গৃহকর্মী জান্নাতিকে ধর্ষণের পর হত্যা, ২ দিন পর থানায় মামলা
২৪ অক্টোবর ২০১৯ ২১:৫২ | আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৯ ১২:১৩
ঢাকা: রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের মর্গে পড়ে থাকা গৃহকর্মী জান্নাতির (১২) মরদেহ দ্বিতীয় দফায় ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। প্রথম দফার ময়নাতদন্তে কেবল শারীরিক নির্যাতনের তথ্য মিলেছে বলে জানানো হলেও দ্বিতীয় দফায় ময়নাতদন্তে জানা গেছে, হত্যার আগে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছিল। এ ঘটনার দুই দিন পর মোহাম্মদপুর থানায় মামলা হয়েছে। মামলায় জান্নাতির গৃহকর্ত্রী রোকসানা পারভিনকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ। তবে গৃহকর্তা পলাতক রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) বিকেলে মোহাম্মদপুর থানায় ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে গৃহকর্তা ও গৃহকর্ত্রীকে আসামি করে মামলা দায়ের করে পুলিশ। সন্ধ্যায় মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জি জি বিশ্বাস সারাবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে তিনি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা একই থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য অনুরোধ করেন।
আরও পড়ুন- মর্গে গৃহকর্মীর মরদেহ, তথ্য দিতে গড়িমসি পুলিশের
জানতে চাইলে এসআই মিজানুর সারাবাংলাকে বলেন, জান্নাতি ধর্ষণের শিকার হয়েছিল, তা বুধবারের (২৩ অক্টোবর) প্রথম দফার ময়নাতদন্ত থেকে জানা যায়নি। মৃত্যুর কারণ জানতে চাইলে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগ ফের তার মরদেহের ময়নাতদন্ত করেন। এতে জানা যায়, জান্নাতি ধর্ষণের শিকার হয়েছিল। এরপর থানায় মামলা হয়। সেই মামলায় গৃহকর্ত্রী রোকসানাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
এসআই মিজানুর আরও বলেন, রোকসানা পারভিন মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) রাত ১১টার দিকে জান্নাতিকে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন। সেখানে জান্নাতিকে মৃত ঘোষণা করলে মৃতদেহ রেখে চলে যান তিনি। জান্নাতির মরদেহ বুধবার মর্গে নেওয়া হলে রোকসানাকে থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদেও রোকসানা ধর্ষণের বিষয়টি বলেননি। বরং তিনি বলেছেন, জান্নাতি আগের দিন বিকেলের দিকে ঘুমিয়েছিল। রাত ১০টার দিকে তার কোনো সাড়াশব্দ না পেলে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
রোকসানা পারভিন বুধবার সারাবাংলাকে বলেছিলেন, জান্নাতির মৃগী রোগ ছিল। মাঝে মধ্যেই মৃগী রোগ উঠত, ভালো হলে আবার কাজ করত। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সে তার রুমে ঘুমিয়ে যায়। রাত ১০টার দিকে গিয়ে দেখতে পাই, তার এই অবস্থা। পরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
জান্নাতির বিষয়ে জানতে চাইলে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রভাষক ডা. এ কে এম মাইনুদ্দিন বুধবার সারাবাংলাকে বলেছিলেন, জান্নাতির শরীরে নির্যাতনের অনেক চিহ্ন পাওয়া গেছে। মৃত্যুর কারণ জানতে ভিসেরা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
তবে বৃহস্পতিবার ডা. মাইনুদ্দিন সারাবাংলাকে বলেন, গতকাল (বুধবার) ময়নাতদন্তে ধর্ষণের আলামত পাওয়া না গেলেও আজ ধর্ষণের প্রমাণ পাওয়া গেছে। ধর্ষণের পর তাকে গলাটিপে হত্যা করা হয়েছে। শরীরের বিভিন্ন স্থানেও নির্যাতনের দাগ রয়েছে। পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তারা এখন ব্যবস্থা নেবে।
জান্নাতির বাড়ি বগুড়া জেলার গাবতলী উপজেলার তেলেআটা গ্রামে। তার পরিবারের কারও সঙ্গে এখনো যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
গৃহকর্তা পলাতক গৃহকর্ত্রী রোকসানা পারভিন গৃহকর্মী জান্নাতি দুই দিন পর মামলা ধর্ষণ ধর্ষণের পর হত্যা