দায় এড়াতে পরিবেশ অধিদফতরের জরিমানা, দাবি সায়মন বীচ হোটেলের
১৬ অক্টোবর ২০১৯ ২২:২৭
চট্টগ্রাম ব্যুরো: পরিবেশ দূষণের অভিযোগে কক্সবাজারের পাঁচতারকা হোটেল সায়মন বীচ রিসোর্ট লিমিটেডকে জরিমানা সংক্রান্ত সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে নিজেদের বক্তব্য পাঠিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এতে হোটেল কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, পরিবেশ অধিদফতর নিজেদের দায় এড়াতে কক্সবাজারের একমাত্র এসপটিপিযুক্ত এই হোটেলকে জরিমানা করেছে, যা পর্যটন শিল্পের জন্য হুমকি।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ইমেইলে পাঠানো ‘দৃষ্টি আকর্ষণ’ শিরোনামে এই বিজ্ঞপ্তিতে সই করেছেন সায়মন বীচ রিসোর্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুব রহমান রুহেল।
হোটেলটি সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের পরিবারের মালিকানাধীন। মাহবুব রহমান রুহেল সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের সন্তান।
গত সোমবার (১৪ অক্টোবর) পরিবেশ অধিদফতর, চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেইন পরিবেশ দূষণের অভিযোগে এই হোটেলকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা দেওয়ার আদেশ দেন। পরিবেশ অধিদফতরের চট্টগ্রাম অঞ্চলের সহকারী পরিচালক (কারিগরি) মুক্তাদির হাসান জানিয়েছেন, গত ৭ অক্টোবর পরিবেশ অধিদফতরের টিম হোটেলটি পরিদর্শন করে। সেখান থেকে তরল বর্জ্য নিঃসরণের মাধ্যমে পানি ও বায়ূ দূষণের প্রমাণ পাওয়া যায়। এরপর তাদের শুনানিতে ডাকা হয়। শুনানি শেষে জরিমানার আদেশ দেওয়া হয়।
এ সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশের প্রেক্ষিতে সারাবাংলার কাছে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে মাহবুব রহমান রুহেল দাবি করেন, ৭ অক্টোবর পরিবেশ অধিদফতরের কেউ সায়মন বীচ রিসোর্ট লিমিটেডের কারও সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। তরল বর্জ্য সমুদ্রে ফেলার অভিযোগ মনগড়া ও ভিত্তিহীন। তরল বর্জ্য পৌরসভার ড্রেনে যায় পরিশোধনের পরে।
বিজ্ঞপ্তিতে তিনি বলেন, ‘পরিবেশ সুরক্ষায় কক্সবাজারে একমাত্র হোটেল হিসেবে সায়মন বীচ রিসোর্ট ব্যয়বহুল এসটিপি সংযোজন করে। এরপরও নিয়ন্ত্রক সংস্থার আবেগবশবর্তী বিভ্রান্তকর সিদ্ধান্তে যদি ক্ষতির শিকার হতে হয়, তাহলে পরিবেশ অধিদফতরের কার্যক্রম ও দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। তাই আমি এর প্রতিকার চাই। ন্যায়বিচারের স্বার্থে আমরা উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হব।’
মাহবুব রহমানের দাবি, তিন মাস অন্তর অন্তর হোটেলের নিঃসৃত তরল বর্জ্যের গুণগত মান বিশ্লেষণ করতে পরিবেশ অধিদফতরের নিযুক্ত ব্যক্তিকে কায়িক পরিদর্শন করতে হয়। কিন্তু তাদের বারবার তাগিদ দিয়েও আনা যায় না। বছরে চারবার পরিদর্শনের স্থলে তারা পরিদর্শন করেছে মাত্র একবার।
এই গাফেলতির দায় হোটেল কর্তৃপক্ষের কি না— এমন প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ‘নিয়মিত পরিদর্শন না করে দায় এড়ানোর জন্য পরিবেশ অধিদফদতরের নিয়ম মেনে চলা একমাত্র এসটিপিযুক্ত হোটেলকে জরিমানা করা পর্যটন শিল্পের জন্য হুমকি।’
‘আমাদের জানামতে কক্সবাজারের অন্যান্য হোটেলগুলোতে এসটিপি নেই। এসটিপি না থাকা সত্ত্বেও তারা কিভাবে পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র পেল এবং বিনা বাধায় তারা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে, অথচ কক্সবাজারের একমাত্র এসটিপিযুক্ত হোটেলকে কেন জরিমানা করা হলো— এ বিষয়টি বোধগম্য নয়।’
মাহবুব রহমান রুহেল কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পের বিকাশে সায়মন বীচ রিসোর্টের ভূমিকা মাথায় রেখে সংবেদনশীল আচরণ কামনা করেছেন।
প্রতিবেদকের বক্তব্য
পরিবেশ দূষণের অভিযোগে পরিবেশ অধিদফতরের জরিমানা সংক্রান্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার দেওয়া তথ্য ও বক্তব্যের ভিত্তিতে সংবাদটি প্রকাশ হয়েছে। এতে প্রতিবেদকের নিজস্ব কোনো তথ্য বা বক্তব্য নেই।
এসটিপিযুক্ত হোটেল জরিমানা পরিবেশ অধিদফতর হোটেল সায়মন হোটেল সায়মন বীচ রিসোর্ট