দেশের ১৩ জেলায় ম্যালেরিয়ার অস্তিত্ব আছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
২৮ অক্টোবর ২০১৯ ২৩:০৪
ঢাকা: স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, দেশের ১৩ টি জেলায় ম্যালেরিয়ার অস্তিত্ব আছে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ২০৩০ সালের মধ্যে দেশকে ম্যালেরিয়ামুক্ত ঘোষণা করতে বর্তমান সরকার বদ্ধপরিকর বলেও জানান তিনি। সোমবার (২৮ অক্টোবর) রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার কালের কণ্ঠ কনফারেন্স রুমে ‘ম্যালেরিয়া নির্মূলে অগ্রগতি ও ভবিষ্যৎ করনীয়’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ সব কথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে মাত্র ৭ হাজারের মতো ম্যালেরিয়া রোগী আছে। যা ২০১০ সালের তুলনায় ৮২ শতাংশ কম এবং ম্যালেরিয়া রোগে মৃত্যুর হার ২০১০ সালের তুলনায় ৪৮ শতাংশ কম।
তিনি আরও বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে ৫১ টি জেলা ম্যালেরিয়ামুক্ত হবে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে ম্যালেরিয়ামুক্ত ঘোষণা করা হবে। বর্তমানে মাঠ পর্যায়ে সরকারি চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়েছে ৯২ শতাংশ মানুষেকে যা ২০১০ সালের তুলনায় ৮৫ শতাংশ বেশি।
দেশের স্বাস্থ্যসেবাকে বিশ্বমানের উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। অন্যান্য খাতের মতো দেশের স্বাস্থ্যখাত এখন বিশ্বমানের। এই খাতে আমাদের অনেক অগ্রগতি হবে হয়েছে। আর তাই এবার আমাদের প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পুরষ্কার পেয়েছেন। এর পেছনে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মাঠপর্যায়ের কর্মী থেকে শুরু করে সবারই অবদান রয়েছে।
তিনি বলেন, পোলিও, টিটেনাস নির্মূল হয়েছে। ডায়রিয়া ও কলেরা নিয়ন্ত্রণে আছে। এছাড়াও অনেক রোগ যেগুলো আতংক ছড়াতো যেমন যক্ষ্মা এখনো থাকলেও তা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছি। এই মুহূর্তে আমাদের বর্তমান সমস্যা নন কমিউনিকেবল ডিজিজ। হৃদরোগ, কিডনী, ক্যান্সারের মতো বিভিন্ন রোগ বেড়ে যাচ্ছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশে ডেঙ্গু রোগের বিষয়ে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিশ্বে মানবজাতির অনেক বড় বড় শত্রু আছে। কিছু ছোট আকারের শত্রুও আছে যেমন মশা। এই মশার কারণে এই পৃথিবীতে যত মানুষ মারা গেছে অন্য কোনো কারণে এতো মানুষ মারা যায় নি। কিছুদিন আগেও ডেঙ্গুর কারণে ফিলিপাইনে অনেক লোক মারা গেছে। সিঙ্গাপুরের মতো পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন দেশেও ডেঙ্গু দেখা গেছে। ভারত, শ্রীলংকা সহ অন্যান্য দেশেও ডেঙ্গু দেখা গেছে। আমরা গর্বের সঙ্গে বলতে পারি আমাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রত্যেক পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী থেকে শুরু করে চিকিৎসক, নার্স ও আমাদের দেশের মিডিয়ার সকলেই যে পরিশ্রম করেছেন তার কারণে আমরা বিশাল সফলতা অর্জন করেছি ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য। আমাদের দেশেও প্রায় ১০০ এর অধিক মানুষ মারা গেছে ডেঙ্গুতে যার জন্য আমি অত্যন্ত দুঃখিত। কিন্তু অন্যান্য দেশে মৃত্যুর হার অনেক বেশি ছিল। আমাদের এখানে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যেভাবে ডেঙ্গু মোকাবিলায় দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে সে হিসেবে আমরা প্রশংসা তেমন পাই নি তবে নিন্দা অনেকেই করেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ, কালের কণ্ঠ পত্রিকার সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ম্যালেরিয়া বিশেষজ্ঞ ও সাবেক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এম এ ফয়েজ, সাবেক এনপিও ডা. এ মান্নান আলী, প্রিন্সিপাল সায়েন্টিফিক অফিসার ডা. এ এস এম আলমগীর, বিসিসিএম কো-অর্ডিনেটর মনোজ কুমার বিশ্বাসসহ অন্যান্যরা।
ডেঙ্গু ভ্যাকসিন হিরো ম্যালেরিয়া স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী