আরও ৭৫ বাংলাদেশি শ্রমিক ফিরেছে সৌদি আরব থেকে
২ নভেম্বর ২০১৯ ১৪:৩৮
ঢাকা: সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসের ধারাবাহিকতায় নভেম্বর মাসের প্রথম দিনেও সৌদি আরব থেকে ফিরে এসেছেন ৭৫ জন বাংলাদেশি শ্রমিক। এ নিয়ে গত তিন দিনে দেশে ফেরত আসা শ্রমিকের সংখ্যা ৩৩২ জন।
সৌদি আরবের রাষ্ট্রয়ত্ত এয়ারলাইন্স সৌদিয়ার এসভি ৮০৪ ফ্লাইটে করে এসব শ্রমিক শুক্রবার (১ নভেম্বর) রাত ১১টা ২০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন।
আরও পড়ুন- সৌদি আরবে পুলিশি অভিযানে একমাসে দেশে ফিরেছেন ৪৬৬২ শ্রমিক
বরাবরের মতো শুক্রবারও ফেরত আসা কর্মীদের সহায়তা করে প্রবাসীকল্যাণ ডেস্ক। পরে বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম থেকে খাবার ও পানিসহ নিরাপদে বাড়ি পৌঁছানোর জন্য জরুরি সহায়তা দেয়।
শুক্রবার ফেরত আসা শ্রমিক নরসিংদীর সজিব হোসেন জানান, তিনি ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা খরচ করে আলফালা কোম্পানিতে গিয়েছিলেন মশা নিধনকর্মী হিসেবে। কিন্তু গিয়ে কাজ পান একটি সাপ্লাই কোম্পানিতে। এরপর একবছর কোনো বেতন পাননি তিনি। উপায়ন্তর না দেখে বাড়ি থেকে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে শূন্য হাতে দেশে ফিরে এসেছেন।
ফরিদপুরের মামুন মিয়া জানান, সাড়ে চার বছর আগে সৌদি আরব যান তিনি। আকামা (কাজের অনুমতি) নবায়নের জন্য কফিলকে (নিয়োগকর্তা) টাকাও দিয়েছিলেন। কিন্তু কফিল তার আকামা নবায়ন করেননি। অভিযানে গ্রেফতার হলে কফিল তার দায়িত্বও নেয়নি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মাসুম মিয়ার অভিযোগ, আট মাসের আকামার মেয়াদ থাকলেও রাস্তা থেকে ধরে মিথ্যা অভিযোগ এনে তাকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, সৌদি আরবে ৯ বছর বৈধ আকামা নিয়ে কাজ করেছি। কেন আমাকে ফেরত পাঠানো হয়েছে, আমি নিজেই বুঝতে পারছি না।
ফের আসা আরেক শ্রমিক মো. জুয়েলের বাড়ি মৌলভীবাজার। তিনি জানান, মাত্র একমাস আগে গিয়েছিলেন সৌদি আরবে। কিন্তু ধরপাকড়ের অভিযানে তাকেও শূন্য হাতে দেশে ফিরতে হয়েছে। তার মতোই ফেনীর মিজবাহ আড়াই মাস, গাইবান্ধার মাহাবুব পাঁচ মাস, সাদিরুল সাত মাস, কুমিল্লার জুয়েল আট মাস আগে গিয়েছিলেন সৌদি আরবে। ধরপাকড়ে তাদেরও খালি হাতে দেশে ফিরতে হয়েছে।
ব্র্যাক অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান জানান, চলতি বছর এখন পর্যন্ত প্রায় ২১ হাজার বাংলাদেশিকে সৌদি আরব থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। সেপ্টেম্বর থেকে ধরপাকড়ের পরিমাণ অনেক বেড়েছে। গতকাল (শুক্রবার) যারা ফেরত এসেছেন, তাদের মধ্যে এমন অনেকে রয়েছেন যারা কয়েকমাসে আগে গিয়েছেন দেশটিতে। অনেকে জানিয়েছেন, তাদের যে কাজ দেওয়ার কথা ছিল, সেই কাজ তারা পাননি।
শরিফুল বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবে থাকা কয়েকজন বলছেন, কেন তাদের পাঠানো হলো, তারা নিজেরাও জানেন না। কয়েকজন বলছেন, আকামা নবায়নের জন্য তারা টাকা দিয়েছিলেন, কিন্তু নিয়োগকর্তা সেটি নবায়ন করেননি। এখন পুলিশ ধরলেও তারা দায়িত্ব নিচ্ছেন না। এ ধরনের প্রতিটি ঘটনায় দায়ীদের জবাবদিহিতার মধ্যে নিয়ে আসাটা জরুরি।