মাদক মামলা চলবে ফৌজদারির ৫ (২) ধারায়: হাইকোর্ট
২০ অক্টোবর ২০১৯ ১৯:২৭
ঢাকা: মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৪৪ (১) ধারা অনুসারে ট্রাইব্যুনাল না হওয়া পর্যন্ত ফৌজাদারি কার্যবিধির ৫ (২) ধারা অনুযায়ী জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলা পরিচালনার নির্দেশ দিয়ে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। রোববার (২০ অক্টোবর) বিচারপতি এম, ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
একইসঙ্গে আদালত মাদক মামলার আসামি মো. মাসুদুল হক মাসুদকে স্থায়ী জামিন দিয়েছেন। মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তার জামিন বহাল থাকবে। আদালত বলেছেন, আসামি জামিনের অপব্যবহার করলে তার জামিন বাতিল করা যাবে।
রায়ের পরে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘মাদক মামলার বিচারে ট্রাইব্যুনাল হয়নি। আদালত এ ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করলে আইনমন্ত্রীকে বিষয়টি অবহিত করি। আইনমন্ত্রী জানিয়েছেন, শিগগির পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আজ আদালত বলেছেন, মাদক আইনের ৪৪ (১) ধারা অনুযায়ী ট্রাইব্যুনাল না হওয়া পর্যন্ত ফৌজাদারি কার্যবিধির ৫ (২) ধারা অনুযায়ী অন্যান্য আইনের বিচারের বিধান অনুযায়ী হবে।’
আদালতে আসামি পক্ষে ছিলেন আল ফয়সাল সিদ্দিকী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন- অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন বাপ্পী।
গত ২৫ আগস্ট রাজধানীর বংশালে মাদক মামলার আসামি মাসুদের জামিন আবেদনের ওপর শুনানিকালে মাদক মামলার নতুন আইন নিয়ে গেজেট প্রকাশ না হওয়ার বিষয়টি আদালতের নজরে আসে। মামলার এজাহারে বলা হয়, ইয়াবা ও হেরোইনসহ গতবছর ২৭ ডিসেম্বর মাসুদুল হক মাসুদকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ বিষয়ে বংশাল থানায় করা মামলায় গত ২২ জানুয়ারি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। এরপরই নিম্ন আদালতে জামিন চান আসামি। কিন্তু ওই আদালত জামিনের আবেদন খারিজ করে।
এই আদেশের বিরুদ্ধে জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন মাসুদ। ওই জামিন আবেদনের ওপর শুনানিকালে নথি পর্যালোচনা করেন হাইকোর্ট।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, মাদক মামলাটি আমলে নিয়েছেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত। এরপর তার বিচারের জন্য ঢাকা মহানগর তৃতীয় যুগ্ম দায়রা জজ আদালতে পাঠিয়েছেন। আইনের ব্যতয় ঘটিয়ে মামলাটি বিচারের জন্য তৃতীয় মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাঠানোয় উভয় বিচারকের কাছে ব্যাখ্যা জানতে চান হাইকোর্ট।
এছাড়াও মাদকদ্রব্য অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল স্থাপনের অগ্রগতি ১৩ অক্টোবরের মধ্যে জানাতে আইন ও স্বরাষ্ট্র সচিবকে নির্দেশ দেন। ট্রাইব্যুনাল স্থাপন সংক্রান্ত মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৪৪ ধারা কার্যকরে কি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তাও জানাতে বলা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় আইন মন্ত্রণালয় আদালতকে জানায়, তারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৪৪ (১) ধারায় বলা হয়েছে, ‘এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, প্রয়োজনীয় সংখ্যক মাদকদ্রব্য অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল স্থাপন করতে পারবে। (৪) উপ-ধারায় বলা হয়েছে, এই ধারার অধীন ট্রাইব্যুনাল স্থাপিত না হওয়া পর্যন্ত সরকার সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, সংশ্লিষ্ট জেলার যেকোনো অতিরিক্ত জেলা জজ বা দায়রা জজকে তাহার নিজ দায়িত্বের অতিরিক্ত ট্রাইব্যুনালের দায়িত্ব প্রদান করতে পারবে।’