Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চট্টগ্রামে জোড়া খুনের মামলায় একজনের মৃত্যুদণ্ড


২৩ অক্টোবর ২০১৯ ১৫:৪৮

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীতে চুরির উদ্দেশ্যে বাসায় ঢুকে বৃদ্ধা গৃহকর্ত্রী ও শিশু গৃহকর্মীকে খুনের মামলায় মো. সোলায়মান রায় নামের একজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই মামলার পৃথক ধারায় আদালত তাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড, অনাদায়ে আরও তিন মাসের সাজা দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (২৩ অক্টোবর) চট্টগ্রামের পঞ্চম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ জান্নাতুল ফেরদৌস চৌধুরী এই রায় দিয়েছেন।

রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি অতিরিক্ত মহানগর পিপি তসলিম উদ্দিন চৌধুরী সারাবাংলাকে বলেন, ‘লুন্ঠন ও হত্যার উদ্দেশ্যে দণ্ডবিধির ৩৯৪ ও ৩০২ ধারায় আসামির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ রাষ্ট্রপক্ষ সুষ্পষ্টভাবে প্রমাণ করতে পেরেছে। সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে আদালত আসামিকে ৩৯৪ ধারায় ১০ বছরের কারাদণ্ড অনাদায়ে আরও তিন মাস এবং ৩০২ ধারায় মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। সাজার মেয়াদ আসামির হাজতবাসকালীন সময় থেকে বাদ যাবে বলে রায়ে আদালত উল্লেখ করেছেন।’

দণ্ডিত মো. সোলায়মান রায় ঘোষণার সময় আদালতে হাজির ছিলেন। তাকে আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

খুনের শিকার দুজন হলেন- চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালী থানার পাথরঘাটা বাণ্ডেল বাই লেইনের মৃত অছি মিয়ার স্ত্রী নুরজাহান বেগম (৭০) ও বাসার গৃহপরিচারিকা পপি (৭)।

মামলার নথি পর্যালোচনায় দেখা গেছে, নিজস্ব তিনতলা ভবনের তৃতীয় তলার বাসায় নুরজাহান বেগম তার ছেলে ফারুক হোসেন ও গৃহপরিচারিকা পপিকে নিয়ে থাকতেন। ২০০৯ সালের ১৮ আগস্ট রাত সোয়া ১০ টার নগরীর ফয়সলেক এলাকায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে ফিরে ছেলে ফারুক বাসার সামনের দরজায় বারবার কলিংবেল দিলেও কেউ দরজা খুলছেন না। তিনি পেছনদিকে গিয়ে বাসার আরেকটি দরজা খোলা দেখে সেই প্রবেশপথ দিয়ে বাসায় ঢোকেন। বাসায় ঢুকে লাইট জ্বালানোর পর তিনি মেঝেতে রক্তমাখা অবস্থায় তার মায়ের মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। ভেতরের আরেকটি কক্ষে গিয়ে দেখেন পপির রক্তাক্ত মৃতদেহ পড়ে আছে। এসময় ফারুকের চিৎকারে আশপাশের লোকজন জড়ো হন। তাদের ভাড়াটিয়া সঞ্জু তালুকদার নামে একজন এসময় ফারুককে জানান, ওইদিন বিকেল তিনটার দিকে পাঞ্জাবি পরিহিত বাবরি চুলওয়ালা একজন লোককে তাদের বাসায় বসে ভাত খেতে দেখেছেন।

বিজ্ঞাপন

পরে পুলিশ যখন মৃতদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করছিল, তখন ফারুক দেখতে পান, তার মায়ের গলায় সোনার হার, হাতে সোনার চুরি ও কানে সোনার দুল নেই। সুরতহাল প্রতিবেদনে নুরজাহান বেগমকে শ্বাসরোধ ও জবাই করে এবং পপিকে পেটে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। এ ঘটনায় ফারুক বাদি হয়ে তার মা ও গৃহকর্মীকে খুন করে তিন ভরি আট আনা স্বর্ণালঙ্কার লুটের অভিযোহে কোতোয়ালী থানায় মামলা দায়ের করেন।

ওই মামলায় ২০০৯ সালের ১৯ আগস্ট সোলায়মানকে গ্রেফতারের পর সে আদালতে জবানবন্দি দিয়ে জানায়, ভিক্ষুকের বেশে বাসায় প্রবেশ করে সে দুজনকে খুন করে স্বর্ণালঙ্কার লুট করেছে। সোলায়মানকে অভিযুক্ত করে পুলিশ অভিযোগপত্র দাখিলের পর ২০১০ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর আদালত তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। রাষ্ট্রপক্ষে হাজির করা ১৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য এবং যুক্তিতর্ক গ্রহণ শেষে বুধবার আদালত এ রায় দিয়েছেন।

চট্টগ্রাম মামলার রায় মৃত্যুদণ্ড

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর