সম্মেলন ঘিরে চাঙ্গা কৃষক লীগ
২৭ অক্টোবর ২০১৯ ১৪:০৫
ঢাকা: প্রায় ৮ বছর পর হতে যাওয়া এই সম্মেলনকে ঘিরে বেশ সক্রিয় সংগঠনের নেতাকর্মীরা। সংগঠনে দেখা দিয়েছে চাঙ্গাভাব। বিগত কমিটিতে সংগঠনের যে ভঙ্গদশা ছিল, সম্মেলনের মধ্য দিয়ে তা থেকে বেরিয়ে এসে কৃষক লীগ শক্তিশালী হবে- এমনটাই প্রত্যাশা করছেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। নেতাকর্মীদের আরও প্রত্যাশা, আগামী সম্মেলনের মাধ্যমে যোগ্য নেতৃত্ব উঠে আসবে। যার মধ্য দিয়ে সত্যিকারে কৃষকের জন্য কাজ করবে কৃষক লীগ। এ ছাড়া স্বচ্ছ, সৎ ও ক্লিন ইমেজের নেতারা নেতৃত্বে উঠে আসবে এমনটিই আশা তাদের।
দলীয় দিবস পালনভিত্তিক কিছু কর্মসূচি থাকলেও কৃষকদের পাশে থেকে জোরালো কোনো কর্মসূচি দিতে দেখা যায়নি এই সংগঠনটিকে। কৃষক লীগ সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ ২০১২ সালের ১৯ জুলাই সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সম্মেলন হয়। তিন বছরের কমিটি চলে প্রায় প্রায় ৮ বছর। শুধু কেন্দ্রীয় কমিটি নয়, জেলা পর্যায়ের কমিটিগুলোও বিভিন্ন কারণে ঝিমিয়ে পড়েছে। এসব কারণে কৃষক লীগের কর্মকাণ্ডেও অনেকটা ঝিমুনি ভাব আসে। এ জন্য সারা দেশে ধানের দাম কম হওয়ার পরও তেমন কোনো কর্মসূচি ছিল না কৃষক লীগের। সাংগঠনিক গতিহীনতার জন্যই এমনটা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন এক কেন্দ্রীয় নেতা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই নেতা বলেন, ‘আমরা সংগঠনের অনেক কাজ করেছি। বর্তমান কমিটির আমলে সংগঠন গতি পায়নি, এটা সত্য। বর্তমান কমিটির শীর্ষ ২ নেতৃত্বের কারণে কিছুটা এমন হয়েছে।’
সংগঠন সূত্রে জানা গেছে, কৃষক লীগে প্রায় ৩৫ জনের মতো আইনজীবী রয়েছেন। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক রেজা আইনজীবী হওয়ার কারণেই সংগঠনে আইনজীবীদের একটি বলয় তৈরি হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
কৃষক লীগে নেতৃত্বে পেতে আলোচনায় যারা
আগামী ৬ নভেম্বর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কৃষক লীগের জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। কৃষক লীগের বর্তমান সভাপতি মোতাহার হোসেন মোল্লা এবং সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক রেজা আগামী কমিটিতেও নেতৃত্বে আসতে চান। সর্বশেষ সম্মেলনের আগে বর্তমান সভাপতি মোতাহার হোসেন মোল্লা এই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন, আর সামসুল হক রেজা ছিলেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তবে সংগঠনকে সচল করতে না পারার অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। এ জন্য তাদের বিদায় নেয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সামসুল হক রেজা বলেন, ‘নেত্রীর ইচ্ছায় আমরা নেতৃত্ব দিচ্ছি, আমাকে আবার নেত্রী দায়িত্ব দিলে পালন করব।’
তবে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি পদে আলোচনায় রয়েছেন কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ওমর ফারুক, সহ-সভাপতি শরীফ আশরাফ হোসেন, সহ-সভাপতি কৃষিবিদ বদিউজ্জামান বাদশা, সহ-সভাপতি শেখ মো. জাহাঙ্গীর আলম।
কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সমীর চন্দ্র, সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক ছাত্র নেতা বিশ্বনাথ সরকার বিটু, সাংগঠনিক সম্পাদক কৃষিবিদ সাখাওয়াত হোসেন সুইট, সাংগঠানক সম্পাদক আসাদুজ্জামান বিপ্লব, সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক গাজী জসিম উদ্দিন। এ ছাড়া কৃষক লীগের নেতা কাজী জসিম, আতিকুল হক আতিক এর নাম শোনা যাচ্ছে।
আগামী সম্মেলনে কেমন নেতৃত্ব চান জানতে চাইলে কৃষক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিশ্বনাথ সরকার বিটু বলেন, ‘আমরা চাই, আমাদের নেত্রী ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেমন নেতৃত্ব চান তেমন। স্বচ্ছ, সৎ ও যোগ্য কৃষক নেতা। যারা ক্লিন ইমেজের নেতা হবে। তবে আমাদের নেত্রী যাকেই সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বানাবেন তাদের মাধ্যমেই আমরা সারা বাংলাদেশে কৃষকদের সংগঠিত করতে কাজ করে যাব।’
কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সুইট বলেন, ‘সম্মেলন হলে নেতৃত্বের পরিবর্তন আসবে এমনটাই স্বাভাবিক। তা না হলে সম্মেলনের তো কোনো প্রয়োজন নেই। তবে আমাদের নেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাকে নেতৃত্বে নিয়ে আসবেন সেটাই চূড়ান্ত। এ জন্য নেতৃত্বে কারা আসবেন এটা নেত্রীর একক সিদ্ধান্ত।’
সম্মেলনের কতজন কাউন্সিলর থাকছে জানতে চাইলে সাধারণ সম্পাদক সামসুল হক রেজো বলেন, ‘আমাদের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী জেলার জনসংখার অনুপাতে প্রতি ২০ হাজারে একজন করে আমাদের কাউন্সিলর আসবে। সেই হিসেবে ১০ হাজারের মত কাউন্সিলর হওয়ার কথা রয়েছে। তবে ডেলিগেটের কোনো হিসেবে নেই। সবাই আসতে পারবে।’