আশ্বাসে পথ ছাড়বেন না প্রাথমিক শিক্ষকরা, নড়েচড়ে বসছে মন্ত্রণালয়
১ নভেম্বর ২০১৯ ১৮:৩৪
ঢাকা: সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে নড়েচড়ে বসেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ আন্দোলন থামিয়ে শিক্ষকদের কিভাবে শ্রেণিকক্ষে ফেরানো যায় এটিই এখন মন্ত্রণালয়ের প্রধান চিন্তা। সঙ্গে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের বেতন গ্রেড বাড়ানোর জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে নতুন করে প্রস্তাব পাঠানোর সিদ্ধান্তও নিয়েছে তারা। তবে শিক্ষকরা বলছেন, এবার আর কোনো ধরনের আশ্বাসে পথ ছাড়বেন না তারা। দাবি বাস্তবায়ন করেই ঘরে ফিরবেন তারা।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের বেতন গ্রেড বাড়ানোর জন্য আলোচনা করে অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হবে। এ জন্য নতুন করে প্রস্তাবনা তৈরির কাজ শুরু করে দিয়েছে মন্ত্রণালয়। দ্রুততম সময়ের মধ্যে শিক্ষকদের বেতন বাড়ানোর চেষ্টা করছি আমরা।’
প্রতিমন্ত্রী জানান, প্রধান শিক্ষকদের জন্য দশম ও সহকারী শিক্ষকদের ১২তম গ্রেডে এবং নতুন সৃষ্ট পদ সহকারী প্রধান শিক্ষকদের ১১তম গ্রেডে বেতন দেওয়ার জন্য প্রস্তাব পাঠানো হবে।
এর আগে, গত জুলাই মাসে প্রধান শিক্ষকদের ১০ম ও সহকারী শিক্ষকদের ১২তম গ্রেডে নেওয়ার প্রস্তাব অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এরপরই শিক্ষকরা লাগাতার আন্দোলন শুরু করেন এবং কর্মবিরতির মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম থেকে নিজেদের একরকম দূরে সরিয়ে রাখেন। এতে করে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা আয়োজন হুমকির মুখে পড়ে। যে কারণে এই আন্দোলন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরাও।
আন্দোলন থেকে শিক্ষকদের শ্রেণিকক্ষে ফিরিয়ে নিতে শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে বেশ কয়েকবার বৈঠক করেছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন। এসব বৈঠকে প্রতিমন্ত্রীর দেওয়া বেশ কয়েকটি প্রস্তাব শিক্ষক নেতারা মেনে নিয়েছেন বলে জানা গেছে। যেগুলো এখন বাস্তবায়নের জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছে মন্ত্রণালয়।
শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে প্রতিমন্ত্রীর বৈঠকের ভিত্তিতেই প্রধান শিক্ষকদের দশম, সহকারী প্রধান শিক্ষকদের একাদশ ও সহকারী শিক্ষকদের দ্বাদশ গ্রেডের বেতন বৃদ্ধির প্রস্তাব পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।
শিক্ষক মহাজোটের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামসুদ্দিন মাসুদ বলেন, ‘প্রতিমন্ত্রী আমাদের দাবি মেনে নিয়েছেন, তবে সেটি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। কারণ অতীতেও এই রকম প্রতিশ্রুতি দিয়ে আমাদের অভুক্ত রাখা হয়েছে। হলে এখন আর প্রতিশ্রুতি নয় বেতন বৃদ্ধির ঘোষণা শুনতে চাই।’
প্রসঙ্গত, সরকার আগামী ১৩ নভেম্বরের মধ্যে বেতন বৈষম্য নিরসনের দাবি না মানলে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা বর্জনসহ লাগাতার কর্মবিরতিতে যাবেন বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষকরা। গত ২৩ অক্টোবর শহীদ মিনারে শিক্ষকদের মহাসমাবেশে এই ঘোষণা দেওয়া হয়।
এদিকে, সরকারি প্রাথমিক শিক্ষকদের পর বেতন বৃদ্ধির সুখবর পেতে পারেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এবং সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তারাও।
জানা গেছে, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের ৮ম, সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের ৯ম গ্রেডে বেতনের বৃদ্ধির কথা ভাবছে মন্ত্রণালয়। তবে এই বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।