বদলি মামলা খুঁজে পেতে হয়রানি
৬ নভেম্বর ২০১৯ ১১:২৮
ঢাকা: ঢাকার নিম্ন আদালতে বদলি হওয়া মামলার বিষয়ে তথ্য পেতে হয়রানির মুখে পড়তে হচ্ছে আইনজীবীদের। মামলার পরবর্তী কার্যক্রম কিংবা তারিখ দেখার জন্য সংশ্লিষ্ট সেকশনে গিয়ে মামলার বিষয়টি খাতায় খুঁজতে হয়। এর ফলে আইনজীবীদের জটিলতায় পড়তে হয়।
বদলি হওয়া মামলার প্রতিটি ধাপ দেখার জন্য আইনজীবীকে বাধ্য হয়ে অ্যানালগ পদ্ধতিতে অগ্রসর হতে হয়। নিম্ন আদালতের হাতে গোনা কয়েকটি আদালত বাদে মামলার জবানবন্দি গ্রহণ, সাক্ষ্যগ্রহণ, পরবর্তী তারিখ, বদলির আদেশসহ সব বিষয়ে এখনও অ্যানালগ (খাতায় লিখে রাখা) পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। তবে ঢাকার কয়েকটি আদালতে আধুনিকতার ছোঁয়া লাগলেও বাকিগুলো এখনও বাইরে আছে।
প্রথম দিকে ঠিক থাকলেও মামলাটি যখন বিচারের জন্য বদলি হয় সেটি বিচারিক আদালতে খুঁজে পেতে আইনজীবীদের নানা হয়রানির স্বীকার হতে হয়। ওই বদলি মামলা পেতে তিন থেকে চার মাসের অধিক সময় পেরিয়ে যায়। এর ফলে আইনজীবীদের বদলি মামলা খুঁজতে মাসের পর মাস সেকশনগুলোতে চক্কর কাটতে হয়। এতে আইনজীবীদের পরিশ্রমের সঙ্গে সঙ্গে অনেক সময় অপচয় হয়।
ঢাকা মহানগর দায়রা আদালতের দ্বিতীয় তলায় বদলি মামলা খুজঁতে আসেন অ্যাডভোকেট আলমগীর হোসেন। আলাপচারিতায় সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমার এক মামলা গত তিন মাস আগে ঢাকার সিএমএম আদালত থেকে বদলি হয়ে মহানগরে বদলি সেকশনে এসেছে। কিন্তু এ মামলা খোঁজার জন্য প্রতি সপ্তাহে ১/২ বার করে আসতে হয়। দীর্ঘসময় লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে মামলা খুঁজতে হয়। কিন্তু সহজে খুঁজে পাওয়া যায় না। যেদিন থেকে মামলা বদলি হয় তার কয়েক মাস থেকে শুরু হয় খোঁজাখুঁজি। এরপর চলতে থাকে চার/পাঁচ মাস পর্যন্ত।’
আইনজীবী আলমগীর হোসেন জানান, মক্কেলরা একের পর এক কল দিয়ে জিজ্ঞাসা করতে থাকেন বদলি মামলা পাওয়া গেছে কিনা? এ বদলি মামলা খুঁজতে গিয়ে একদিকে সময় নষ্ট, অন্যদিকে মক্কেলের কাছে জবাবদিহিতা করতে হয়।
এই আইনজীবীর অভিমত মামলার কার্যক্রমগুলোকে যদি ডিজিটাল প্রযুক্তির ছোয়ায় আনা যেত তাহলে অনেক সময় ও কষ্ট বেঁচে যেত।
নিম্ন আদালতের অরেক আইনজীবী অ্যাডভোকেট তাহমিনা আহমেদ সারাবাংলাকে জানান, আদালতে প্রযুক্তির ব্যবহার এখনও সম্পূর্ণরূপে চালু হয়নি। মামলার পরবর্তী তারিখ আনতেও অনেক কষ্ট হয়। তারিখ জানার পরও যদি কেউ ভুলে যান তাহলে সেটার ক্রসচেক করার জন্য আবার ওই সেকশনে যেতে হয়। অন্যদিকে মামলার তুলনায় কোর্টের জনবল কম রয়েছে। মামলা বদলি হলে সেটি খাতায় উঠতে অনেক সময় লাগে। এ বিষয়ে কোর্টের স্টাফরা আইনজীবীদের ঠিকমত সাহায্য করতেও চান না।
তিনি আরও বলেন, উচ্চ আদালতে সব সেক্টর প্রযুক্তির আওতায় আসায় সেখানকার আইন পেশা পরিচালনা করা অনেক সহজ হয়ে গেছে। অপরদিকে উচ্চ আ আশায় সেখানকার আইন পেশা পরিচালনা করা অনেক সহজ হয়ে গেছে। অপরদিকে উচ্চ আদালতের বিপরীত হচ্ছে ঢাকার নিম্ন আদালত। বদলি মামলা থেকে শুরু করে নকল পাওয়া পর্যন্ত আইনজীবীদের অনেক ভোগান্তির শিকার হতে হয়।
মহানগর দায়রা আদালতের বদলি সেকশনের একজন কর্মকর্তা নাম না প্রকাশ করতে ইচ্ছুক সারাবাংলাকে বলেন, ‘মামলার তুলনায় আদালতের স্টাফ অনেক কম। অনেক মামলা থাকার কারণে বদলি খাতায় ওঠাতে একটু সময় লাগছে। তাড়াছা এটি যদি ডিজিটাল করা হতো তাহলে আইনজীবী ও আমাদের কষ্ট অনেক কম হতো।’