Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

জয়েন্ট কমিশন বৈঠকে আবরার হত্যার প্রসঙ্গ উঠাতে পারে ইইউ


১৬ অক্টোবর ২০১৯ ২২:০৯

ঢাকা: ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে আগামী সোমবার (২১ অক্টোবর) অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে জয়েন্ট কমিশন বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। আসন্ন এই বৈঠকে ঢাকার পক্ষ থেকে বাণিজ্য ক্ষেত্রে জিএসপি প্লাস সুবিধা এবং রোহিঙ্গা ইস্যু গুরুত্ব পাবে। অন্যদিকে ইইউ’র পক্ষ থেকে সুশাসন, মানবাধিকার এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা গুরুত্ব পাবে। এ ছাড়া বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার হত্যাসহ একাধিক বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে ইইউ জানতে চাইতে পারে বলে একাধিক কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে।

বিজ্ঞাপন

ইইউ’র সঙ্গে আগামী সোমবার (২১ অক্টোবর) জয়েন্ট কমিশন বৈঠকের আগে আরও ৩টি সাব কমিটির (বাণিজ্য, মানবাধিকার, উন্নয়ন) বৈঠক আগামী ১৭ ও ২০ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে। সাব কমিটির বৈঠকে আলোচনা করা ইস্যুগুলো থেকেই ২১ তারিখের মূল জয়েন্ট কমিশনের বৈঠকের আলোচ্য সূচি নির্বাচন করা হবে বলে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে।

জয়েন্ট কমিশনের বৈঠকে যোগ দিতে এরই মধ্যে ইইউ’র মহাপরিচালক লইস প্রাটসের নেতৃত্বে প্রায় এক ডজনের একটি প্রতিনিধিদল ঢাকায় অবস্থান করছেন। এরই মধ্যে প্রতিনিধি দলটি শ্রম অধিকার নিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী এবং মানবাধিকার বিষয়ে আইন মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছে। এর আগে, তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন (বিজিএমইএ) এর সভাপতি ড. রুবানা হক ইইউ’র সফররত প্রতিনিধিদের জন্য গত মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) নৈশভোজের আয়োজন করে।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের যুগ্ম-সচিব আলি হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘আগামী ২১ অক্টোবর ইইউ’র সঙ্গে মূল বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে। এই বৈঠকে আমরা জিএসপি প্লাস সুবিধা, রোহিঙ্গা সংকট, জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, ইইউ দেশগুলোতে রপ্তানি আরো বাড়ানোসহ একাধিক বিষয়ে গুরুত্ব দেব।’

তিনি আরও বলেন, ‘ইইউ’র পক্ষ থেকে আসন্ন বৈঠকে সুশাসন, গণতন্ত্র, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, বিচার-বর্হিভূত হত্যাকাণ্ডসহ একাধিক বিষয় উত্থাপন করা হতে পারে।’

বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার হত্যার বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হবে কিনা, জানতে চাইলে যুগ্ম-সচিব আলি হোসেন সারাবাংলা’কে বলেন, ‘আমি এখনো এই বিষয়টি আলোচ্য সূচিতে পাইনি। তবে মত প্রকাশের স্বাধীনতা, বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা করা হবে।’

বিজ্ঞাপন

এদিকে, ঢাকায় নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত রেনজি তিরিং এর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বুধবার (১৬ অক্টোবর) বৈঠক করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। ইইউ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি তুলে ধরেন আইনমন্ত্রী। বৈঠকে ইইউ’র পক্ষ থেকে বলা হয়, বাংলাদেশে শ্রম অধিকার ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা দেখতে চায় বৈশ্বিক জোটটি। এ ছাড়া বৈঠকে বেশ কয়েকটি হত্যা ও হত্যা মামলার প্রসঙ্গও তোলেন ইইউ প্রতিনিধি দলের কর্মকর্তারা।

ওই বৈঠকে আইনমন্ত্রী ইইউ প্রতিনিধিদের জানান, সরকার মানবাধিকার রক্ষায় যথেষ্ট সচেতন এবং তা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পালন করছে। আইনমন্ত্রী এই সময়ে ফেনীর মাদ্রাসা শিক্ষার্থী নুসরাত হত্যার উদাহরণ টেনে ইইউ প্রতিনিধদের বলেন, ‘ওই মামলায় টানা আড়াই মাস ধরে গণমাধ্যম সক্রিয় ছিল। জনগণ বিচারের দাবিতে ফুঁসে উঠেছিল আর সরকারের অঙ্গীকার ছিল সুষ্ঠু বিচার করা। সরকার তা দ্রুত সময়ের মধ্যেই শেষ করতে পেরেছে।’

এ ছাড়া ইইউ প্রতিনিধিদের সঙ্গে মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত বৈঠকে আইনমন্ত্রী বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা বিষয়েও আলোচনা করেন। সরকারের ইচ্ছায় এই হত্যা মামলা কীভাবে দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে এবং সরকার এই হত্যার বিচারের জন্য বদ্ধপরিকর, এই বিষয়টি আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ইইউ প্রতিনিধিদের কাছে তুলে ধরেন।

ঢাকার কূটনীতিকরা জানাচ্ছে, জয়েন্ট কমিশন বৈঠকে ইইউ’র পক্ষ থেকে আবরার হত্যার বিষয় উত্থাপন করা হলে ঢাকা এর কড়া জবাব দেবে। কেননা, বিষয়টি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং এরই মধ্যে যুক্তরাজ্য এবং জাতিসংঘের দূতদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ডেকে এনে তা জানিয়ে দিয়েছে। এ ছাড়া এই হত্যার বিষয়ে সুবিচার নিশ্চিত করতে আন্তরিক এবং যথাযথ পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ট করতে চায় ইইউ। তারা চায় ঢাকার সঙ্গে রাজনৈতিক সম্পর্ক গড়তে এবং সম্পর্কের নতুন মাত্রা দিতে। গত ফেব্রুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত এ বিষয়ে সরকারের সঙ্গে ইইউ’র একাধিক চিঠি চালাচালি হয়েছে।

আবরার হত্যা ইইউ বৈঠক

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর