নতুন আইনে মামলা সোমবার থেকে
৩ নভেম্বর ২০১৯ ১২:০১
ঢাকা: নতুন সড়ক আইন বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে সোমবার (৪ নভেম্বর) থেকে নতুন আইনে মামলা দেওয়া শুরু করবে ট্রাফিক বিভাগ। তবে পজ মেশিনে নয়, কাগজে ছাপানো স্লিপে এই মামলা দেওয়া হবে। আর মামলায় ব্যবহৃত পজ মেশিন আপডেট করতে এক থেকে দেড় মাস সময় লাগবে। তার আগে এভাবে স্লিপে মামলা দিতে থাকবে ট্রাফিক পুলিশ।
রোববার (৩ নভেম্বর) সকালে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মফিজ উদ্দিন আহমেদ সারাবাংলাকে এ তথ্য জানান। কাগজের স্লিপে মামলা দেওয়ার ঠিক আগ মুহূর্তে মহানগর পুলিশ কমিশনার একটি ব্রিফ করে বিস্তারিত জানিয়ে দেবেন বলেও উল্লেখ করে মফিজ উদ্দিন।
নতুন আইন হঠাৎ করে কার্যকর হয়েছে উল্লেখ করে তিনি সারবাংলাকে বলেন, ‘আইনটি সবার জানা প্রয়োজন আছে। সাধারণ নাগরিক এবং যারা বাস মালিক চালক তাদের জানানো প্রয়োজন আছে। আর এ জন্য আপাতত মামলা না দিয়ে ক্যাম্পোইন চালাচ্ছে ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা। আর কাল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে মামলা দেওয়ার কার্যক্রম শুরু হয়ে যাবে।’
গতানুগতিক পদ্ধতিতে প্রসিকউশিন দেওয়ার জন্য বই-এর পাতা মাঠ পর্যায়ে আজই চলে যাবে। আর কাল থেকে নতুন আইনে প্রসিকিউশন শুরু হয়ে যাবে। তবে পজ মেশিনের মাধ্যমে মামলার কার্যক্রম শুরু করতে এক দেড়মাস সময় লাগবে জানান ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার মফিজ উদ্দিন আহমেদ।
৭৯ বছরের পুরনো মোটরযান অধ্যাদেশ বাতিল করে ১ নভেম্বর থেকে নতুন সড়ক পরিবহন আইন কার্যকর হয়েছে। এ আইনে বেপরোয়া গাড়ি চালকের কারণে মৃত্যু হলে ৫ বছর কারাদণ্ড বা অনধিক ৫ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। যদি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে চালক বেপরোয়া গাড়ি চালিয়ে হত্যাকাণ্ড ঘটান, তাহলে সর্বোচ্চ সাজা হবে ফাঁসি।
নতুন সড়ক আইনে শিক্ষানবিশ লাইসেন্স ছাড়া কর্তৃপক্ষের দেওয়া যে কোনো লাইসেন্সের বিপরীতে ১২ পয়েন্ট দেওয়া থাকবে। দোষ করলে তা কাটা যাবে। লালবাতি অমান্য, ওভারটেক, গতিসীমা অমান্য, বিপরীত দিক থেকে গাড়ি চালানো, ওজনসীমা লঙ্ঘন, নেশাগ্রস্ত হয়ে গাড়ি চালালে পয়েন্ট কাটা যাবে চালকের। এ বিধান আগে ছিল না।
নতুন আইনে নিয়োগপত্র ছাড়া কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কোনো ব্যক্তিকে গণপরিবহনের চালক নিয়োগ করতে পারবে না। নিয়োগপ্রাপ্ত চালক তার কাগজপত্র গাড়িতে প্রদর্শন করবেন। এ ছাড়া কন্ডাক্টর লাইসেন্স ছাড়া কন্ড্রাক্টর নিয়োগ করা যাবে না বলে বিধান করা হয়েছে। ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালালে ছয় মাসের কারাদণ্ড বা অনধিক ২৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। আগে এ অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি ছিল চার মাসের কারাদণ্ড বা ৫০০ টাকা অর্থদণ্ড। লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালালে অনধিক ছয় মাসের জেল বা অনধিক ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয়দণ্ডের বিধান রয়েছে।
ফিটনেসবিহীন গাড়ি চালালে ছয় মাসের জেল বা অনধিক ২৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড দেওয়া হবে।
গত বছরের ২৯ জুলাই রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থীর প্রাণহানির ঘটনায় গড়ে উঠা নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর সড়ক পরিবহন আইনটি জাতীয় সংসদে পাস হয়। কিন্তু এর বিরুদ্ধে পরিবহন মালিক শ্রমিকরা আইনটি সংশোধনের জন্য তৎপর হয়। তবে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় আইন কার্যকরের ঘোষণা দেয়।
আরও পড়ুন
নতুন সড়ক আইন বাস্তবায়নে প্রস্তুত নয় ট্রাফিক পুলিশ
প্রয়োগ-প্রচার নেই নতুন সড়ক আইনের, হালনাগাদ হয়নি ‘পজ’ মেশিন
সাজা, জরিমানা বাড়িয়ে শুক্রবার থেকে সড়কে নতুন আইন কার্যকর
১ নভেম্বর থেকে সড়ক পরিবহন আইন কার্যকর
গণপরিবহন ট্রাফিক বিভাগ নতুন আইন মামলা যানবাহন রাজধানী লাইসেন্স সড়ক পরিবহন আইন