’
পঞ্জিকা অনুযায়ী, আগামীকাল সকাল নয়টা পর্যন্ত থাকবে দশমী তিথি। দেবী দুর্গার বিসর্জন এই সময়েই অনুষ্ঠিত হবে।
ছবি- সুমিত আহমেদ