‘মহাসমস্যা’য় জয়পুরহাটের আমদই মহাবিদ্যালয়
১১ অক্টোবর ২০১৯ ০৮:০২
জয়পুরহাট: জয়পুরহাট সদর উপজেলার আমদই ইউনাইটেড মহাবিদ্যালয়ের নামে সম্পত্তি জালিয়াতি, প্রায় এক যুগ ধরে পরিচালনা কমিটিতে ‘খলিফা’ ভাইদের নিয়ন্ত্রণ, নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত হলেও তার সুরাহা হয়নি, বরং একের পর এক নতুন নতুন অভিযোগে মহাসমস্যায় পড়েছে কলেজটি। তবে অভিযুক্তরা এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলছেন, ‘কলেজে কোনো অনিয়ম হয়নি, হচ্ছেও না।’
জানা যায়, ১৯৯৫ সালে কলেজটির প্রতিষ্ঠাকালে অন্যান্য সম্পত্তির সঙ্গে ‘জমির ভুয়া মালিক’ সেজে কাগজ-পত্র তৈরি করে কলেজের উপাধ্যাক্ষ মিজানুর রহমান খলিফা নিজের আপন চাচার ৭৭ শতাংশ জমি কলেজের নামে দানপত্র করে দেন।
চাচাতো ভাই আনিছুর রহমান খলিফা জানান, তার আপন চাচাতো তিন ভাই কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি আব্দুল ওহাব খলিফা, অধ্যক্ষ ওয়াজেদ পারভেজ খলিফা ও উপাধ্যাক্ষ মিজানুর রহমান খলিফা দীর্ঘ দিন ধরে কলেজটিতে আধিপত্য বিস্তার করে সম্পত্তি দখল, নিয়োগ বাণিজ্যসহ কলেজের বিভিন্ন খাত থেকে প্রচুর পরিমান ‘অবৈধ’ আয় করেছেন। এসব অনিয়মের সঙ্গে প্রতিষ্ঠাকালীন সময়েই তারা আমাদের ৭৭ শতাংশ জমি মিথ্যে কাগজ দেখিয়ে কলেজের নামে করে নিয়েছে।
কলেজ প্রতিষ্ঠার পর থেকে ‘ওই তিন খলিফা ভাই’ কলেজটিতে আধিপত্য বিস্তার করে বিভিন্ন পদে প্রায় জনবল নিয়োগ বাণিজ্যসহ কলেজের বিভিন্ন খাত (ভবন নির্মাণ, সংস্কার ও উন্নয়ন, বিভিন্ন সামগ্রী ও আসবাব ক্রয়) থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন আনিছুর রহমান খলিফা।
এছাড়া অধ্যক্ষ তার অনিয়ম ও দুর্নীতি বহাল রাখতে যোগ্যতা না থাকার পরও নিয়ম বর্হিভূতভাবে আপন বড় ভাই আব্দুল ওহাব খলিফাকে সভাপতি করে কাছের লোকদের নিয়ে কলেজটির পরিচালনা কমিটি তৈরি করেছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
স্থানীয় আমদই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহানুর রহমান শাবু বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ পাওয়া গেছে। ২০০৯ সাল থেকে দীর্ঘ ১০ বছর ধরে একই ব্যক্তিরা কলেজ পরিচালনা কমিটিতে রয়েছে। এ কারণেই সেখানে কোনো জবাবদিহিতা নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘আনিছুর খলিফার অভিযোগের ভিত্তিতে গত ২২ সেপ্টেম্বর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক অধিদফতরের সহকারী পরিচালক খালিদ সাইফুল্লাহ ও একই অধিদফতরের শিক্ষা কর্মকর্তা আল-আমিন সরকারের দুই সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত টিম কলেজে তদন্তে এসেছিলেন। তদন্ত প্রতিবেদন এলেই বিস্তারিত জানা যাবে।’
তবে কলেজের অধ্যক্ষ ওয়াজেদ পারভেজ খলিফা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘কলেজে কোন অনিয়ম হয়নি। আর আপন চাচাতো ভাই মনে করে জমির টাকা প্রমাণ ছাড়াই আনিছুর খলিফাকে আগেই দিয়েছিলাম, এখন এরই মাশুল দিতে হচ্ছে।’
ধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক অধিদফতরের তদন্ত টীমের সদস্য আল আমিন সরকার জানান, ‘অভিযোগের সূত্র ধরে তদন্ত করা হয়েছে। এর সঙ্গে জমিজমার অন্যান্য কাগজ-পত্র দেখার পর এ ব্যাপারে নিশ্চিত করা যাবে।’ এ কারণে তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করতে কিছুটা সময় লাগবে বলেও জানান তিনি।