Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘বীজ রোপণ বা ধান কাটার সময় আমাকেও ডাকতে বলেছি’


৬ নভেম্বর ২০১৯ ১৬:৩১

ফাইল ছবি

ঢাকা: কৃষিকাজ বা নিজের কাজ নিজে করাকে গর্বের বিষয় বলে মনে করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। লেখাপড়া শেখার পর কেউ আর মাঠে যেতে চায় না। তবে কৃষি সংক্রান্ত কোনো কাজে গ্রামের মানুষকে তাকে ডাকতে বলে রেখেছেন বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।

বুধবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ কৃষক লীগের ত্রি-বার্ষিক জাতীয় সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গতবার ধান কাটার সময় শ্রমিক সংকটের কারণে আমাদের ছাত্রলীগকেও বলেছিলাম, তোমরা এখন মাঠে চলে যাও, সবাই ধান কাটায় কৃষকদের হাত বাড়াও,তাদের সাথে হাত লাগাও। এটা লজ্জার কিছু না। নিজের কাজ নিজে করায় লজ্জার কিছু থাকে না। নিজের ফসল নিজে উৎপাদন করব, নিজের খাবার নিজে খাব, তাতে লজ্জার কি আছে। কোনো কাজে লজ্জার কিছু নেই। সব কাজ করার মত ক্ষমতা রাখি, প্রয়োজনে আমিও বলেছি, আমিও যাব। আমি আমার গ্রামে বলে রেখেছি, তোমরা যখন ধানের বীজ রোপণ করবা বা ধান কাটবা, আমাকে খবর দেবা, দরকার হলে আমিও যাব। কারণ আমার এতে কোনো লজ্জা নেই।’

কৃষিজমি বাঁচাতে হবে, ১৬ কোটি মানুষকে খাওয়াতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

‘আমাদের যারা লেখাপড়া শেখে, লেখাপড়া শিখলেই তারা আর কৃষিকাজে মাঠে যেতে চায় না। কৃষকের ছেলে, বাবা কৃষিকাজ করে লেখাপড়া শিখিয়েছে কিন্তু দুভার্গ্য আমাদের। তারা দুই পাতা (লেখাপড়া) পড়েই মনে করে, আমি কেন মাঠের কাজে যাব।’ যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সমস্ত পরিকল্পনা গ্রামকে ঘিরে। আমরা ব্যাপকভাবে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি করে দিচ্ছি। কৃষি পণ্য বাজারজাত করণের ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। এজন্য সমবায়কে আরও গুরুত্ব দিতে চাই। কৃষকদের জন্য কৃষিবীমা কিভাবে করে দেওয়া যায় তার চিন্তা করা হচ্ছে। যাতে তারা ফসল হারালে তার ক্ষতিপূরণ পায়, সেই পদক্ষেপ নিচ্ছি।

বিজ্ঞাপন

জাতির পিতা স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। তার স্বপ্ন ছিল দেশকে নিয়ে। দেশের মানুষকে নিয়ে। আজকে আওয়ামী লীগ একটানা তৃতীয় বার সরকারে আছে। এজন্য বাংলার জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতার অসমাপ্ত স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন বলেও জানান।

জাতির পিতার চীন ভ্রমণসহ বিভিন্ন বইয়ের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার যে লেখাগুলি তার মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের রাজনৈতিক জীবনের অনেক কিছু শিখতে পারি। কিভাবে দেশের জন্য ত্যাগ করা যায়? কিভাবে মানুষের কল্যাণে ত্যাগ করা যায়? শুধু কিছু পাওয়ার জন্য না, মানুষের দেবার জন্য যে রাজনীতি, রাজনীতি মানে মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন, নিজের ভাগ্য নয়। এই আদর্শের শিক্ষা নেওয়া যায় তার লেখাগুলি পড়লে।

এর আগে কৃষকলীগের সম্মেলনে ১১টা ১০ মিনিটের দিকে উপস্থিত হন প্রধানমন্ত্রী। এরপর জাতীয় সংগীত পরিবেশনের পর জাতীয় পতাকা ও কৃষক লীগের দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন। পরে শান্তির প্রতীক পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। সোয়া ১১টার দিকে মূল মঞ্চে উঠে হাত নেড়ে সবাইকে অভিবাদন জানিয়ে প্রধান অতিথির আসন গ্রহণ করেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই পবিত্র ধর্মীয় গ্রন্থ পাঠ করা হয়। এরপর প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি, সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে ব্যাজ পড়ান সংগঠনের নেত্রীরা। তারপর সংগঠনের সাময়িকী ‘কৃষকের কণ্ঠ’- এর মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

সংগঠনের সাংস্কৃতিক সম্পাদকের তত্ত্বাবধানে ‘যদি রাত পোহালে শোনা যতে বঙ্গবন্ধু মরে নাই…’ গানটি পরিবেশন করা হয়। এরপর দলীয় সঙ্গীত ‘কৃষক বাঁচাও, দেশ বাঁচাও, দেশ বাঁচাও হাসিনার নির্দেশে’ এই দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করেন শিল্পীরা।

বিজ্ঞাপন

সম্মেলন মঞ্চে প্রধানমন্ত্রীর দুই পাশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, সর্বভারতীয় কৃষাণ সভার সাধারণ সম্পাদক অতুল কুমার রঞ্জন উপস্থিত ছিলেন।

কৃষকলীগের সভাপতি মোতাহার হোসেন মোল্লা এবং সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক রেজার অনুমতিতে সভা পরিচালনা করেন সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সমীর দে। সম্মেলনে শোক প্রস্তাব পাঠ করেন দপ্তর সম্পাদক নাজমুল ইসলাম পানু। এরপর শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। অভ্যর্থনা উপ-কমিটির আহ্বায়ক ও সংগঠনের সহ-সভাপতি শরীফ আশরাফ স্বাগত বক্তব্য রাখেন। তিনি স্বাগত বক্তব্যে আগামী দিনে দুর্নীতিবাজদের কৃষক লীগে স্থান না দেওয়ার আহ্বান জানান এবং ত্রিবার্ষিক সম্মেলন নিয়মিত করার ব্যাপারে আহ্বান জানান।

এরপর সাংগঠনিক রিপোর্ট পেশ করেন সাধারণ সম্পাদক খন্দকার শামসুল হক রেজা। এছাড়াও বিশেষ অতিথির মধ্যে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং সর্বভারতীয় কৃষাণ সভার সাধারণ সম্পাদক অতুল কুমার রঞ্জন। প্রধান অতিথির আগে সভার সভাপতি বক্তব্য রাখেন।

কৃষকলীগ প্রধানমন্ত্রী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর