‘বিচারহীনতার রাজনীতিই আবরার হত্যার মতো নৃশংস ঘটনা বাড়াচ্ছে’
১৪ অক্টোবর ২০১৯ ১৩:৪৯
ঢাকা: দেশের বিচারহীনতার রাজনীতিই আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের মতো নৃশংস ঘটনা বাড়াচ্ছে। প্রতিটি ঘটনার পেছনে রাজনৈতিক শক্তির ইন্ধন থাকায় এসবের বিচার হয় না বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) নারী নেত্রীরা। তারা বলেন, ‘বিশ্বজিৎ হত্যা মামলায় খুনিদের বিচার হলেও সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছে। বরগুনায় প্রকাশ্যে হত্যার পর নয়ন বন্ডদের ধরা হলেও তাদের ইন্ধনদাতারা থাকেন ধরা-ছোঁয়ার বাইরে।’
সোমবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) নারী সেল আয়োজিত এক মানববন্ধন থেকে এসব কথা বলা হয়। আবরার ফাহাদ হত্যার বিচার, ভারতের সঙ্গে অসম চুক্তি বাতিল, যৌন নিপীড়ন ও নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে এ মানববন্ধন করা হয়।
মানববন্ধনে সিপিবির কেন্দ্রীয় সদস্য লক্ষ্মী চক্রবর্তী বলেন, ‘দেশের মধ্যে প্রতিনিয়ত আবরার ফাহাদ হত্যার মতো ঘটনা ঘটেই চলেছে। এসব ঘটনার সত্যিকারের কোনো বিচার আমরা দেখি না। রাজনীতিবিদদের সহযোগিতায়-ছত্রছায়ায় খুনিরা থাকেন। বিচারহীনতার রাজনীতির কারণে অপরাধ কমানো যাচ্ছে না। অন্যদিকে নিজেদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে প্রতিবেশি রাষ্ট্রের সঙ্গে দেশের স্বার্থবিরোধী চুক্তি করছে সরকার। যতই এ ধরনের দেশবিরোধী চক্রান্ত করুন, ক্ষমতা পাকাপোক্ত হবে না। কারণ দেশের মানুষ ফুঁসে উঠেছে, ছাত্রসমাজ জেগে উঠেছে।’
সিপিবি সদস্য অ্যাডভোকেট মাকসুদা আক্তার লাইলি বলেন, ‘একটি ঘটনার পর সেটি ঢাকতে সরকার নিজেরাই অন্য আরেকটি ঘটনার জন্ম দিচ্ছে। দেশবিরোধী চুক্তির বিষয়টি ঢাকতেই সম্রাটকে ধরার ঘটনা সামনে আনা হয়েছে। অথচ জনগণের কাছে সব প্রকাশ হয়ে গেল। যখন আওয়ামী লীগের জনসভায় লাখ লাখ মানুষের খাবারের ব্যবস্থা সম্রাট করে দিত, তখন কেউ তাকে বলেনি অর্থ কোথা থেকে এল, এখন আইওয়াশ করা হচ্ছে।’
সিপিবি সদস্য লুনা নূর বলেন, ‘বুয়েটে এর আগেও একটি হত্যাকাণ্ড ঘটেছিল। সেটির বিচার হয়নি। বিশ্বজিৎ হত্যার বিচার হলেও খুনিরা সাধারণ ক্ষমা পেয়ে গেল। বরগুনায় নয়ন বন্ডদের ধরা হলেও তাদের ইন্ধনদাতাদের ধরা হয়নি আজও। এবার বুয়েটছাত্র দেশের পক্ষে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ায় তাকে খুন করা হলো। এর কারণ, প্রকৃত ছাত্ররাজনীতিকে বাধাগ্রস্ত করে ক্যাসিনোর হাতে রাজনীতিকে তুলে দেওয়া হয়েছে। এ কারণেই বুয়েট থেকে একটি মেধাবী মুখ ঝরে গেল। আমরা এ হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার দাবি জানাই। পাশাপাশি দেশবিরোধী অসম চুক্তি বাতিলের দাবি জানাই।’
মানববন্ধনে নানা স্লোগান দেন দলের নেতাকর্মীরা। এছাড়া আরও বক্তব্য রাখেন সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও নারী সেলের সদস্যরা।