ছাত্রলীগ নেতা হত্যা মামলায় জি কে শামীমকে আসামি করতে চায় পরিবার
১ নভেম্বর ২০১৯ ১২:১২
চট্টগ্রাম ব্যুরো: প্রায় তিন বছর আগে ছাত্রলীগ নেতা দিয়াজ ইরফান চৌধুরীর নির্মম মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের হওয়া হত্যা মামলায় আসামি হিসেবে আলোচিত ঠিকাদার জি কে শামীমকে অন্তর্ভুক্ত করতে চায় তার পরিবার। এজন্য মামলার বাদি দিয়াজের মা আদালতে আবেদন করেছেন। আদালত মামলার তদন্তকারী সংস্থাকে তদন্তপূর্বক এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন।
যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সমবায়বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে পরিচয় দেওয়া এস এম গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীমকে চলমান দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের আওতায় গত ১৮ সেপ্টেম্বর গ্রেফতার করে র্যাব। গ্রেফতারের পর বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলাভবন নির্মাণের ৭৫ কোটি টাকার কাজ জি কে শামীমের প্রতিষ্ঠান সার্স দ্য বিল্ডার্স ইঞ্জিনিয়ার্স-জি কে বিল্ডার্স লিমিটেডকে (জেভি) পাইয়ে দিতে ‘বাধা অপসারণের অংশ হিসেবে’ দিয়াজকে খুন করা হয়েছে।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যকে ভিত্তি হিসেবে উল্লেখ করে বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) দিয়াজ ইরফান চৌধুরীর মা জাহেদা আমিন চৌধুরী চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম মো. রবিউল আলমের আদালতে আবেদন করেন। দিয়াজের মৃত্যুর পর জাহেদা আমিন বাদী হয়ে আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করেছিলেন, যার তদন্তভার আছে সিআইডির হাতে। ওই মামলায় আসামি হিসেবে জি কে শামীমের নাম অন্তর্ভুক্ত করার আবেদন করেন জাহেদা।
দিয়াজের বড় বোন আইনজীবী জুবাইদা সরওয়ার চৌধুরী নীপা সারাবাংলাকে বলেন, ‘বিভিন্ন গণমাধ্যমে দিয়াজকে হত্যার পেছনে কলাভবন নির্মাণের ঠিকাদারির বিষয়টি এসেছে। কাজটি যেহেতু জি কে শামীমের প্রতিষ্ঠান পেয়েছিল, স্বাভাবিকভাবেই এই হত্যাকাণ্ডে তার সম্পৃক্ততা থাকতে পারে বলে আমরা ধারণা করছি। এজন্য তাকেও আসামি করে তদন্তের আওতায় আনতে আমরা আদালতে আবেদন করেছি। আদালত আবেদন গ্রহণ করে সিআইডিকে এ বিষয়ে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।’
দিয়াজ ইরফান চৌধুরী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের যুগ্ম-সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ছিলেন। ২০১৬ সালের ২০ নভেম্বর রাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই নম্বর গেট এলাকায় ভাড়া বাসায় নিজ কক্ষ থেকে দিয়াজের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। দিয়াজের মরদেহের প্রথম ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলা হয়। কিন্তু তার পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে উঠে আসে, আত্মহত্যা নয় দিয়াজকে খুন করা হয়েছে।
ঘটনার পর ২৪ নভেম্বর জাহেদা আমিন চৌধুরী বাদী হয়ে আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামিরা হলেন- চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সহকারী প্রক্টর আনোয়ার হোসেন, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি আলমগীর টিপু, সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবুল মনসুর জামশেদ, বিলুপ্ত কমিটির প্রচার সম্পাদক রাশেদুল আলম জিসান, ছাত্রলীগ কর্মী আবু তোরাব পরশ, মনসুর আলম, আব্দুল মালেক, মিজানুর রহমান, আরিফুল হক অপু ও মোহাম্মদ আরমান। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ৮-১০ জনকে আসামি করা হয়েছিল।
ছাত্রলীগ নেতা জি কে শামীম টপ নিউজ দিয়াজ ইরফান চৌধুরী হত্যা মামলা