Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

লাম্পি স্কিন ডিজিজে আক্রান্ত ৪০০০ গবাদি পশু, আতঙ্কে খামারিরা


৮ নভেম্বর ২০১৯ ০৭:৪৫

বগুড়া: বগুড়ায় গবাদি পশুর শরীরে ‘লাম্পি স্কিন ডিজিজ’ এর প্রকোপ দেখা দিয়েছে। এবারই প্রথম এই রোগের প্রকোপে আতংকিত হয়ে পড়েছেন এলাকার খামারিরা। নদী তীরের এলাকাগুলোতেই এই রোগ ছড়িয়ে পড়েছে বেশি। এপর্যন্ত জেলায় প্রায় ৪ হাজারের বেশি গরু এই লাম্পি স্কিন ডিজিজে আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে আক্রান্ত খামারের সংখ্যা ৫৯টি ।

প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্র জানায়, লাম্পি স্কিন ডিজিজ এক ধরণের পক্স ভাইরাস। দেশে এটি নতুন ভাবে আর্বিভূত হয়েছে। এইরোগে গরু বা মহিষের চামড়ার নিচে গোটা শরীর জুড়ে গুটি আকারে ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে ক্ষত সৃষ্টি হয়। তবে এরোগে মানুষ আক্রান্ত হয় না। আক্রান্ত গবাদি পশুর শরীরে প্রথমে আঁচিল আকারে (ছোট) রোগটি দেখা দেয় ও পরে তা ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে ক্ষত হওয়া স্থান থেকে চামড়া খসে পড়ে যায়।

জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের তথ্যানুযায়ী, ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত এ রোগে আক্রান্ত গরুর সংখ্যা ছিলো ৭৭৮টি।পরের সপ্তাহে তা আরও বেড়ে যায়। সর্বশেষ তথ্যানুয়ায়ী বগুড়া জেলায় এ পর্যন্ত আক্রান্ত গরুর সংখ্যা ৪ হাজার ১৭১টি। এপর্যন্ত সবচেয়ে বেশি গবাদি পশু আক্রান্ত হয়েছে যমুনা তীরের উপজেলা সারিয়কান্দীতে। এখানে আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার ৩২টি। এরপরে রয়েছে ধুনট উপজেলা সেখানে আক্রান্ত হয়েছে ১ হাজার ২৮টি গরু।

এছাড়া সোনাতলা উপজেলায় আক্রান্তের সংখ্যা ৩৮৯, গাবতলীতে ৪৬৪, শিবগঞ্জে ৩৪৬ এবং বগুড়া সদরে ২০৫টি গরু আক্রান্ত হয়। জেলার আরও ৫ উপজেলাতেও লাম্পি স্কিন ডিজিজে আক্রান্ত গবাদি পশু রয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ থেকে বগুড়ায় লাম্পি স্কিন ডিজিজের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। দিনে দিনে তা ছড়িয়ে পড়ছে। এতে বাড়ছে আক্রান্ত গরুর সংখ্যা। মাত্র ২ সপ্তাহের মধ্যে তা ব্যাপক আকার ধারণ করে। খামার আক্রান্ত হলেও সাধারণ কৃষকদের গবাদি পশুই এ রোগে বেশি আক্রান্ত হয়েছে।

তবে জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস জানায়, লাম্পি স্কিন ডিজিজ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং এর প্রকোপ কমছে। দ্রুতই এটি আরও কমে যাবে। জেলাপ্রাণি সম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে খামার পরিদর্শন, উঠান বৈঠকসহ কৃষকদের (গবাদি পশু মালিকদের মাঝে ) মাঝে সচেতনেতা তৈরি করতে লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে।

ধুনট উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা ভেটেরিনারি সার্জন মনিরুল ইসলাম জানান, তার এলাকায় আক্রান্ত গবাদি পশুর সংখ্যা তুলনামূলক বেশি। নতুন করে আক্রান্তের খবর পাওয়া যাচ্ছে। তবে প্রকোপ আগের মতোই রয়েছে, বাড়েনি আবার কমেও যায়নি।

বগুড়া সদরের খামারি চাঁন মিয়া জানান, তার খামারে ২২টি গরু ছিল। অক্টোবরের প্রথম দিকে ২টি গরু ওই রোগে আক্রান্ত হলে ভয়ে দ্রুত তিনি খামারের সবকটি গরু লোকসানে বিক্রি করে দেন।

বগুড়া জেলা প্রাণিম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মাদ রফিকুল ইসলাম তালুকদার বলেন, ‘উপজেলা পর্যায়ে পর্যাপ্ত লোকবল না থাকলেও উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ও ভেটেরিনারি সার্জনের সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবীরা এই রোগ নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন। বগুড়া এবারই প্রথম গাবদি পশু এধরনের রোগে আক্রান্ত হলেও এ নিয়ে কৃষক ও খামারিদের আতংকিত হওয়ার কারণ নেই। এখন পর্যন্ত এই রোগে আক্রান্ত কোনো গরুর মৃত্যু হয়নি। তাপমাত্রা কমে যাওয়ার সঙ্গে লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হওয়ার হার কমে যাবে।’ নদী তীরবর্তী এলাকায় এই রোগের প্রকোপ অন্য এলাকার তুলানায় বেশি হয় বলেও জানান তিনি।

গবাদি পশু বগুড়া লাম্পি স্কিন ডিজিজ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর