১২০টি দেশে ১৩৫ মিলিয়ন ডলারের ওষুধ রফতানি করছে বাংলাদেশ
২ নভেম্বর ২০১৯ ২০:৩৩
ঢাকা: বাংলাদেশের ফার্মাসিউটিক্যাল শিল্প দেশের ৯৮ শতাংশ চাহিদা মেটাতে সক্ষম। বতর্মানে বিশ্বের প্রায় ১২০টি দেশে ১৩৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ওষুধ রফতানি করছে। এটি আমাদের ওষুধ খাতের সক্ষমতা ও আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের উৎপাদিত ওষুধের গ্রহণযোগ্যতার বহিঃপ্রকাশ বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)’র নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম।
শনিবার (২ নভেম্বর) ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) উদ্যোগে ডিসিসিআই অডিটোরিয়ামে আয়োজিত ‘বাংলাদেশে এপিআই খাতের সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
সেমিনারে স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি ওসামা তাসীর, বক্তব্য রাখেন ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের পরিচালক মো. রুহুল আমিন, ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি ওয়াকার আহমেদ সহ-সভাপতি ইমরান আহমেদ, পরিচালক আশরাফ আহমেদ, আলহাজ দ্বীন মোহাম্মদ, এনামুল হক পাটোয়ারী, খন্দকার রাশেদুল আহসান প্রমুখ।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. রবিউল ইসলাম।
বিডা’র চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘২০২৭ সালে বাংলাদেশের মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ফলে আমাদের ট্রিপস (ট্রেড রিলেটেড আসপেক্ট অব ইনটেলেকচুয়্যাল প্রপার্টি রাইটস) চুক্তির আওতায় বিদ্যমান সুবিধা থেকে বঞ্চিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।এজন্য এখনই যথাযথ পরিকল্পনা গ্রহণ করে, তা বস্তবায়নে কাজ করতে হবে। সরকার ও বেসরকারিখাত যৌথভাবে কাজ করতে পারে, তাহলে এ লক্ষ্য বস্তবায়ন অসম্ভব নয়।’
বিডা’র চেয়ারম্যান বলেন, সারা পৃথিবীতে বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের গবেষণা পরিচালনায় বেসরকারীখাত উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে। এ লক্ষ্যে তিনি বাংলাদেশের বেসরকারিখাতকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি ওসামা তাসীর বলেন, কাঁচামাল আমদানির ওপর বেশিমাত্রায় নির্ভরতা আমাদের ওষুধ শিল্পের অন্যতম একটি প্রতিবন্ধকতা। অপরদিকে দেশীয় এপিআই উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ মোট আমদানিকৃত এপিআইয়ের প্রায় ৫ শতাংশ উৎপাদন করতে সক্ষম। এটি আমদানিকৃত এপিআইয়ের চেয়ে তুলনামূলক সস্তা।
তিনি বলেন, ‘স্থানীয়ভাবে এপিআই’র উৎপাদন আরও বাড়ানোর জন্য দক্ষ মানবসম্পদ ও প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই।’
ডিসিসিআই সভাপতি আরও বলেন, ‘২০৩৩ সালের পরবর্তীতে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একটি টেকসই ফার্মাসিউটিক্যাল খাতের বিকাশে আমাদের অবশ্যই এপিআই খাতে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘এপিআই উৎপাদনে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানসমূহের সঙ্গে স্থানীয় উদ্যোক্তারা যৌথ বিনিয়োগে এগিয়ে আসতে হবে। যা এখাতে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি ও নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারের সুযোগ দিতে সক্ষম হবে।’
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরিচালক মো. রুহুল আমিন বলেন, প্রধানমনন্ত্রী ২০১৯ সালকে ‘এপিআই ও ফার্মাসিউটিক্যাল শিল্পবছর’ হিসেবে ঘোষণা করেছে এবং এক্ষেত্রে আমাদের পিছিয়ে থাকার কোনো সুযোগ নেই। তিনি ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পক্ষ হতে এ খাতের বিকাশে নীতি সহায়তা সহ সকল ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন।
মূল প্রবন্ধে অধ্যাপক ড. মো. রবিউল ইসলাম বলেন, ‘উন্নয়নশীল দেশ হিসেবেও বাংলাদেশের প্যাটেন্ট এপিআই উৎপাদনে কোনো আইনি প্রতিবন্ধকতা নেই। অভ্যন্তরীণভাবে আমাদের ২০ হাজার ৫১২ কোটি টাকার ওষুধের বাজার রয়েছে, যেটি প্রতিবছর প্রায় ১০ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ ধরনের একটি সম্ভাবনাময় খাতকে এগিয়ে নিতে হলে সরকার ও বেসরকারিখাতকে একযোগে কাজ করতে হবে।’