বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতি চায় ইইউ
২১ অক্টোবর ২০১৯ ২০:২৯
ঢাকা: ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে বাণিজ্যিক সুবিধা পাওয়ার বিষয়টি নির্ভর করছে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতির ওপর। মানবাধিকার উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশ-ইইউ যৌথভাবে রোডম্যাপ প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়ন করবে।
ইইউ’র সঙ্গে সোমবার (২১ অক্টোবর) অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে অনুষ্ঠিত যৌথ কমিশনের এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে ঢাকার ইইউ মিশন থেকে পাঠানো বার্তায় জানান হয়, বৈঠকে গণতন্ত্র, মানবাধিকার, শ্রম অধিকার, বাণিজ্য, আইনের শাসন, অবাধ ও নিরপক্ষে নির্বাচন অনুষ্ঠান, বিচার বর্হিভূত হত্যাকাণ্ড, গুমসহ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সকল বিষয়ে আলোচনা করা হয়।
আরও পড়ুন- জয়েন্ট কমিশন বৈঠকে আবরার হত্যার প্রসঙ্গ উঠাতে পারে ইইউ
বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে যৌথ কমিশনের বৈঠকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে জানিয়ে ঢাকার ইইউ মিশন জানিয়েছে, বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং গুম বিষয়ে বৈঠকে ইইউ’র পক্ষ থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হলে বাংলাদেশ পক্ষ থেকে বলা হয়, মানবাধিকার লঙ্ঘন ও আইন অমান্যকারীদের সরকার কোনো ছাড় দিচ্ছে না (জিরো টলারেন্স)। শুধু তাই নয়, আইনশৃঙ্খলায় নিয়োজিত বাহিনীর কোনো সদস্য যদি কোনো আইন বা মানবাধিকার লঙ্ঘন করে, তবে সরকার তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে বৈঠকে ইইউ’র পক্ষ থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিতের জন্য অনুরোধ জানানো হয়। এ বিষয়ে বাংলাদেশ পক্ষ থেকে বলা হয়, মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ব্যবহার করা হচ্ছে না এবং কখনোই ব্যবহার করা হবে না। উন্নয়নের জন্য জাতি-ধর্ম-বর্ণ-লিঙ্গ-বয়স অথবা রাজনৈতিক মতাদর্শ নিয়ে বৈষম্য থাকতে পারে না বলে বৈঠকে দুই পক্ষই একমত প্রকাশ করে।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জিএসপি প্লাস সুবিধা, ইইউ দেশগুলোতে রফতানি আরও বাড়ানোসহ একাধিক বাণিজ্যিক সুবিধা চাওয়া হলে ইইউয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, বাংলাদেশ এখন ইইউ দেশগুলোকে সর্বোচ্চ বাণিজ্যিক সুবিধা পাচ্ছে। ভবিষ্যতেও আরও বাণিজ্যিক সুবিধা পাওয়া যাবে। তবে সুবিধা পাওয়ার বিষয়টি নির্ভর করছে বাংলাদেশর মানবাধকার পরিস্থিতির উন্নতির ওপর।
ঢাকার ইইউ মিশন জানিয়েছে, ভবিষ্যতে ইইউ দেশগুলোতে বাণিজ্যিক সুবিধা পাওয়ার বিষয়টি নির্ভর করছে মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়ন, বিশেষ করে শ্রম অধিকারের বিষয়ে আন্তর্জাতিক মান নিশ্চিত করার ওপর। এরই মধ্যে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক খাতের শ্রম পরিবেশের অনেকটা উন্নতি করেছে। তবে শতভাগ টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে।
যৌথ বৈঠকে রোহিঙ্গা নির্যাতন ও নীপিড়নের সঙ্গে জড়িতদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে উভয় পক্ষই একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়। বাংলাদেশের একাধিক শিবিরে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরের বিষয়েও বৈঠকে আলোচনা করা হয়। বাংলাদেশ পক্ষ থেকে বলা হয়, সরকার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সঙ্গে নিয়ে এবং রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায় রাজি হলে তবেই তাদের ভাসানচরে স্থানান্তর করা হবে।