চট্টগ্রাম ব্যুরো: জাহাজ ভাঙা শিল্পের জন্য ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে চট্টগ্রামের শিল্পপতি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান শাহীন ১৪১ কোটি ১৩ লাখ ২ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তিনি চট্টগ্রামের মিশম্যাক শিপ ব্রেকিং ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের মালিক।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) মিজানুর রহমান শাহীনের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ ও মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে মামলা করেছেন দুদকের সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরী। একই মামলায় তাকে সহায়তার অভিযোগে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের আগ্রাবাদ শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক নন্দ দুলাল ভট্টাচার্যকেও আসামি করা হয়েছে। দুদক, চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।
মিজানুর রহমান শাহীন চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজার এলাকার মৃত বজলুর রহমানের ছেলে। নন্দ দুলাল ভট্টাচার্য নগরীর নাসিরাবাদ হাউজিং সোসাইটির মৃত আশুতোষ ভট্টাচার্যের ছেলে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এর উপ-পরিচালক লুৎফুল কবীর চন্দন সারাবাংলাকে বলেন, ‘২০১২ সাল এবং তৎপরবর্তী সময়ে মিজানুর রহমান শাহীন মামলার এজাহারে উল্লিখিত পরিমাণ ঋণ নেন। এই অর্থ যে উদ্দেশে নেওয়া হয়েছিল, সেখানে ব্যবহার না করে আত্মসাৎ করে ওই ব্যক্তি। এই তথ্যের ভিত্তিতে ২০১৬ সালে অনুসন্ধানে নামে দুদক টিম। অনুসন্ধানে সত্যতা পাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে।’
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গ্রাহককে ঋণ অনুমোদনের আগে ঋণপত্র খুলে দিয়ে, প্রয়োজনী সিকিউরিটি গ্রহণ না করে এবং বন্ধকি সম্পত্তির অতিরিক্ত মূল্য দেখিয়ে ঋণ পাইয়ে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে সেই ঋণ সঠিকভাবে ব্যবহার হচ্ছে কি-না সেটা মনিটরিং করা হয়নি। অন্যদিকে গ্রাহক ঋণ মঞ্জুরিপত্রের শর্তাবলী সঠিকভাবে প্রতিপালন না করে সেই টাকা অবৈধ স্থানান্তরের মাধ্যমে আত্মসাত করে বলে প্রমাণ পেয়েছে দুদক।
দুদকের উপ-পরিচালক জালাল উদ্দিন, সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরী ও উপ-সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ শিহাব সালামের সমন্বয়ে গঠিত তিন সদস্যের টিম অনুসন্ধানের মাধ্যমে এই অর্থ আত্মসাতের তথ্য উদঘাটন করেন।
মামলার এজাহারে আসামিরা জাল-জালিয়াতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, প্রতারণা ও অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গের মাধ্যমে নিজেরা লাভবান হয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯, ৪২০, ৪৬২ (ক), ৪৬২ (খ), ৪৬৮, ৪৭১ ও ১০৯ ধারা, ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারা এবং ২০১২ সালের মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ৪ (২) ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।