Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘আমাদের কণ্ঠ স্তব্ধ করার ক্ষমতা আপনার নেই, পারবেনও না’


১৩ অক্টোবর ২০১৯ ১৮:১২

ঢাকা:  সরকার কারো কণ্ঠ স্তব্ধ করার ক্ষমতা রাখে না, পারবেও না, এমনটাই বলেছেন গণফোরাম সভাপতি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন। এ কথা বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে তিনি বলেছেন, ‘সময় থাকতে মাথা ঠান্ডা করেন। মনে করবেন না, ‍কিছু পুলিশ, কিছু বন্দুক দিয়ে এই দেশের মানুষকে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে পারবেন।’

রোববার (১৩ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত এক সমাবেশে এ সব কথা বলেন ড. কামাল হোসেন। বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার বিচারের দাবিতে ‘জমায়েত ও শোক র‌্যালি’ শীর্ষক কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছিলেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

সমাবেশ শেষে জাতীয় প্রেস ক্লাব থেকে একটি শোক র‌্যালি বের হয়। র‌্যালিটি  কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের দিকে যেতে চাইলে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে।

জমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি আ স ম আবদুর রব, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতন, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য এস এম আকরাম, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহুমুদ টুকু, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অধ্যাপক আবু সাঈদ, অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরীসহ অন্যরা।

ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘সন্ত্রাসকে আজ প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া হয়েছে। আবরার কী অন্যায় করেছিল? আবরারের সঙ্গে যেটা করা হয়েছে, সেটা সংবিধানের ওপর আঘাত করা, সংবিধানকে অমান্য করা, সংবিধানকে ধ্বংস করা— এটা অপরাধ। এই অপরাধ হল সব চেয়ে গুরুতর অপরাধ।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘আইন ভঙ্গ করা তো অপরাধ বটেই। কিন্তু মৌলিক আইন ভঙ্গ করা মানে সেখানে যে মৌলিক অধিকার আছে, সেটাকে অমান্য করা। এর চেয়ে গুরুতর অপরাধ আর হয় না। এই অপরাধ এরা (সরকার) রীতিমতো করে যাচ্ছে।’

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে ড. কামাল বলেন, ১৬ কোটি মানুষের কণ্ঠকে স্তব্ধ কেউ করতে পারে নাই। আপনিও পারবেন না। সময় থাকতে মাথা ঠাণ্ড করে কুশাসন থেকে দেশকে মুক্ত করেন।’

শেখ হাসিনাকে ‘নাট্যকার!’ বলেও উল্লেখ করেন ড. কামাল হোসেন। তিনি বলেন, ‘আপনি নেত্রী নন— নাট্যকার! সভ্যভাবে সরে যান’ সভ্যভাবে সরে যান।’

‘যথেষ্ট হয়েছে। আর কত? তৃতীয়বার? তৃতীয়বার কে আপনাকে নির্বাচিত করেছে। আমরা তো দেখেছি ২৯ তারিখ রাতের পর ৩০ তারিখ সকালে এসে ‘‘আমি হয়ে গেছে, আগামী পাঁচ বছরের জন্য আমি হয়ে গেছি, আপনাদেরকে ধন্যবাদ দেই,’ বলেন এই নেতা।

শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে তিনি আরও বলেন, ‘আপনি নিজে মিথ্যার শিকার হচ্ছেন। মিথ্যার শিকার যারা হন, তাদের পরিণতি হয় ভয়াবহ। মিথ্যা দিয়ে আপনি কতদিন ভুল পথে চলবেন? আমি স্বাক্ষ্য দেবে, তৃতীয়বার আপনাকে কেউ নির্বাচিত করে নাই’— বলেন ড. কামাল হোসেন।

তিনি বলেন, ‘কাকে ধন্যবাদ দিচ্ছেন? আমরা কেউ সেই প্রতারণার সঙ্গী না। আমরা সেই প্রতারণার ব্যাপারে কোনো ভূমিকা রাখি নাই। সুতরাং আপনার ধন্যবাদ আমরা কেউ গ্রহণ করছি না। সভ্যভাবে আপনি সরে যান। সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করেন। অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশিন গঠন করেন।’

ড. কামাল বলেন, ‘আমি ক্ষমতা চাচ্ছি না। এই মঞ্চের কেউ-ই চাচ্ছে না। ১৬ কোটি মানুষের কাছে মালিকানা ছেড়ে দিন। কুশাসন থেকে মানুষ মুক্ত হোক। সুশাসন প্রতিষ্ঠা হোক। আপনি সরে দাঁড়ান। আপনাকে সরতেই হবে। দেশের প্রতিদিন যে ক্ষতি হচ্ছে, সেই ক্ষতি থেকে বাঁচতে আপনাকে সরে দাঁড়াতেই হবে।’

খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করে তিনি বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য গুরুতরভাবে খারাপ হয়েছে। তার বেঁচে থাকার ব্যাপারে সবাই আশঙ্কা করছে। উনি তিন বার দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। উনি মুক্তি পাবেন না, চিকিৎসা পাবেন না— এটা কল্পনা করা যায় না। আমি উনার মুক্তি দাবি করছি।’

ঐক্যফ্রন্ট জমায়েত ড. কামাল

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর