ঢাকা: বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স করপোরেশন লিমিটেড (বিআইএফসি) এর আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রতিষ্ঠানটির সাবেক চেয়ারম্যান ও বিকল্পধারা বাংলাদেশের মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান।
সোমবার (২৮ অক্টোবর) দুদকের শুনানি শেষে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
এ সময় মান্নান বলেন, ‘বিআইএফসির অভিযোগ সত্য নয়। আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে সেগুলোর বিষয়ে আমার স্বপক্ষে আমি কথা বলেছি। আমি আবারও বলছি আমি নির্দোষ।’
এদিকে, চলতি বছরের ৮ আগস্ট ১৩ জনকে আসামী করে মামলা করে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ দুটি মামলা দুটি করেন সংস্থার উপপরিচালক এস এম সাহিদুর রহমান।
মামলার এজাহারে জানা যায়, ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স করপোরেশন লিমিটেড (বিআইএফসি) থেকে দুটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রায় ৪৩ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়। আর সেই মামলায় ১৩ জনের বিরুদ্ধে প্রতারণা, ক্ষমতার অপব্যবহার ও অপরাধমূলক অসদাচরণের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়। মামলায় বিআইএফসির সাবেক চেয়ারম্যান ও বিকল্পধারা বাংলাদেশের মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান ১ নম্বর আসামি ছিলেন। সেই মামলার শুনানী হলো আজ সোমবার।
মেজর মান্নানের শুনানীর সময় দুদক চেয়ারম্যান এবং দুই কমিশনার উপস্থিত ছিলেন। অর্থাৎ পূর্ণ কমিশনের সামনে তার শুনানী হয়।
এজাহারে আরও বলা হয়, ডি আফরোজ সোয়েটার ইন্ডাস্ট্রিজের নামে দুটি ঋণচুক্তির আওতায় বোর্ড সভায় অনুমোদনের বাইরে অতিরিক্ত অর্থসহ নেওয়া ঋণের মধ্যে ২৮ কোটি ৮৪ লাখ ৩৫ হাজার ২৯৪ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির অনুকূলে মঞ্জুরি করা ৪৫ লাখ টাকা ঋণের বিপরীতে কোনো অনুমোদন ছাড়াই বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন চেক এবং পে-অর্ডারের মাধ্যমে অতিরিক্ত ৬১ কোটি ৩৯ লাখ ৯৬ হাজার ৫৬৭ টাকা অবমুক্ত করা হয়। এর মধ্যে কিছু অর্থ পরিশোধ করা হয়। বাকিটা এখন পর্যন্ত পরিশোধ করা হয়নি।
দুদক অনুসন্ধানের সময় দেখেছে, ডি আফরোজের নামে জালিয়াতির মাধ্যমে বরাদ্দ অতিরিক্ত টাকার ইস্যু করা চেকের অধিকাংশ টাকাই মেজর (অব.) মান্নানের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গেছে। এর মাধ্যমে দুদক বলছে, এই জালিয়াতির প্রধান সুবিধাভোগী মেজর মান্নান এবং তিনি নিজেই এই অপরাধের সঙ্গে সরাসরি জড়িত।
বিআইএফসি থেকে বিপুল পরিমাণের ঋণ অনিয়মের ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদের সাবেক চেয়ারম্যান মেজর (অব.) আবদুল মান্নানের সম্পৃক্ততা পায় বাংলাদেশ ব্যাংক। এ কারণে ২০১৫ সালের শেষ দিকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে দুদক ও সিআইডিকে চিঠি দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সেই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৬ সালে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। আর সর্বশেষ আগস্টে মামলা করে কমিশন।