তুর্কি হামলায় বন্দিশিবির থেকে পালিয়ে যাচ্ছে আইএস জঙ্গিরা
১৩ অক্টোবর ২০১৯ ২১:০১
সিরিয়ায় কুর্দি বিদ্রোহীদের হাতে বন্দি জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) এর জঙ্গিরা পালিয়ে যাচ্ছে। দেশটিতে কুর্দিদের লক্ষ্য করে তুরস্কের সেনা অভিযানের ফলে তারা এ সুযোগ পাচ্ছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলের আইন ইসা নামক একটি ক্যাম্প থেকেই একশো আইএস জঙ্গি তাদের আত্মীয়-স্বজন নিয়ে পালিয়ে গেছে বলে জানায় বিবিসি। সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্স (এসডিএফ) এক বার্তায় অবশ্য এ সংখ্যাকে আটশো বলে দাবি করেছে। আইন ইসা নামক বন্দিশিবিরে আইএস জঙ্গিদের আটক করে রেখেছিল কুর্দি বিদ্রোহীরা।
এসডিএফ এর দাবি, সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে সাতটি বন্দিশিবিরে ১২ হাজারেরও বেশি আইএস জঙ্গি ও তাদের আত্মীয়-স্বজনকে আটক করে রেখেছে তারা। এর মধ্যে চার হাজারের বেশি বিদেশি রয়েছেন।
এদিকে কুর্দিদের মুখপাত্র রেদুর জেলিল বলেন, ‘আইএস জঙ্গিদের বন্দি করে রাখার চেয়ে এখন থেকে নিজেদের বাঁচাতেই মনোযোগ দেবে কুর্দিরা। আইএস জঙ্গিদের দমন করা যারা জরুরী মনে করেন তারাই তাদের দমন করুক।’ এর ফলে আইএস জঙ্গিরা বন্দিশিবির থেকে পালিয়ে আবারও সংগঠিত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে জাতিসংঘ জানিয়েছেন সিরিয়ায় তুরস্কের সেনা অভিযানে ১ লাখ ৩০ হাজারেরও বেশি স্থানীয় নাগরিক শহরগুলো ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। এ সংখ্যা প্রতিদিন আরও বাড়ছে।
রোববার (১৩ অক্টোবর) তুরস্ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অভিযানের পঞ্চম দিন তুরস্ক থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলের শহর তাল আবিয়াদে ঢুকেছে তুর্কি সেনারা। অভিযানের আগে তুরস্ক দাবি করেছিল, তাল আবিয়াদ শহরটিকেই কুর্দিমুক্ত করে নিরাপদ অঞ্চল গড়তে চায় দেশটি।
এর আগে তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলের শহর রাস আইন তুর্কি সেনারা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। তবে এ দাবি কুর্দিরা প্রত্যাখ্যান করে জানিয়েছে এ শহরে তারা ৭৫ জন তুর্কি সেনাকে হত্যা করেছে। তবে তুরস্কের সেনাবাহিনীর অভিযানে চার শতাধিক কুর্দি বিদ্রোহী নিহত হয়েছে বলে দাবি তুর্কি কর্তৃপক্ষের।
এর আগে, সিরিয়ায় কুর্দিদের বিতাড়িত করে শরণার্থীদের জন্য একটি নিরাপদ অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করার কারণ দেখিয়ে ৯ অক্টোবর দেশটির উত্তরাঞ্চলে প্রবেশ করে তুরস্কের সেনারা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সিরিয়ার উত্তরাঞ্চল থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করার পরপরই তুরস্ক এমন উদ্যোগ নেয়।
সিরিয়ায় কুর্দিদের দমন করে একটি নিরাপদ এলাকা তৈরি করাই তাদের লক্ষ্য বলে দাবি করছে তুরস্ক। তুরস্কের এ সেনা অভিযানের নিন্দা জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ইরান, ইসরাইলসহ বিভিন্ন দেশ। সিরিয়ার সেনা অভিযানের নিন্দা জানিয়ে জার্মানি ও ফ্রান্স ইতিমধ্যে তুরস্কে অস্ত্র রফতানি বন্ধ করে দিয়েছে।
২০১১ সালে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এ অঞ্চলে জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট একের পর এক এলাকা দখল করে। আইএস’কে দমন করতে সিরিয়ায় কুর্দি বাহিনীর সাহায্য নেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আরবে কুর্দিরা চতুর্থ বৃহত্তম জাতিগোষ্ঠী।