সিপিডি’র টাকা কোথা থেকে আসে, প্রশ্ন অর্থমন্ত্রীর
৪ নভেম্বর ২০১৯ ১৯:৩৭
ঢাকা: বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। গবেষণা করার জন্য কোথা থেকেই বা তারা টাকা-পয়সা পায়, সেটিও জানতে চেয়েছেন তিনি।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘তারা গবেষণা প্রতিষ্ঠান, কিন্তু তাদের টাকা কোথা থেকে আসে? সরকারের তো রেভিনিউ পাওয়ার জায়গা আছে। ওরা কোথা থেকে রেভিনিউ পায়? এই রেভিনিউ পেয়ে তারা কী কাজ করে? এই প্রশ্নের জবাব আমি চাই। এটা সম্পর্কে আমি তাদের কাছ থেকে পরিষ্কার স্টেটমেন্ট চাই।’
সোমবার (৪ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে নিজ দফতরে জাপান সরকারের এক প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘কতজন লোকের চাকরির ব্যবস্থা সিপিডি করছে? তারা কোন কোন প্রকল্পে বিনিয়োগ করছে? তারা রেভিনিউ কেন পায়? তারা এ দেশের কারও না কারও জন্য কাজ করার জন্য পায়। তারা সেই কাজটা করছে কি না, সেটাও আমার জানা দরকার।’
এর আগে, গত রোববার (৩ নভেম্বর) ‘বাংলাদেশের উন্নয়নের স্বাধীন পর্যালোচনা: ২০১৯-২০ অর্থবছর প্রারম্ভিক মূল্যায়ন’ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধিকে ‘সুতা কাটা ঘুড়ি’র সঙ্গে তুলনা করেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘কাটা সুতার সঙ্গে যেমন ঘুড়ির সম্পর্ক থাকে না, তেমনি বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও প্রবৃদ্ধির সঙ্গে অর্থনীতির সম্পর্ক পাওয়া যাচ্ছে না।’
সিপিডি ফেলোর বক্তব্য নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান অর্থমন্ত্রী। সিপিডি ‘সবসময় তাদের লাইনে আছে’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তাদের অবস্থান একরকম এবং আমাদেরটা একরকম। একটা কথা আছে, যার নুন খাই তার গুণ গাই। আমি নুন খাই আমাদের দেশের জনগণের। আমি গুণকীর্তন করব দেশের জনগণের। উনারা কারটা খায়, আমি জানি না। উনারা কার গুণকীর্তন করেন, তাও আমি জানি না।’
অবশ্য সিপিডি যে সবসময় খারাপ বলে, তা নয়— এমন মন্তব্যও করেন মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, ‘সিপিডি কিছু গঠনমূলক তথ্যও দেয়। কিন্তু অনেক সময় গঠনমূলক তথ্য দিতে গিয়ে ওভার ডু (বাড়িয়ে বলে) করে ফেলে।’
সিপিডি’র বক্তব্য প্রত্যাখান করে তিনি বলেন, ‘দেশে প্রবৃদ্ধি হচ্ছে কি না, কর্মসংস্থান হচ্ছে কি না, এটা আপনারা ভালো জানেন। ২০০১ সালে ৫৬ দশমিক ৭ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্য সীমার নিচে ছিল। সেটা কমে এখন ২০ শতাংশের কাছাকাছি। এই যে দারিদ্র্য দূর হলো, এটা কীসের হাত ধরে হয়েছে? এটা সম্ভব হয়েছে স্থিতিশীল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কারণে। আর কোনো ম্যাজিক আমাদের নেই।‘
বৈশ্বিক পরিপ্রেক্ষিতে সিপিডি মূল্যায়ন করলে খুশি হতেন বলেও জানান অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, অন্যদের কতটা বাড়ছে, সেটা বললে আমার কাছে পরিষ্কার হতো। আমরা একা নই, বিশ্বের অংশ। এখন সারাবিশ্বে একটা টানাপোড়েন চলছে। আমেরিকার সঙ্গে চীনের বিশ্বযুদ্ধ চলছে। আমেরিকার সঙ্গে ইউরোপের বাণিজ্যযুদ্ধ চলছে। ইউরোপে ব্রেক্সিট নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে একটা অস্থিরতা যাচ্ছে। এ পরিস্থিতি, বিশেষ করে আমাদের রফতানি বাণিজ্য একটু ঝুঁকির মধ্যে থাকবেই। তবে এ পরিস্থিতি আমরা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে অবশ্যই মোকাবিলাও করতে পারব।