Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘অনৈতিক সম্পর্ক দেখে ফেলায় মেয়েকে খুন করেন মা, পরে স্বামীকেও’


২০ অক্টোবর ২০১৯ ১৪:৪৬

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীতে একটি বাসা থেকে বাবা ও মেয়ের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধারের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। পুলিশ জানায়, অনৈতিক সম্পর্ক দেখে ফেলায় মা তার প্রেমিককে সঙ্গে নিয়ে নিজের শিশুকন্যাকে খুন করেছেন। একইভাবে ওই মা তার স্বামীকেও খুন করেন।

রোববার (২০ অক্টোবর) সকালে নগরীর দামপাড়ায় সিএমপি কমিশনারের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানিয়েছেন নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) আমেনা বেগম।

আরও পড়ুন- চট্টগ্রামে নিজ বাসায় বাবা-মেয়ের গলাকাটা মরদেহ

পুলিশ অভিযুক্ত হাছিনা বেগম (৩০) ও তার প্রেমিক মাইন উদ্দিনকে (৪৫) গ্রেফতার করেছে। জিজ্ঞাসাবাদে তাদের কাছ থেকে এমন তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন আমেনা বেগম।

সংবাদ সম্মেলনে সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার আমেনা বেগম বলেন, ‘লাশ উদ্ধারের সময় থেকেই হাছিনার আচরণ সন্দেহের জন্ম দেয়। প্রথমে তিনি দাবি করেন, মেয়েকে খুন করে স্বামী নিজে আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু তাকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে সে একপর্যায়ে খুনের কথা স্বীকার করে।’

এর আগে শনিবার (১৯ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে খবর পেয়ে নগরীর বন্দর থানার নিমতলা মোড়ে শাহআলমের ভবনে যায় পুলিশ। সেখানে নিচতলার বাসায় দুজনের রক্তাক্ত মরদেহ পাওয়া যায়।

নিহত দুজন হলেন- মো. আবু তাহের (৩৫) ও তার সাড়ে তিনবছর বয়সী মেয়ে ফাতেমা নুর। তাদের বাড়ি নোয়াখালী জেলার বসুরহাট উপজেলার চরকাঁকড়া গ্রামে। আবু তাহের পেশায় গুদাম শ্রমিক।

এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হাছিনা বেগমকে নিজেদের হেফাজতে নেয় পুলিশ। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাত সাড়ে তিনটার দিকে নোয়াখালী সদর থেকে মাইন উদ্দিনকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানিয়েছেন বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকান্ত চক্রবর্তী।

নিহত আবু তাহেরের বড় ভাই নুর আলম বাদি হয়ে হাছিনাকে আসামি করে বন্দর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

ওসি সুকান্ত চক্রবর্তী সারাবাংলাকে জানান, নিমতলা মোড়ে বুচুইক্যা কলোনিতে শাহআলম ভবনের নিচতলায় একটি কক্ষকে বোর্ড দিয়ে দু’ভাগ করে একদিকে আবু তাহেরের পরিবার, আরেকদিকে মাইন উদ্দিন থাকতেন। আর মাইনুদ্দীনের স্ত্রী তার নোয়াখালীর বাড়িতে থাকায় সে চট্টগ্রামে একা থাকে। মাইনুদ্দীন এসএপিএল কনটেইনার ডিপোতে শ্রমিকদের মাঝি (শ্রমিক সরবরাহকারী) হিসেবে কাজ করেন। আর তাহের ওই কনটেইনার ডিপোসহ বিভিন্ন স্থানে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজ করেন।

তাহের ও হাছিনা দুই জনেরই আগে বিয়ে হয়েছিল। তাহেরের আগের স্ত্রী মারা গেছে। আর হাছিনার সাথে তার আগের স্বামীর ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর পাঁচ বছর আগে পারিবারিকভাবে আবু তাহেরের সাথে বিয়ে হয়।

ওসি সুকান্ত বলেন, ‘শনিবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে তাহের বাসা থেকে বের হয়ে যান। এসময় নিজের কক্ষে মাইন উদ্দিনের সাথে অনৈতিক কাজে লিপ্ত হন হাছিনা। সেটা ফাতেমা দেখে ফেলে এবং বাবাকে বলে দেয়ার কথা জানায়। তখন মাইন উদ্দিন ফাতেমার হাত-পা চেপে ধরে এবং হাছিনা ছুরি দিয়ে তাকে হত্যা করে লাশ খাটের ওপর রেখে দেয়। এরপর দুজন সেখানে বসে থাকেন। কিছুক্ষণ পর বাইরে থেকে আসেন তাহের। ঘরে ঢোকামাত্রই তাকে ঝাপটে ধরে গলায় রশি দিয়ে শ্বাসরোধ এবং পেটে ও মাথায় ছুরিকাঘাতের পাশাপাশি গলা কেটে হত্যা করেন মাইন উদ্দিন ও হাছিনা।’

ওসি জানিয়েছেন, জিজ্ঞাসাবাদে ফাতেমার কাছ থেকে এমন বর্ণনা পেয়েছেন। তবে মাইন উদ্দিনকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এরপর দুজনের তথ্য মিলিয়ে দেখা হবে।

অনৈতিক সম্পর্ক টপ নিউজ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর