চুয়াডাঙ্গার শিল্পনগরী প্রকল্পে জমি ভরাটের বালু নিয়ে অনিয়ম
১৯ অক্টোবর ২০১৯ ০৯:২৭
চুয়াডাঙ্গা: চুয়াডাঙ্গার বিসিক শিল্পনগরী প্রকল্পে ১০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের জন্য ১৫৮টি প্লট তৈরির কাজ চলছে। আগামী ২০২০ সালের জুন মাসে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা। তবে শুরুতেই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সরকারের কাছ থেকে বালি কিনে প্রকল্প এলাকার জমি ভরাট করার কথা থাকলেও সে নিয়ম মানা হচ্ছে না।
জানা যায়, চুয়াডাঙ্গা বিসিক শিল্পনগরী গড়ে তোলার জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ঝিনাইদহ সড়কের পাশে ডিঙ্গেদহ মানিকডিহি গ্রামে সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ করে ৭৫ বিঘা (২৫ একর) জমি অধিগ্রহণ করা হয়। ২০১৮ সালের ২৪ জুলাই জমিটি হস্তান্তর হয়। শিল্পনগরী গড়ে তোলার জন্য মোট প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে ৪২ কোটি ৮০ লাখ টাকা। দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে ওই মাসেই ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্প এলাকায় একটি কালভার্ট নির্মাণ ও জমিতে বালি ভরাটের কাজ শুরু হয়।
চুয়াডাঙ্গা বিসিক শিল্পনগরী প্রকল্প এলাকা সরেজমিনে দেখা যায়, বালি কিনে এনে জমি ভরাট করার কথা থাকলেও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সেটা মানছে না। পাশের চিত্রা নদী খনন করার পর পরিত্যক্ত বালি এনে জমি ভরাট করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) চুয়াডাঙ্গার ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক ও প্রকল্প পরিচালক মো. সামসুজ্জামান বলেন, ‘ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সরকারিভাবে চিত্রা নদী খননের পরিত্যক্ত বালি নেওয়ার অনুমতিপত্র নিয়ে এসেছে। যে পরিমাণ বালি নদী থেকে তোলা হবে, তার সমপরিমাণ টাকা তারা সরকারি কোষাগারে জমা দেবে। এটার কারণে প্রকল্প বাস্তবায়নে কোনো সমস্যা হবে না।’
তিনি আরও বলেন, এর মধ্যে প্রকল্পের ৪৭ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। তবে প্রশাসনিক ভবন, পাম্প চালকের আবাসন, সীমানা প্রাচীর, রাস্তা নির্মাণ, আরসিসি ড্রেন, পানির পাইপ লাইন, বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন, সোলার প্যানেল, মাল খালাস করা উঠান, পেলা সাইটিং নির্মাণ কাজে এখনো হাত লাগেনি। তবে এ কাজগুলো দ্রুত শুরু হবে।’
তবে নদী থেকে বালু তুলে জমি ভরাটের বিষয়ে ভিন্ন কথা বলেছেন চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার। তিনি বলেন, এ জেলায় কোনো বালুমহাল নেই, যেখান থেকে বালি তুলে ব্যবহার করে সরকারকে রাজস্ব দিতে পারবে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এটা যদি তারা করে থাকে তা খতিয়ে দেখা হবে। সরকারি অনুমোদন নিয়ে রাজস্ব দিয়ে নদী খননের পরিত্যক্ত বালি বিসিক প্রকল্পের জমি ভরাট কাজে ব্যবহার করা বিষয়টি ঠিক নয়। কারণ এ ধরনের কোনো অনুমতি পত্র জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে দেওয়া হয়নি।’ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে নিয়ম মেনেই বিসিক প্রকল্পের কাজ করতে হবে।
এদিকে, শিল্প নগরী প্রকল্পের কাজ ২০২০ সালের ২০ জুন মাসে শেষ হলে এখানে ১০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক মো. সামসুজ্জামান। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ও শিল্প মালিক সমিতির সহযোগিতায় ১০ সদস্যের কমিটির মাধ্যমে বিসিক শিল্প নগরীতে প্লট পাওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত হবে।’ কি কি প্রক্রিয়া মেনে প্লট বরাদ্দ দেওয়া হবে, তার সবকিছুই এ কমিটি নিয়ন্ত্রণ করবে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।