Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নিষেধাজ্ঞা শেষে ৬ দিনেই ধরা পড়েছে ১৫১ মেট্রিক টন মাছ


৬ নভেম্বর ২০১৯ ১১:২৬

কক্সবাজার: মৎস্য সম্পদ রক্ষায় ২২ দিন (৯ থেকে ৩০ অক্টোবর) সাগরে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা ছিল। নিষেধাজ্ঞা শেষে ফের সমুদ্রে জাল ফেলেছে মৎসজীবীরা। জালে ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে রূপালি ইলিশসহ নানা প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ। নিষেধাজ্ঞার পর মাত্র ছয় দিনেই ধরা পড়েছে ১৫১ মেট্রিক টন সামুদ্রিক মাছ; যা গত বছরের তুলনায় ৯৪ মেট্রিক টন বেশি। আর এর মধ্য থেকেই ২০ মেট্রিক টন মাছ বিদেশে রফতানি করা হচ্ছে বলে মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে।

বিজ্ঞাপন

এদিকে সমুদ্রে প্রচুর মাছ পাওয়ায় আনন্দিত জেলে ও বোটমালিকসহ মৎস্য শিল্পের সাথে জড়িতরা। সেইসঙ্গে মাছের দাম হাতের নাগালে থাকায় খুশি ক্রেতারাও।

মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কদিন আগেও নীরব-নিস্তব্ধ থাকা কেন্দ্র ফিরে পেয়েছে প্রাণ চাঞ্চল্য। ট্রলার থেকে মাছ নামানো, ঝুঁড়ি দিয়ে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় মাছ সরানো, মাছ স্তূপ করে দাম-দর হাঁকানো, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাঠানোর জন্য ট্রাকে মাছ বোঝাই, বরফ দিয়ে প্যাকেজিংসহ নানান কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে প্রায় কয়েক হাজার মানুষ।

মৎস্যজীবী সাইফুল ইসলাম জানান, যে ২২ দিন মাছ ধরা বন্ধ ছিল, সে দিনগুলো ছিল আমার কাছে ২২ বছরের সমান। এমনিতিই আমারা কোম্পানির কাছ থেকে নেওয়া ঋণের জালে আটকা পড়েছি। তার মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্থ জেলেদের জন্য বরাদ্দকৃত ২০ কেজি চালও পাইনি। তবে বন্ধ শেষে সাগরে প্রচুর মাছ ধরা পড়ছে। এভাবে মাছ ধরা পড়লে আমরা ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারব।

ফিশারি ঘাটে মাছ কিনতে আসা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর এখানে প্রচুর পরিমাণে ইলিশসহ বিভিন্ন মাছ আসছে। দামও সহনীয়। তাই বেশকিছু মাছ কিনে নিলাম।’

এদিকে ট্রলার মালিক ফরিদুল ইসলাম জানান, বর্তমানে একটি ট্রলার সাগরে পাঠাতে খরচ হয় দুই থেকে তিন লাখ টাকা। অনেক সময় সাগরে মাছ পাওয়া যায়, আবার অনেক সময় পাওয়া যায় না। বন্ধ শেষে এখন প্রচুর মাছ পাওয়া যাচ্ছে।

মৎস্য সম্পদ রক্ষার্থে সরকারের পদক্ষেপকে ধন্যবাদ জানিয়ে কক্সবাজার জেলা ফিশিং বোট মালিক সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও কক্সবাজার মৎস্য ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি মো. নুরুল ইসলাম চিশতি জানান, বন্ধের দিনগুলোতে মৎস্য শিল্পের সাথে জড়িতদের খুবই কষ্ট হয়। ওই সময়টাতে তাদের জন্য সরকারি সহযোগিতা আরও বাড়ানো উচিত।

বিজ্ঞাপন

মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রর বিপণন কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন জানান, ২২ দিন মাছ শিকার বন্ধ থাকায় মৎস্য আহরণ বেড়েছে। ৩১ অক্টোবর ফিশারিঘাটে ল্যান্ডিং হয়েছে ছয় মেট্রিক টন মাছ, ১ নভেম্বর ১১ মেট্রিক টন, ২ নভেম্বর ২৫ মেট্রিক টন, ৩ নভেম্বর ৫০ মেট্রিক টন। এভাবেই দিন দিন মাছ আহরণের পরিমাণ বাড়ছে।

কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের নিবার্হী প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইসানুল হক জানান, নিষেধাজ্ঞা শেষে গত ছয় দিনে ইলিশ ও রূপচাঁদাসহ ১৫১ মেট্রিক টন সামুদ্রিক মাছ আহরণ হয়েছে। যেখানে গত বছরের একই সময়ে আহরণের পরিমাণ ছিল মাত্র ৫৭ মেট্রিক টন। হিসাব করে দেখা যায়, গত বছরের তুলনায় এ বছর ৯৪ মেট্রিক টন মাছ বেশি পাওয়া গেছে। এর মধ্যে শুধু ইলিশই ধরা পড়েছে ২৮ মেট্রিক টন এবং রূপচাঁদা ১৩ মেট্রিক টন। বাকিগুলো অন্যান্য সামুদ্রিক মাছ। সমুদ্রে পাওয়া এসব মাছ থেকে দেশের চাহিদা মিটিয়ে ২০ মেট্রিক টন মাছ বিদেশে রফতানি করা হবে।

কক্সবাজার নিষেধাজ্ঞা মৎস্যজীবী সমুদ্রে জাল

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর