Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পানিতেই জীবিকা, তবু সংকট সুপেয় পানির!


১২ অক্টোবর ২০১৯ ০৭:৩৪

সাতক্ষীরা ও সুন্দরবন থেকে ফিরে: ‘চাল থেকে পানি পর্যন্ত সব কিনে খেতে হয় এখানে আমাদের। বন (সুন্দরবন) থেকে এখন আর কাঠও আনতে দেয় না। চুলায় আগুন ধরানোর কাঠও কিনতে হয়। স্বামীর কাজ না থাকলে কখনও শুধু লবণ দিয়ে ভাত খেয়ে দিন কাটাই।’ কথাগুলো বলছিলেন সুন্দরবন লাগোয়া মথুরাপুর জেলেপল্লীর বাসিন্দা পারভীন খাতুন (৪০)।

রাণী দাস নামে এই জেলেপল্লীর আরেক বাসিন্দা বলছিলেন, ‘ভূগর্ভস্থ পানি লবণাক্ত হওয়ায় এখানে তেমন কোনো নলকূপ নেই। আয়লার সময় গ্রামে থাকা পুকুরগুলোতে জলোচ্ছ্বাসের পানি ঢুকে যাওয়ায় এখনো তা নোনা। বর্ষাকালে বৃষ্টির পানি ধরে রাখার চেষ্টা করি। কিন্তু সেই পানি দিয়ে তো আর চলে না। ফলে বাধ্য হয়েই বাজার থেকে খাবার পানি কিনে আনতে হয়।’

সাতক্ষীরার উপকূলীয় এলাকার এ গ্রামটিতে সম্প্রতি এক বিকেলে দেখা গেছে, গৃহিণী ও কিশোরীরা কলসি কাখেঁ পানি সংগ্রহ করে গ্রামে ফিরছেন। শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের এই গ্রামটিতে নারীদের পানি সংগ্রহের এই দৃশ্য নিত্যদিনের। একই অবস্থা দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের উপকূলীয় এলাকার অন্য সব গ্রামেরও। তীব্র পানি সংকটে এলাকাটিতে গড়ে উঠেছে সুপেয় ও বোতলজাত পানির রমরমা ব্যবসাও। যেখানে জেলেদের নুন আনতে পানতা ফুরোনোর মতো অবস্থা সেখানে বছরের পর বছর সুপেয় পানি কিনে খেতে হচ্ছে জেলেপল্লীর বাসিন্দাদের। পানির পেছনে এতে তাদের আয়ের বড় একটি অংশও ব্যয় হচ্ছে।

২০০৯ সালে প্রলয়ঙ্কারী ঘূর্ণিঝড় আয়লার আঘাতের প্রায় এক যুগ পূর্ণ হতে চললেও এলাকাটিতে সুপেয় পানির সংকট এখনও কাটেনি। বরং এলাটিতে সুপেয় ও সাধারণ ব্যবহারযোগ্য পানির জন্য হাহাকার দিনদিন তীব্র হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

স্থানীয় বাসিন্দা সুমন মণ্ডল সারাবাংলাকে বলেন, ‘আগে পুকুরের পানি খেয়ে এই এলাকার মানুষের দিন কাটতো। এখন সেই সুযোগও নেই। ঘূর্ণিঝড় আয়লার পর জলোচ্ছ্বাসের পানিতে পুকুরের পানি নোনা হয়ে গেছে। সবাইকে এখন বাজার থেকে পানি কিনে খেতে হচ্ছে।’

আলেয়া বেগম নামের আরেক নারী বলেন, ‘গ্রামে বিত্তশালীদের কিছু পুকুর রয়েছে। আগে সেখান থেকে পানি সংগ্রহ করা যেত। আয়লার পর এখন আর সেখান থেকেও পানি সংগ্রহ করা যচ্ছে না। পানির পেছনে আমাদের এখন দিনে অন্তত ৫০ টাকা খরচ হচ্ছে।’

মথুরাপুর জেলেপল্লীর অদূরে মুন্সিগঞ্জ এলাকায় সুন্দরবন লাগোয় এক নদীতে দেখা গেল জেলে চিত্ত সরদারকে (৫০)। সঙ্গে ছিলেন তার সহধর্মিণী অনিতা সরদারও। নৌকায় বসে সংগ্রহ করা চিংড়ি ও কাঁকড়া কূলে তুলছিলেন। কথা হলে চিত্ত সরকার সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা পানিতেই থাকি। পানিতেই আমাদের বাস। অথচ আমাদেরকেই পানি কিনে খেতে হয়। মাছ ও কাঁকড়া ধরতে হলেও নৌকায় খাবার পানি নিয়ে যেতে হয়। ঘরেও একই অবস্থা।’

শ্যামনগর উপজেলার প্রায় সব বাজারেই সুপেয় পানির দোকান গড়ে উঠেছে। মথুরাপুর জেলেপল্লীর পাশের হরিনগর বাজারে গড়ে উঠা তেমনই একটি দোকান ‘রিজু পিউর ড্রিংকিং ওয়াটার।’

প্রতিষ্ঠানটির মালিক পিন্টু কুমার মল্লিক সারাবাংলাকে বলেন, ‘পানি বিশুদ্ধ করতে এ যন্ত্র বসাতে আমাদের ছয় থেকে সাড়ে ছয় লাখ টাকা লেগেছে। বর্তমানে এলাকার শতকরা ৮৫ ভাগ মানুষ পানি কিনে খায়। কারণ এখানকার পানি দিয়ে গোসল করলেও চুল উঠে যায়। ১৫ থেকে ২৫ টাকা জারে আমরা পানি বিক্রি করি। প্রতি পরিবারে অন্তত এক জার পানি লাগে।’

নলকূপ দিয়ে তোলা পানি পরিশুদ্ধ করে এসব দোকান থেকে গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে সংগ্রহ করা হয়। তবে বেশিরভাগ গৃহিণীই কাঁধে কলসি কাখেঁ এসব দোকান থেকে পানি সংগ্রহ করে থাকে।

বিজ্ঞাপন

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০০৯ সালে বয়ে যাওয়া প্রলয়ঙ্কারী ঘূর্ণিঝড় আয়লার পর এলাকটিতে সুপেয় পানির সংকট তীব্র হতে থাকে। জলোচ্ছ্বাসের ফলে এলাকার বেশিরভাগ পুকুর লবণাক্ত হয়ে ওঠে। বিকল্প অন্য সব পানির আঁধারও নষ্ট হয়ে যায়। পরবর্তীতে সরকার ও এনজিও সংস্থার পক্ষ থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হলেও তা কাজে আসেনি।

মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের তথ্যমতে, উপকূলীয় এলাকার এ ইউনিয়নটিতে প্রায় ৪৫ হাজার মানুষের বসবাস। ৮ হাজারের উপরে পরিবার রয়েছে এখানে। ইউনিয়নটিতে জেলপল্লীর সংখ্যা ৩। মথুরাপুর জেলেপল্লী, বরোহেটখালী জেলেপল্লী, মুন্সিগঞ্জের বাজার সংলগ্ন পূর্ব ধানখালি জেলেপল্লী। এর মধ্যে মথুরাপুর জেলেপল্লীতে পরিবারের সংখ্যা অন্তত ১৫০। ইউনিয়ন পরিষদের তথ্যমতে, ১৯টি গ্রামের মধ্যে ৫টি গ্রামে সুপেয় পানির ব্যবস্থা রয়েছে। বাকিগুলোতে বিশুদ্ধ পানির সংকট তীব্র।

শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম মোড়ল সারাবাংলাকে বলেন, ‘অঞ্চলটিতে সুপেয় পানির সংকট তীব্র। ২০০৯ সালে আইলার পর সুপেয় পানির সংকট দেখা দেয়। পুকুরগুলোতেও লবণ পানি ঢুকে যায়। সুপেয় পানির যেসব ব্যবস্থা ছিল এখন তার প্রায় সব অকেজো।’

অঞ্চলটির সুপেয় পানির সংকট কাটানো সম্ভব বলে মনে করেন এই ইউপি নেতা। সারাবাংলাকে তিনি বলেন, ‘সুপেয় পানির সংকট কাটাতে এখানে কোনো পরিকল্পিত উন্নয়ন হয়নি। সিটি করপোরেশন এলাকার মতো এখানে পানির ব্যবস্থা করা গেলে পানির সংকট অনেক আগেই দূরীভূত হতো। ঢাকা বা খুলনা শহরে যেভাবে লাইনের মাধ্যমে পানি সরবারহ করা হয় এখানেও সেই ব্যবস্থা করা যেতে পারে।’

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আবদুল্লাহ হারুন চৌধুরী সারাবাংলাকে বলেন, ‘আগে নির্দিষ্ট কিছু জমিতে চিংড়ি ও কাঁকড়া চাষ করা হতো। এখন কিছু মানুষ লোভে পড়ে সব জমিতে চিংড়ি ও কাঁকড়া চাষ করছে। ওই জমিগুলোতে দীর্ঘসময় লবণ পানি জলাবদ্ধ করে রাখায় ওই জমিসহ আশেপাশের জমিগুলোও লবণাক্ত হয়ে উঠছে। ঢালাওভাবে সব জমিতে চিংড়ি ও কাঁকড়া চাষ না করে যেসব জমিত ধান হয় না, সেখানে তা চাষ করা যেতে পারে।

খাবার পানি সংকটে করণীয় বিষয়ে জানতে চাইলে এই অধ্যাপক আরও বলেন, ‘ওই অঞ্চলে দীর্ঘকাল ধরেই পানির উৎস দুটি—বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ও পুকুরের পানি ব্যবহার। খাবার পানির সংকট কাটাতে এ দুটি পদ্ধতি ব্যবহারই হবে প্রধান পন্থা। পানি বিশুদ্ধ বা পরিশুদ্ধকরণের অন্য যেসব পদ্ধতি আছে সেগুলো খুবই ব্যয়বহুল। ফলে এ দুটির বিকল্প হিসেবে তেমন কিছু ভাবা যায় না। সরকারের উচিৎ হবে সরকারি পুকুরগুলো দ্রুত খনন করা।’

খাবার পানির বাণিজ্যিকীকরণ প্রসঙ্গে প্রতিবেশ ও প্রাণবৈচিত্র্য সংরক্ষণ গবেষক পাভেল পার্থ সারাবাংলাকে বলেন, ‘পানির মতো মৌলিক অধিকারের বাণিজ্যিকীকরণ কোনোভাবেই কাম্য নয়। দুযোর্গপ্রবণ অঞ্চলের নিম্নআয়ের মানুষের জন্য তা কোনোভাবেই হতে দেওয়া যায় না।

পানির সংকট বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে এই পরিবেশবিদ বলেন, ‘এটি এমন নয় যে নতুন করে তৈরি হওয়া। অপরিকল্পিত উন্নয়নের ফলাফল হচ্ছে পানি সংকট। এটি আরও জটিল আকার ধারণ করেছে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণ পেতে হলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নদীগুলোকে ‘বোঝা’ জরুরি। নদীগুলোর পানিপ্রবাহ উজান থেকে ভাটি পর্যন্ত কোনোভাবেই বাধাগ্রস্ত করা যাবে না। ওই অঞ্চলের মানুষের পানি ব্যবহারের লোকায়ত কিছু পদ্ধতি রয়েছে ( কনকনা, বৃষ্টির পানি ব্যবহার ও পুকুরের পানি ব্যবহার); এই পদ্ধতিগুলোকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিবেচনা করতে হবে। এবং প্রতিটি ইউনিয়ন বা গ্রামে একটি করে বৃহৎ জলাধার তৈরি করা যেতে পারে, যেখান থেকে গ্রামের মানুষেরা পানি সংগ্রহ করবে। এবং এটিকেই সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি বলে আমি মনে করি।’

সরকারের পরিকল্পনা বিষয়ে জানতে চাইলে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের সাতক্ষীরা অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন,উপকূলীয় অন্যান্য অঞ্চলের মতো এ অঞ্চলের খাবার পানির সংকট কাটাতে সরকার দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে। মূলত বৃষ্টির পানি ধরে রাখা ও পুকুর খননে সরকার জোর দিচ্ছে। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে গত অর্থবছরে এ অঞ্চলে ৫ হাজার রেইন ওয়াটার হারভেস্ট প্ল্যান্ট স্থাপন করা হয়েছে। বর্তমানে ৭ কোটি টাকা ব্যায়ে ৭৩টি পুকুর খননের কাজ চলছে। আগামী শুষ্ক মৌসুমে এসব পুকুর খননের কাজ শেষ হবে।’ তখন খাবার পানির সংকট কিছুটা কমে আসবে বলে প্রত্যাশা এই প্রকৌশলীর।

সরেজমিনে মথুরাপুর জেলেপল্লী

সুন্দরবন লাগোয় এ গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ জেলা পেশার। মাটির তৈরি ঘরগুলো একটির সঙ্গে আরেকটি লাগোয়া। জেলেপল্লীটিতে বিদ্যুতের আলো তেমনভাবে পৌঁছায়নি। রাতের আঁধারে দুই একটি ঘরে আলো দেখা গেলেও সেখানে নারীদের লুডু খেলতে দেখা গেছে। মূল সড়কের পাশের একটি দোকানের অল্প আলোতে জেলেপল্লীর সব বয়সী নারী পুরুষকে খোশগল্পে মেতে থাকতে দেখা যায়। রাতের আধারেও কিছু নারীকে গ্রামের ভেতরের ছোট নদীতে মাছ ধরতে দেখা গেছে।

মথুরাপুর জেলেপল্লীর বাসিন্দা দেবেন সাহা (৫৫) বলছিলেন, আগে সবার ঘরবাড়ি ছিল। আয়লার সময় সব ভেঙে গেছে। এখনও আমরা আগের সেই ঘরবাড়ি করতে পারিনি। রামপদ মন্ডল নামের আরেক জেলে বলছিলেন, মাছ ধরতে না পারলে অভাব অনটন থাকে। বন বিভাগের বাধা থাকায় এখন বছরের অর্ধেক সময় নদীতে মাছ ধরতে পারিনা। কাজ না থাকলে অন্য এলাকায় দিনমজুর হিসেবে কাজ করতে যেতে হয়।

গ্রামের এক গৃহিনী সবিতা সর্দার। সারাবাংলাকে তিনি বলেন, ‘স্বামী জঙ্গলে (সুন্দরবন) কাঁকড়া ধরে। দিনে ১০০ থেকে ৫০০ টাকা আয় হয়। মাসের পনের দিন কাজ করতে পারে আর বাকি পনের দিন বসে থাকতে হয়। পনের দিনের আয় দিয়েই সংসার চলে। এতে বছরের অর্ধেক সময় কাজ থাকে না। তখন পরের বাড়িতে বা ঘেরে কাজ করতে হয়। অনেকে আবার অন্য এলাকায় কাজের জন্য ছুটে যান।’

পারভীন খাতুন নামে গ্রামের আরেক গৃহিনী বলছিলেন, ‘আগে নদী (সুন্দরবন ও গ্রাম লাগোয়া) ছোট ছিল। ভেঙে ভেঙে এত বড় হয়েছে। ৫ থেকে ৬ বছর ধরে ভাঙছে। জঙ্গলে ডাকাত ধরে। ধরলে বিশ থেকে চল্লিশ হাজার টাকা নেয়। অন্যের কাজ থেকে ধার করে সেই টাকা পরিশোধ করতে হয়। এখন পর্যন্ত দুই থেকে তিনবার ধরেছে। সমস্যা হলো জঙ্গলে যখন যেতে পারে না তখন লবণ দিয়ে কোনো রকমে ভাত খেয়ে বেঁচে থাকতে হয়।’

স্থানীয় এক স্কুলের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী শেফালি আক্তার বলেন, ‘মেয়ে বন্ধুদের অনেকেই গাঙ্গে জাল টানে, মাছ ধরে। অনেকের আবার বিয়ে হয়ে গেছে।’

গ্রামটিতে রাতে নৌকায় করে মেয়েদের মাছ ধরতেও দেখা গেছে। অনেকে আবার স্বামীর সঙ্গে মাছ ধরতে সুন্দরবনেও যান। সেখানে সপ্তাহ খানেক স্বামীর সঙ্গেই থাকতে হয় তাদের। মুন্সিগঞ্জের ওই এলাকায় স্বামী চিত্ত সরদারের সঙ্গে অনিতা সরদারকেও কাকড়া সংগ্রহ করতে দেখা গেছে।

মুন্সিগঞ্জের বাসিন্দা চিত্ত সরদার সারাবাংলাকে বলেন, ‘শীতের সময় কাজ থাকে না। তখন ইটভাটায় চলে যেতে হয়। সর্দারই আমাদের অগ্রিম টাকা দেয়। অর্ধেক টাকা দিয়ে দেয় আগে। পরে কাজ শেষে বাকি টাকা দেয়।

তিনি বলেন, ‘জঙ্গলে গেলে জলদুস্য ধরে। দুই তিন বার ধরা পড়েছি। ৫ থেকে ১৫ হাজার টাকায় ছাড়িয়ে আনতে হয়েছে। এখন আর দূরে যাই না। কূলেই থাকি। সর্বশেষ দুই বছর আগে জলদস্যুর দ্বারা আক্রান্ত হই।’

স্থানীয় হরিনগর বাজারে কাঁকড়ার ব্যবসা করেন হাবিবুর (২৩)। সারাবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আমরা প্রতিকেজি কাঁকড়া ৩৫০ টাকা থেকে ৭৫০ টাকা কেজিতে কিনি। একেকজন জেলে ৫ থেকে ৭ কেজি কাঁকড়া আমাদের কাছে বিক্রি করে। তা দিয়ে তাদের সংসার চলে। ব্যবসা করে আমাদেরও সংসার চলে।’ ব্যবসার আগে হাবিবুর এলাকায় ঘুরে বেড়াতেন। এখন কাজ করে সে বেশ সন্তুষ্ট। এক প্রশ্নের উত্তরে এই যুবক জানান, এলাকায় আগে কর্মজীবী তরুণের সংখ্যা খুবই কম ছিল। এখন অনেকেই চাকুরিতে ঢুকছে। ক্রমে সাবলম্বী হওয়া তরুণের সংখ্যাও বাড়ছে।

জেলেপল্লীতে বাল্যবিয়েও

জেলেপল্লীতে বাল্যবিয়ের প্রবণতা বেশি বলে স্থানীয় এনজিও সংস্থাগুলোর ভাষ্য। স্থানীয় এক স্কুলের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী শেফালি আক্তার জানায় তার সহপাঠীদের অনেকেরই বিয়ে হয়ে গেছে।  বাল্য বিয়ে বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে তার ভাষ্য- ‘বাধা কিভাবে দেব? আমাদের কথা কি আর কেউ শুনে? কোন দিন শুনিনি কেউ বাধা দিয়েছে।’ নদীর বাধ ভাঙার পেছনে কূল ঘেষে জাল রাখাকেও দায়ী বলে মনে করেন এই শিক্ষার্থী। ‘জোয়ার আসে আর সবাই জাল টানে। সড়কের পাশের কূল ঘেষে জাল রাখতে অনেকেই অনেকবার বারণ করেছে। কিন্তু কেউ কারো কথা শুনে না।’

খাবার পানি পানি সংকট মথুরাপুর সাতক্ষীরা সুন্দরবন সুপেয় পানি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর