‘মেননের বক্তব্যের পর উচিত ছিল সংসদ ভেঙে দেওয়া’
২৬ অক্টোবর ২০১৯ ১৫:১২
ঢাকা: ক্ষমতাসীন জোটের অন্যতম শরিক বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননের বক্তব্যের পর পরই সংসদ ভেঙে দেওয়া উচিত ছিল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত আইনজীবী সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ‘মেনন একটা সত্য কথা বলেছেন। অনেক দেরি করে, পাঁচ বছর ক্ষমতায় থেকে, আরাম-আয়েশে থেকে তারপর তিনি সত্য কথা বলেছেন। সেজন্য তাকে ধন্যবাদ জানাই। তিনি যা বলেছেন, সেটা আমরাও বলে আসিছ।’
২৯ ডিসেম্বর রাতে সিভিলিয়ান ক্যু করে সরকার ক্ষমতা দখল করেছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘এই সরকারের কোনো নৈতিক বা সাংবিধানিক অধিকার নেই রাষ্ট্র পরিচালনা করার। সুতরাং মেননের এই বক্তব্যের পরে সরকারের উচিত ছিল অবিলম্বে সংসদ ভেঙে দিয়ে নতুন নির্বাচনের ব্যবস্থা করা।’
‘আমরা জানি- একটি সুষ্ঠু, অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে আবার গণতন্ত্র ফিরে আসবে, সুশাসন ফিরে আসবে, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ফিরে আসবে এবং একটি নিরপেক্ষ প্রশাসন প্রতিষ্ঠিত হবে। পুলিশ এবং র্যাব— যাদেরকে রাজনৈতিক কারণে ব্যবহার করা হচ্ছে, তাদেরকে আবার আইনশৃঙ্খলা কাজে ব্যবহার করা যাবে। আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে। তার মুক্তির জন্য কারও কাছে দেন-দরকার করার দরকার হবে না’— বলেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ।
তিনি বলেন, ‘আদালত বেগম জিয়ার জামিন দেবে না। কারণ, সরকার চায় না বলেই তার জামিন হচ্ছে না। তার জামিন আইনের মাধ্যমে সম্ভব হবে বলে আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি না। কারণ, রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে আজ এক বছর আট মাস তার জামিন হয় না। তার মুক্তির একমাত্র পথ হল রাজপথ। যদি আমরা আন্দোলন করি, সেই আন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে কারামুক্ত করতে পারব। দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে পারব।’
২০১৯ সাল সরকারের জন্য ব্যাডলাক মন্তব্য করে মওদুদ বলেন, ‘জনগণকে ফাঁকি দিয়ে রাতের বেলায় ভোট চুরি করে ক্ষমতায় আসছে। বিচার বলে তো একটা জিনিস আছে। ২০১৯ সালটা শুরু হয়েছে নুসরাত হত্যাকাণ্ড দিয়ে। তারপর ছাত্রলীগের সেই টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি। যুবলীগের খালেদ, শামীম, সম্রাট। এ রকম কত সম্রাট, কত শামীম, কত খালেদ যে যুবলীগে এখনও আছে, সেটা আমরা আন্দাজ করতে পারি।’
‘তাই যতই বলেন না কেন, দুর্নীতিবাজদের বিচার করবেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে শুদ্ধি অভিযান করবেন- ঠু লেইট। টেন ইয়ার্স ঠু লেইট। কারণ, দশ বছর আপনারা কিছু করেন নাই। এখন দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছেন, শুদ্ধি অভিযান চালাচ্ছেন। এতে করে কোনো লাভ হবে না। আপনারা দুর্নীতি দূর করতে পারবেন না’— বলেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ।
গণতন্ত্র ও খালেদা জিয়া মুক্তি আইনজীবী আন্দোলনের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকারের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ঢাকা বার আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, চেয়ারপারসনের উদেষ্টা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আবদুর রকিব, বিএনপির নির্বাহী সদস্য অ্যাডভোকেট আবেদ রাজা প্রমুখ।