বড় অস্ত্র যেত জঙ্গি-বনদস্যুদের কাছে, ছোটগুলো নিত সন্ত্রাসীরা
৫ নভেম্বর ২০১৯ ১৭:১৮ | আপডেট: ৫ নভেম্বর ২০১৯ ১৭:২১
ঢাকা: রাজধানীর মিরপুর থানা এলাকার কোরিয়া কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সামনে থেকে হাফিজুর রহমান নামে এক অস্ত্র ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (উত্তর)। এ সময় তার থেকে ছোট-বড় চারটি বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র ও ১৭ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে বড় অস্ত্র যেত জঙ্গি ও বনদস্যুদের কাছে। আর ছোটগুলো নিত সন্ত্রাসীরা।
মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিসি উত্তর) উপ-কমিশনার মো. মশিউর রহমান এসব তথ্য জানান।
ডিবির ডিসি মশিউর রহমান বলেন, ‘অস্ত্রগুলো ভারত, আমেরিকা ও জার্মানির তৈরি। এর মধ্যে ৭.৬৫ মডেলের একটি, ২টি রিভলবার ও ১টি বড় অস্ত্র। বড় অস্ত্রটিতে একে-৪৭ মডেলের গুলি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তবে সেটি একে-৪৭ নয়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ১০টার দিকে মিরপুর থানা এলাকা থেকে অস্ত্রগুলো উদ্ধার করা হয়। এ সময় একজনকে গ্রেফতার করা হয়।’
মশিউর রহমান বলেন, ‘রিভলবার ও ৭.৬৫ মডেলের অস্ত্রগুলো ভারত থেকে ৩০ হাজার টাকায় কিনত এবং বাংলাদেশে এনে তা ৫০ হাজার বা তারও বেশি টাকায় বিক্রি করত। আর বড়গুলো এক লাখ বা তারও বেশি টাকায় বিক্রি করত অস্ত্র ব্যবসায়ীরা।’
অস্ত্রের রুট এবং এর সঙ্গে কারা জড়িত? জানতে চাইলে মশিউর রহমান বলেন, ‘গ্রেফতার হাফিজুর রহমান তার সহযোগী হাবিবুর রহমান বিশ্বাস ও জিল্লুরের মাধ্যমে ভারত থেকে বেনাপোল দিয়ে চোরাই পথে অবৈধ অস্ত্র ও গুলি আমদানি করে থাকে। এগুলো প্রথমে বিহার থেকে কলকাতার অস্ত্র ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে বিভিন্ন সীমান্ত এলাকায় গোপন জায়গায় রাখা হয়। পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশি অস্ত্র ব্যবসায়ীদের সঙ্গে দরদাম ঠিক করে। এর পর সেগুলো কলকতার উত্তর চব্বিশ পরগনা আংরাইল নামক সীমান্তবর্তী গ্রাম ও বাংলাদেশের বেনাপোলে পুটখালী গ্রামের নদীর তীরে গোসল করার কৌশলে বাংলাদেশে নিয়ে আসে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই অস্ত্রগুলো দেশে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিসহ নানাধরনের নাশকতামূলক কাজে ব্যবহার হয়ে থাকে। হাবিবুরের মাধ্যমে ভারতের উত্তরা চব্বিশ পরগনার বনগ্রাম গ্রামের জাহাঙ্গীর নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকায় প্রতিটি অস্ত্র ও গুলি আনা হতো। এসব অস্ত্র বাংলাদেশে নিয়ে আসার পর বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে বেশি দামে বিক্রি করা হতো। এ ঘটনায় মিরপুর থানায় অস্ত্র আইনে একটি মামলা করা হয়েছে।’
বাংলাদেশ ও ভারতে এই অস্ত্র ব্যবসার পেছনে আরও কারা জড়িত, তাদের খুঁজে বের করার জন্য তদন্ত অব্যাহত থাকবে বলেও জানান মশিউর রহমান।