যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ায় বাড়ি-গাড়ি রয়েছে কাউন্সিলর মিজানের
১১ অক্টোবর ২০১৯ ২২:০০
ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে ও অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে দু’টি বাড়ি এবং বিলাসবহুল গাড়ি রয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩২ নম্বরের কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান মিজান ওরফে পাগলা মিজানের। র্যাবের অভিযানে আটক মিজান অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ থেকেই এসব সম্পদের মালিক হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে পাওয়া গেছে।
শুক্রবার (১১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় মিজানের মোহাম্মদপুরের বাসায় অভিযান শেষে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানিয়েছেন র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম। তিনি বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা কয়েকদিন ধরে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের ৩২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান মিজানকে আটকের চেষ্টা চালাচ্ছিলাম। গ্রেফতার হতে পারেন টের পেয়ে গত দু-তিন দিন আগে ঢাকা থেকে পালিয়ে যান।’
শুক্রবার ভোরে শ্রীমঙ্গলের কলেজ গেইট এলাকার একটি বাসা থেকে তাকে আটক করা হয়। বাসাটি তার বান্ধবীর বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গেছে। আটকের সময় তার কাছ থেকে একটি অবৈধ পিস্তল, চার রাউন্ড গুলি, একটি ম্যাগাজিন ও নগদ দুই লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে প্রথমে মিজানের কাউন্সিলর অফিসে পরে মোহাম্মদপুরের বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয় বলেও জানান এই র্যাব কর্মকর্তা।
সারওয়ার আলম বলেন, ‘বাসা তল্লাশি করে ছয় কোটি ৭৭ লাখ টাকার মূল্যের বিভিন্ন ব্যাংকের চেক, এক কোটি টাকার এফডিআরের কাগজ উদ্ধার করা হয়। এসব টাকার কোনো উৎস তিনি দেখাতে পারেননি। কাউন্সিলর হিসেবে সরকার থেকে সম্মানী বাবদ মাসিক বেতন ছাড়া আমরা তার দৃশ্যত কোন ব্যবসার খোঁজ পাইনি। ১৫ বছর আগে তার ইটভাটার একটি ব্যবসা ছিল কিন্তু এখন সেটিও নেই। দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার জন্য মিজান প্রিমিয়ার ব্যাংক থেকে গত দুইদিনে ৬৮ লাখ টাকা উত্তোলন করেছিল কিন্তু সেই টাকা কোথায় রেখেছেন এখনও আমরা জানতে পারিনি। তদন্তে হয়ত এই জিনিসটি বের হয়ে আসবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘গ্রেফতার মিজানের বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পে মাদক ব্যবসাসহ সুনির্দিষ্ট কিছু অভিযোগ রয়েছে। এরমধ্যে চাঁদাবাজির ছাড়া জমি দখলের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে।
কাউন্সিলর মিজানের বাসায় ৬ কোটি টাকার চেক, ১ কোটি টাকার এফডিআর
তিনি বলেন, কাউন্সিলর মিজানকে যেহেতু অবৈধ অস্ত্রসহ শ্রীমঙ্গল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সেহেতু তার নামে শ্রীমঙ্গল থানায় অস্ত্র আইনে একটি মামলা হবে। এছাড়া আয় বর্হিভূত অবৈধ উপার্জনের কারণে তার বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং আইনে মামলা হবে।’
সারওয়ার আলম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর ৩২ নম্বরের বাড়িতে তাকে হত্যা করার জন্য যে হামলা করা হয়েছিল ১৯৮৯ সালে, সেই ঘটনার সঙ্গে মিজান ও তার ভাইয়ের সংশ্লিষ্ট ছিল। সে ওই মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।’ তারা দুই ভাই এক সময় ফ্রিডম পার্টির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।