নাশকতা ঘটাতে গ্রাম থেকে ঢাকায় আসে ছয়-সাত জঙ্গি
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ১৬:১৯ | আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০১৮ ১৭:৪৮
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
ঢাকা : ঢাকায় বড় ধরনের নাশকতা তৈরির লক্ষ্যে ঝিনাইদহ ও অন্যান্য জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে ঢাকায় আসে জামাতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) ছয়-সাতজন সদস্য। গোপন বৈঠক চলাকালে র্যাব অভিযান চালিয়ে সোমবার রাতে ওই জঙ্গি দলের দুইজনকে আটক করেছে। তবে বাকিরা পালিয়ে যায়।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাব-২ এর অধিনায়ক (সিও) লেফটেনেন্ট কর্নেল আনোয়ারুজ্জামান।
তবে নাশকতার ধরন সম্পর্কে র্যাব বিস্তারিত জানায়নি। অধিক তদন্তের স্বার্থে সব তথ্য দেওয়া সম্ভব নয় বলে র্যাবের পক্ষ থেকে বলা জানানো হয়েছে।
র্যাব-২ এর অধিনায়ক (সিও) লেফটেনেন্ট কর্নেল আনোয়ারুজ্জামান বলেন, ‘১২ ফেব্রুয়ারি রাতে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকার সোনালী ব্যাংক মোড় থেকে জেএমবি সদস্য মো. নুরুজ্জামান লাবু (৩৯) ও নাজমুল ইসলাম শাওনকে (২৬) গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারদের কাছ থেকে দুটি চাপাতি, জঙ্গিবাদি বই, ৭২৪ ইউএস ডলার এবং অন্যান্য সামগ্রী জব্দ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা জেএমবির সদস্য বলে স্বীকার করেছেন। বাকি পলাতকদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।’
গ্রেফতারদের জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘নুরুজ্জামান জেএমবি ঝিনাইদহ শাখার আঞ্চলিক কমান্ডার। কখনো সে বাসের হেলপার, ট্রাকের হেলপার, লন্ড্রি দোকানে কাজ করত। কখনো আবার রিকশা চালিয়ে আবার কখনো দিনমজুর হিসেবে জীবিকা নির্বাহ করত।’
নুরুজ্জামান মাদ্রাসার ছাত্র, তবে লেখাপড়া শেষ করতে পারেনি। পরে জামায়াতে ইসলামের রাজনীতিতেও সম্পৃক্ত হয় সে।
২০১৫ সালে সাইফ ওরফে রুবেল ওরফে রবিন ও সাগর ওরফে মারুফ ওরফে সোহাগ ওরফে শিহাবের মাধ্যমে ধর্মীয় উগ্রবাদিতায় উদ্বুদ্ধ হয় নুরুজ্জামান। তারা নুরুজ্জামানকে অন্য ধর্মের লোকদের হত্যা ও আক্রমণ করতে অনুপ্রাণিত করত। তারা ঝিনাইদহ এলাকায় স্কুল মাঠে ও একটি গ্যারেজে সমমনাদের নিয়ে মাঝে মাঝে গোপন বৈঠক করত।
র্যাব জানায়, নুরুজ্জামানকে স্থানীয় জেএমবি’র পক্ষ থেকে একটি অটোরিকশা কিনে দেওয়া হয়। অটোরিকশা চালানোর অজুহাতে সে বিভিন্ন এলাকায় রেকি করত এবং মুসলিম থেকে ধর্মান্তরিত খ্রিস্টানদের অনুসরণ করতেন। মুসলিম থেকে খ্রিস্টান হয়েছেন এমন একজনকে সম্প্রতি অনুসরণ করছিলেন। নুরুজ্জামান বোমা বানাতেও পারদর্শী বলে স্বীকার করেছে।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল আনোয়ারুজ্জামান বলেন, ‘গ্রেফতার নাজমুল পেশায় একজন মেরিন ইঞ্জিনিয়ার। ২০১৫ সালে তার মধ্যে উগ্রবাদী ধর্মীয় মতাদর্শের প্রতি আসক্তি সৃষ্টি হয়। ২০১৫ সালের মার্চ মাসে আবু আব্দুল্লাহ নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে তার পরিচয়ের ফলে তিনি জেএমবিতে সম্পৃক্ত হন। একই বছর আব্দুল্লাহর মাধ্যমে জেএমবির সুলায়মান ওরফে আজাহারের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরে তিনি সুলায়মানের কথামতো উগ্রবাদী মতাদর্শ প্রচার শুরু করেন।’
সারাবাংলা/এসআর/একে