‘চলন্ত গাড়িতে ডাক্তারকে খুন করে লাশ সড়কে ফেলে ছিনতাইকারীরা’
২২ অক্টোবর ২০১৯ ২১:২৭
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশ থেকে চিকিৎসকের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনার রহস্য উদঘাটনের দাবি করেছে র্যাব। এ ঘটনায় একজনকে গ্রেফতারের পর র্যাব জানিয়েছে, চলন্ত গাড়িতে ওই চিকিৎসককে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে যাত্রীবেশে থাকা ছিনতাইকারীরা। এরপর মরদেহ ফেলে দেওয়া হয় মহাসড়কের পাশে।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) ভোরে চট্টগ্রাম নগরীর স্টেশন রোড থেকে লেগুনা চালক মো. ফারুককে গ্রেফতার করে র্যাব। ফারুক (১৯) সীতাকুণ্ড উপজেলার বাড়বকুণ্ডের আইয়ূব আলীর ছেলে।
গ্রেফতারের পর মঙ্গলবার বিকেলে হত্যার দায় স্বীকার করে ফারুক চট্টগ্রামের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শিপলু কুমার দে’র আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন বলে জানিয়েছে র্যাব।
গত শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) সকালে সীতাকুণ্ড উপজেলার কুমিরা ঘাটঘর এলাকায় মহাসড়কের পাশে নিচুস্থান থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়। প্রথমে পরিচয় পাওয়া না গেলেও পরে সেটি চিকিৎসক মো. শাহ আলমের (৫৫) বলে নিশ্চিত হয় পুলিশ।
র্যাব জানায়, চিকিৎসক শাহ আলম কুমিরায় ‘গরীবের ডাক্তার’ নামে পরিচিত ছিলেন। সৌদি আরবের মদিনা হাসপাতালের চাকরি ছেড়ে দিয়ে তিনি দেশে এসে কুমিরায় হাসপাতাল তৈরি করে রোগীদের সেবা দিতেন।
মরদেহ উদ্ধারের চারদিন পর গ্রেফতার ফারুককে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে র্যাবের চট্টগ্রাম জোনের সহকারী পরিচালক এএসপি কাজী মোহাম্মদ তারেক আজিজ জানান, চিকিৎসক শাহ আলম বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে নিজ চেম্বার থেকে বের হয়ে নগরীর চান্দগাঁওয়ে বাসার উদ্দেশে রওনা দেন। ছোট কুমিরা এলাকায় বিন মনসুর পরিবহন নামে একটি লেগুনায় তিনি ওঠেন।
গাড়িটি কে-বাই এলাকায় গেলে আরও দুইজন ওঠেন লেগুনাটিতে। রয়েল গেইট এলাকায় আসার পর গাড়িতে থাকা অপর চারজন চিকিৎসক শাহ আলমের কাছ থেকে টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এসময় ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে তারা শাহ আলমকে মারধর ও ছুরিকাঘাত করে গাড়ি থেকে লাশ ফেলে দেয় রাস্তায়।
র্যাব কর্মকর্তা তারেক আজিজ জানান, জিজ্ঞাসাবাদে ফারুক জানিয়েছে, রাত সাড়ে ৮টার দিকে সহযোগীরা তাকে বাড়ি থেকে ডেকে নেন। ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করেই তারা মহাসড়কে গাড়ি নিয়ে বের হন। শাহ আলমকে আক্রমণের আগে একই গাড়িতে তারা আরও কয়েকজনের কাছ থেকে টাকাপয়সা হাতিয়ে নেন।
জবানবন্দিতে ফারুক ঘটনায় জড়িত অন্যদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করেছে। তবে গ্রেফতারের স্বার্থে এ বিষয়ে কিছু বলতে রাজি হননি এএসপি তারেক আজিজ।