Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নুসরাত হত্যা মামলার রায় আজ


২৪ অক্টোবর ২০১৯ ০৪:৫৭

ফেনী: সোনাগাজীর মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলার রায় আজ। এ ঘটনার দেশ-বিদেশের সবার চোখ এখন আদালতের দিকে। গত ৩০ সেপ্টেম্বর ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক বাদী ও বিবাদী পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে মামলার রায় ঘোষণার জন্য বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করেন। অল্প সময়ের মধ্যে রায় দেওয়ায় ফেনীর আদালতে এটি বিরল ঘটনা বলছে আইনজীবীরা।

বিজ্ঞাপন

এদিকে, রায়কে কেন্দ্র করে আদালতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন ফেনীর পুলিশ সুপার খোন্দকার নূরনবী। তিনি বলেন, শুধু আদালত পাড়া নয়। নুসরাতের বাড়িতেও নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়ানো হয়েছে। শহরে কাউকে জড়ো হতে দেওয়া হবে না। যদি কেউ বিশৃঙখলা করতে চায় তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।

নুসরাত হত্যা মামলায় চার্জশিটে অভিযুক্তরা হলেন— সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার সাবেক অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ উদ দৌলা (৫৭), নুর উদ্দিন (২০), শাহাদাত হোসেন শামীম (২০), কাউন্সিলর ও সোনাগাজী পৌর আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আলম ওরফে মোকসুদ কাউন্সিলর (৫০), সাইফুর রহমান মোহাম্মদ জোবায়ের (২১), জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন (১৯), হাফেজ আব্দুল কাদের (২৫), আবছার উদ্দিন (৩৩), কামরুন নাহার মনি (১৯), উম্মে সুলতানা ওরফে পপি (১৯), আব্দুর রহিম শরীফ (২০), ইফতেখার উদ্দিন রানা (২২), ইমরান হোসেন ওরফে মামুন (২২), সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামলীগের সভাপতি ও মাদরাসার সাবেক সহসভাপতি রুহুল আমিন (৫৫), মহিউদ্দিন শাকিল (২০) ও মোহাম্মদ শামীম (২০)।

মামলার বাদী নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান। এ মামলায় ১৬ আসামির মধ্যে ১২ জন ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। প্রায় ৮০৮ পৃষ্ঠার নথিটি গত ২৮ মে ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচার বিভাগীয় হাকিম জাকির হোসাইনের আদালতে দাখিল করেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই)।

মাদরাসা অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার যৌন নির্যাতনের প্রতিবাদ করায় গত ৬ এপ্রিল মাদরাসার ছাদে নিয়ে নুসরাতের শরীরে আগুন দেওয়া হয়। ১০ এপ্রিল চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে মারা যান নুসরাত রাফি। ঘটনার পর ৮ এপ্রিল আটজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত চার জনকে আসামি করে সোনাগাজী থানায় মামলা করেন নুসরাতের ভাই। নুসরাতের মৃত্যুর পর হত্যাচেষ্টা মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তর করা হয়।

বিজ্ঞাপন

শুরুতে থানা পুলিশ তদন্ত শুরু করলেও পরে তা পিবিআইকে হস্তান্তর করা হয়। তদন্তের ৫০ দিনের মাথায় ১৬ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় পিবিআই। এতে উল্লেখ করা হয়, কিলিং মিশনে সরাসরি অংশ নেন পাঁচ জন। জেল থেকে হত্যার নির্দেশ দেন মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা। আর অর্থ জোগনদাতা হিসেবে উঠে আসে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিন ও কাউন্সিলর মাকসুদ আলমের নাম।

এর আগে, দায়িত্বে গাফিলতির অভিযোগে সাময়িক বহিষ্কার করা হয় সোনাগাজির ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন, এসআই ইউসুফ ও এসআই ইকবালকে। প্রত্যাহার করা হয় ফেনীর পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলমকে। গেল ১০ জুন আদালত মামলাটি আমলে নিলে শুরু হয় যুক্তিতর্ক।

২০ জুন অভিযুক্ত ১৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। ২৭ ও ৩০ জুন মামলার বাদী নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসানকে জেরার মধ্যে দিয়ে বিচার কাজ শুরু হয়। এরপর ৯২ সাক্ষীর মধ্যে ৮৭ জন সাক্ষ্য দেন আদালতে। ৩০ সেপ্টেম্বর নুসরাত হত্যা মামলার রায়ের তারিখ ঘোষণা করা হয়।

ফেনীর সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) হাফেজ আহম্মদ বলেন, ‘১৮০ কার্য দিবসের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তির কথা বলা হলেও ৬১তম কার্যদিবসে মামলার কার্যক্রম শেষ হয়। রাষ্ট্রপক্ষ মামলায় আসামিদের অপরাধ প্রমাণ করতে পেরেছে। সারা দেশের মানুষ এ চাঞ্চল্যকর মামলার রায়ের দিকে তাকিয়ে আছেন।’ এসময় তিনি আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রত্যাশা করেন।

নুসরাত জাহান নুসরাত হত্যা মামলার রায়

বিজ্ঞাপন

খেজুর আমদানিতে শুল্ক কমলো
২২ নভেম্বর ২০২৪ ২১:০৮

আরো

সম্পর্কিত খবর