চট্টগ্রামে নিজ বাসায় বাবা-মেয়ের গলাকাটা মরদেহ
১৯ অক্টোবর ২০১৯ ১২:২৪
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীতে একটি বাসায় বাবা ও মেয়ের গলাকাটা মরদেহ পেয়েছে পুলিশ। তাদের গলায় ছুরিঘাকাত করে খুন করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ নিহত ব্যক্তির স্ত্রী, শ্যালিকা ও তার স্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে। পুলিশের সন্দেহ, স্ত্রী এই ঘটনায় জড়িত।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে খবর পেয়ে নগরীর বন্দর থানার নিমতলা মোড়ে জনৈক শাহআলমের ভবনে যায় পুলিশ। সেখানে নিচতলার বাসায় দুজনের রক্তাক্ত মরদেহ পায় পুলিশ।
মৃত দুজন হলেন- মো. আবু তাহের (৩৫) ও তার সাড়ে তিনবছর বয়সী মেয়ে ফাতেমা নুর। তাদের বাড়ি নোয়াখালী জেলার বসুরহাট উপজেলার চরকাঁকড়া গ্রামে। আবু তাহের পেশায় গুদাম শ্রমিক বলে জানিয়েছেন বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকান্ত চক্রবর্তী।
ওসি সুকান্ত সারাবাংলাকে বলেন, ‘তাহেরের স্ত্রী বাসা-বাড়িতে কাজ করেন। শনিবার সকালে সাড়ে আটটার দিকে স্ত্রী কাজে চলে যান। নয়টার দিকে বাসায় এসে দেখেন, ভেতর থেকে দরজা ভেজানো। দরজা খুলে দেখেন তার স্বামীর লাশ বাসার মেঝেতে ও মেয়ের লাশ খাটের উপর পড়ে আছে। তার চিৎকার-চেচাঁমেচিতে লোকজন জড়ো হয়। পরে স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যায়। বিকেলে মরদেহ দুটি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।’
ওসি জানান, বাবা ও মেয়ের গলায় ছুরিকাঘাতের চিহ্ন আছে। এ ছাড়া বাবার মাথায় এবং পেটেও ছুরিকাঘাতের চিহ্ন আছে। বাসার ভেতর থেকে রক্তমাখা একটি ছুরি ও রক্তে ভেজা ওড়না উদ্ধার করা হয়েছে।
ঘটনাস্থলে দেখা গেছে, ভবনের নিচতলার মাঝামাঝিতে একটি কক্ষে স্ত্রী ও মেয়ে নিয়ে থাকতেন আবু তাহের। কক্ষের ভেতর একটি খাট। খাটের এক পাশে রক্তের দাগ আছে। মেঝেতে জমে আছে রক্ত। কক্ষের সুইচ বোর্ড ও বসার টুলেও রক্তের দাগ দেখা গেছে। খাটের নিচে শিশুটির একজোড়া জুতা দেখা গেছে।
পুলিশ ও প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, আবু তাহের ও তার স্ত্রী হাসিনা আক্তারের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। এই ঝগড়ার জেরে হত্যাকাণ্ড হতে পারে বলে ধারণা তাদের।
প্রতিবেশী বিলকিছ বেগম জানান, গত বৃহস্পতিবারও আবু তাহের ও হাসিনার মধ্যে ঝগড়ার শব্দ তারা শুনেছেন। আবু তাহের তাকে গালিগালাজ করছিলেন এবং হাসিনা এর জবাব দিচ্ছিলেন। বিলকিছ এর কারণ জানতে চাইলে হাসিনা জানান, তিনি যে বাসায় কাজ করেন সেখানে তাকে একটি লাল শাড়ি কিনে দিয়েছে। বিষয়টি পছন্দ করেননি আবু তাহের। এ নিয়ে ঝগড়া হচ্ছে।
পারিবারিক অশান্তির তথ্য পাবার কথা জানিয়েছেন ওসি সুকান্ত চক্রবর্তীও। তবে এর জেরে হত্যাকাণ্ড কি-না তা নিশ্চিত নন ওসি। হাসিনা, তার বোন ও স্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদের পর বিস্তারিত জানা যাবে বলে আশা করছেন তিনি।
নগর পুলিশের বন্দর জোনের উপ-কমিশনার হামিদুল আলম সারাবাংলাকে বলেন, ‘আবু তাহেরের পরিবার ও তার শ্যালিকার পরিবার একই ভবনে বসবাস করেন। সেজন্য স্ত্রীর সঙ্গে তাদেরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়েছে। স্ত্রী কিছু তথ্য দিচ্ছেন। আর কিছুটা সময় পেলে হত্যাকাণ্ডের পুরো রহস্য উদঘাটন করতে পারব।’